অনলাইন ডেস্ক পিটিভি
১৩৬ দিনই দেশটিতে থাকবে অন্ধকার!
কানাডার আর্কটিক অঞ্চলের দূরবর্তী এলাকা ‘অ্যালার্ট’ এখন থেকে আগামী প্রায় ১৩৬ দিন থাকবে সম্পূর্ণ অন্ধকারে। প্রতিবছরের মতো এবারও অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হয়েছে এই অঞ্চলের ‘পোলার নাইট’, যা চলবে ২০২৬ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
অ্যালার্ট বিশ্বের সর্ব উত্তরের স্থায়ীভাবে বসবাসযোগ্য স্থান। এটি উত্তর মেরু থেকে মাত্র ৮১৭ কিলোমিটার দূরে, নুনাভুট প্রদেশের এলসমিয়ার দ্বীপের উত্তর-পূর্ব কোণে অবস্থিত। এখানে একটি সামরিক ঘাঁটি এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে।
এই এলাকায় সূর্য ১৩ অক্টোবর শেষবারের মতো দেখা গেছে। পরবর্তী সূর্যোদয় হবে প্রায় সাড়ে চার মাস পর। এই সময়টিতে সূর্য অনুভূমিক রেখার ওপরে ওঠে না, ফলে পুরো অঞ্চল ডুবে থাকে গাঢ় অন্ধকারে।
কীভাবে প্রভাব ফেলে এই অন্ধকার?
অ্যালার্টের বাসিন্দারা এই দীর্ঘ অন্ধকারে কৃত্রিম আলো ব্যবহার করে দৈনন্দিন জীবন চালিয়ে যান। সূর্যের আলো না পাওয়ার ফলে শরীরের সার্কেডিয়ান রিদম বা দেহঘড়ির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যেও এর প্রভাব পড়ে। তাপমাত্রা নেমে যায় প্রায় -৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে, যা জীবনযাপনে চরম প্রতিকূলতা তৈরি করে।
কেন হয় এই পোলার নাইট?
পৃথিবীর অক্ষরেখার ঢাল এবং সূর্যের চারপাশে এর ঘূর্ণনের কৌণিক অবস্থানের কারণে, শীতকালে মেরুবৃত্তীয় অঞ্চল সূর্য থেকে দূরে থাকে। এর ফলে কিছু সময় সেখানে সূর্য অনুভূমিক রেখার নিচেই অবস্থান করে, এবং আলো সেখানে পৌঁছায় না।
পৃথিবীর অন্যান্য পোলার নাইট এলাকা
নরওয়ের স্ভালবার্ড ও জান মায়েন: প্রায় ১১১ দিন সূর্য ওঠে না (২৬ অক্টোবর – ১৫ ফেব্রুয়ারি)।
ত্রোমসো, নরওয়ে: ৪৯ দিন অন্ধকার (২৭ নভেম্বর – জানুয়ারি মধ্যভাগ)।
উটকিয়াভিক, আলাস্কা: ৬৫ দিন পোলার নাইট।
মুরমানস্ক, রাশিয়া: প্রায় ৪০ দিন অন্ধকার।
ইলুলিসাট, গ্রিনল্যান্ড: অক্টোবরের শেষ থেকে শুরু হয় অন্ধকারকাল।
দক্ষিণ মেরু স্টেশন, অ্যান্টার্কটিকা: মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ছয় মাস সূর্য ওঠে না।
অবশ্য, বছরের অন্য সময় অ্যালার্ট অঞ্চলে মিডনাইট সান দেখা যায়, অর্থাৎ সূর্য মাঝরাতেও অস্ত যায় না—তখন দিন-রাত মিলিয়ে দীর্ঘ সময় সূর্যের আলো বিরাজ করে।
প্রথম বুলেটিন পড়ুন সব খবর সবার আগে জানুন।