ঢাকা | বঙ্গাব্দ | আজকের ভিজিটর: 20,8,345,00

যে ব্যবসায় কখনো লোকসান হয় না প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫, ০৪:৩৮

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Oct 15, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:
ad728

 অনলাইন ডেস্ক
যে ব্যবসায় কখনো লোকসান হয় না
সংগৃহীত ছবি
মানুষের অভাব পূরণের প্রয়োজন থেকে ব্যবসার উত্পত্তি। সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বৈধ জীবিকা নির্বাহের এক অনন্য উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ব্যবসা শুধুমাত্র একটি পেশা নয়- গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যবসা হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৭৫)

পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে শুরু করে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত ব্যবসায়ের অসংখ্য ধরণ বা শ্রেণি বিদ্যমান। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুই ধরনের ব্যবসা থাকতে পারে। এক. বস্তুগত ব্যবসা, যা দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণে একে অপরের সাথে করে থাকে। দুই. আধ্যাত্মিক ব্যবসা, যা আত্মার সন্তুষ্টির জন্য মহান আল্লাহর সঙ্গে হয়।

মহান আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা করা নিঃসন্দেহে ইবাদতের একটি অংশ। তাছাড়াও মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে লাভজনক খাতে মূলধন, শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করা হয়। ফলস্বরূপ লাভ এবং ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে প্রায় সমান। কিন্তু পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এমন এক ব্যবসায়ের সুসংবাদ দিয়েছেন যেখানে ক্ষতির কোনো সম্ভবনা নেই—আছে শুধু লাভ আর লাভ। সুরা সাফফাতের ১০ নম্বার আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদাররা! আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি হতে রক্ষা করবে।’ এর পরের আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করে এটাই তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা জানতে।’

অর্থ্যাৎ কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে তিনটি বিষয়কে উল্লেখ করেছেন। এক. আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রতি ঈমান আনা। আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং তদনুযায়ী আমল এই ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মূলধন।

দুই. দ্বিনি কাজে ধন-সম্পদ ব্যয় করা। আপাতদৃষ্টিতে দ্বিনে জন্য সম্পদ ব্যয়ের ফলে মনে হয় তা কমেছে। কিন্তু আল্লাহর সঙ্গে আর্থিক এই ব্যবসা ক্ষতিবিহীন এবং অন্তহীন। যা দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির, আয়াত : ২৯)

তিন. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদ নিয়ে বর্তমান সমাজে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। কিন্তু  জিহাদ বলতে কেবল যুদ্ধকেই বোঝানো হয় না। বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টা। যেমন—নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান এবং দ্বিনের জন্য নিজের জীবন কিংবা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উত্সর্গ করা অথবা দ্বিনকে রক্ষা করার অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা জিহাদের অংশ। 
যেকোনো ব্যবসায় ক্রেতা অপরিহার্য। তবে বান্দা ও রবে এই ব্যবসায় ক্রেতা যিনি তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনি কি কিনে নিচ্ছেন এবং বিনিময়ে আমরা কি লাভ করছি তা সুরা তাওবার ১১১ নাম্বার আয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ক্রয়  করে নিয়েছেন মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জান ও মাল কে জান্নাতের বিনিময়ে।’

মহান রবের সাথে ব্যবসার লাভ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সুরা সাফফাতের ১২ নম্বর আয়াতে তিনি আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাপ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদের প্রবেশ করাবেন জান্নাতে যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহাসাফল্য।’

ব্যবসায়ের চিরাচরিত ঝুঁকি থাকলেও খোদার সঙ্গে লেনদেনে কোনো ধরনের ঝুঁকি নেই। নিশ্চিত লাভে আশায় মুমিনরা আল্লাহ তাআলার সাথে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে নিভৃতে ইবাদত করে। মুমিনদের জন্য এর থেকে বড় ব্যবসা একটিও নেই।
পিটিভি চলবে ইসলামের আলোকে ইনশাল্লাহ।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Prothom Bulletin

কমেন্ট বক্স