today visitors: 5073432

কথা সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৭ তম জন্মবার্ষিকী

রফিকুল ইসলাম, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :

কথা সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৭ তম জন্মবার্ষিকী বুধবার (১৩ নভেম্বর)। প্রতিবছরের ন্যায় তাঁর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার লাহিনীপাড়ায় সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন এর বাস্তভিটায় দুই দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন বাস্তভিটার জাদুঘরের দেখাশোনা করেন মীর মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী তিনি জানান, সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসকের আয়োজনে মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৭ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আগামীকাল ১৩ ও ১৪ বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুই দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করা হয়েছে।

সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন কুমারখালীর লাহিনীপাড়া গ্রামে ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মীর মোয়াজ্জেম হোসেন এলাকার সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি ছিলেন। তার মায়ের নাম দৌলতুন্নেসা। মীর মশাররফ জগনমোহন নন্দীর পাঠশালায় পড়াশুনা করেন। এরপর তিনি কুমারখালীর এমএন হাই স্কুল, কুষ্টিয়া হাই স্কুল ও রাজবাড়ী জেলার পদমদী হাই স্কুলে কিছুদিন পড়াশুনা করেন।

১৮৬০ সালে মীর মশাররফের মা দৌলতুন্নেসা মারা যান। সেই সময় মীরের বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর। এ বয়সেই তিনি সাহিত্য চর্চা শুরু করেন। সাহিত্যের সব ক্ষেত্রেই তিনি উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখে গেছেন। গল্প, উপন্যাস, নাটক, কবিতা, আত্মজীবনী, প্রবন্ধ ও ধর্ম বিষয়ক প্রায় ৩৫টি বই রচনা করে গেছেন। এরমধ্যে রত্নাবতী, গৌরী সেতু, বসন্তকুমারী, নাটক জমিদার দর্পণ, সঙ্গীত লহরী, উদাসীন পথিকের মনের কথা, মদীনার গৌরব, বিষাদসিন্ধু বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

মীর মশাররফ হোসেনের ‘আমার জীবনী গ্রন্থ’ থেকে জানা যায়, কুমারখালীর কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার ছিলেন তার সাহিত্যগুরু। হরিনাথ মজুমদারের সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ ও ইশ্বরচন্দ্র গুপ্তের ‘সংবাদ প্রভাকর’ নামক পত্রিকা দুটিতে মশাররফ হোসেনের সাহিত্যচর্চা শুরু হয়। গ্রামবার্তা পত্রিকায় মীর মশাররফ সাহিত্য, দর্শন বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধ প্রকাশের পাশাপাশি অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে জমিদার ও ব্রিটিশ নীলকরদের অত্যাচারের কাহিনী প্রকাশ করেন।

নীল বিদ্রোহের উপরে ‘জমিদার দর্পণ’ সহ প্রায় ২৫টি গদ্য গ্রন্থ রচনা করে মীর মশাররফ হোসেন বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে প্রথম আধুনিক মুসলিম গদ্য শিল্পীর মর্যাদা লাভ করেন। তার সম্পাদিত ‘হিতকরী’ (১৮৯০) পত্রিকায় বাউল শিরোমনি লালন ফকিরের উপরে প্রথম লালন জীবন দর্শন মহাত্মা লালন ফকির প্রকাশিত হয়।

তার পিতা মীর মোয়াজ্জেম হোসেনসহ পরিবারের অন্য সদস্যদেরও পদমদীর নবাব বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। ১৯১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর পদমদীতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *