সুরুজ্জামান রাসেল
গাজীপুর প্রতিনিধি:
বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুর মহানগরীর মোগরখাল এলাকায় অবস্থিত টি এন জেট অ্যাপারেলস এর পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে টি এন জেট অ্যাপারেলস লিমিটেড নামের কারখানাটির সামনে এই বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ সময় হামলা–ভাঙ্গচুরের আশঙ্কায় পাশের ‘ইকো কুটিউর লিমিটেড’ কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়।
পুলিশ ও শ্রমিকদের সূত্রে জানা গেছে, টি এন জেট অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের গত আগস্ট মাসের বেতন প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে মালিকপক্ষ। এ নিয়ে কিছুদিন দিন ধরে তাঁদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। বারবার বেতনের দাবি জানালেও পরিশোধ করছিলেন না। এর মধ্যে আজ সকালে সেখানে কাজে যোগ দিতে গিয়ে কারখানা বন্ধ পান শ্রমিকেরা। পরে বিক্ষুব্ধ হয়ে তাঁরা কারখানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। আরও শ্রমিক জড়ো করতে একপর্যায়ে পাশের ইকো কুটিউর লিমিটেড কারখানায় ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, নিয়ম অনুযায়ী গত ৭ আগস্ট বেতন পরিশোধের তারিখ ছিল। মালিকপক্ষের সাথে সমঝোতা হওয়ার পর আজ বেতন পরিশোধের আশ্বাস দেয়। কিন্তু আজ সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে গিয়ে কারখানাটি বন্ধ পায়। তাই তাঁরা বিক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন।
শ্রমিকরা বলেন, ‘প্রতি মাসেই স্যাররা নির্ধারিত সময় আমাদের বেতন দিতে পারেন না। প্রতিমাসেই কোনো না কোনো অজুহাতে বেতন দিতে দেরি করে। আইজকে মাসের ১৪ তারিখ। এখনো বেতন পাই নাই। ঘর ভাড়া-সংসার খরচ সব আটকে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নামছি।’
গাজীপুর শিল্প পুলিশের এসপি মোহাম্মদ সারওয়ার আলম জানান, টিএনজেড এপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকদের বেতন নিয়ে সমস্যার সমাধান হয়নি আলোচনা চলছে। মালিক পক্ষ ঝামেলা করছে বেতন দিতে পারে না। এই ফ্যাক্টরীর কারণে পাশের ফ্যাক্টরীগুলোর সমস্যা হচ্ছে।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর গাজীপুর জেলা কার্যালয়ের তথ্যমতে, পুরো জেলায় সব মিলিয়ে নিবন্ধিত কারখানা রয়েছে ২ হাজার ৬৩৩টি। এর বাইরে অনিবন্ধিত কারখানা আছে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০টি। এসব কারখানায় শ্রমিক কাজ করেন প্রায় ২২ লাখ। গত সপ্তাহে গাজীপুরের বেশ কিছু কারখানায় বেতন-ভাতার দাবিতে বিক্ষোভ চলে। এতে থমথমে অবস্থা বিরাজ করে শিল্প-নগরীতে। চলে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ। এতে বেশ কিছু কারখানা সাধারণ ছুটি ও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এদিকে কারখানার নিরাপত্তা রক্ষায় নিজস্ব কর্মী ছাড়াও শিল্প পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি হলে সেনা সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করতে প্রস্তুত রয়েছেন।