today visitors: 5073432

আজ অসহায় বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানো প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব

 

মোঃ রাওফুল বরাত বাঁধন ঢালী।

স্মরণকালের এবারের মরণ ফাঁদের বন্যার ভয়াবহ অবস্থা। বন্যা একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে যা চালাচ্ছে তা নয় এটি হিংসার মরণফাঁদ ভারত হতে হয়তো তাহা পিরিত ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর, খাগড়াছড়ি বৃহত্তর সিলেটের হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজারসহ বহু এলাকা বন্যা কবলিত। কোটি কোটি আদম জাতী নারীপুরুষ ও শিশু কিশোর এ মুহূর্তে পানিবন্ধি।
আকাশে বাতাসে শুনা যাচ্ছে বাঁচার জন্য হাহাকার। প্রাণে বেঁচে থাকার আকুতি। তারা বলছেন, আমাদেরকে আগে উদ্ধার করুন। খাদ্যের প্রয়োজন নেই। আগে আমাদেরকে আল্লাহর হুকুমে বাঁচান। বাসা বাড়ি সব ডুবে যাচ্ছে একাকার। ঘরের টিনের চালেও আশ্রয় নিয়েছেন আমাদের ভাই বোন। এমন ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির শিকার এ জাতি বিগত ত্রিশ চল্লিশ বছরেও হয়নি বলে দাবি আজ সুশীল সমাজের এমন পরিস্থিতি ৮৮ আশির বন্যাতে হয়তো দেখেনি এ জাতি ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা সচিত্র অবস্থা দেখতে পাচ্ছি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের এসব আদম জাতি ভাই বোনদের রক্ষা করুন আমিন। উদ্ধার কাজে আমাদেরকে স্বতঃস্ফূর্ত অংশ গ্রহনের তাওফিক দান করুন। যারা অংশগ্রহণ করেছেন তাদেরকেও উত্তম প্রতিদান দান করুন। গতকালও আমাদের এই ভাইয়েরা জানতেন না যে, আজকে তাদের কি অবস্থা হবে? কি পরিনতির মুখোমুখি হতে হবে তাদেরকে? জানতেন না যে লড়তে হবে জীবন বাঁচানোর মতো ফরজ যুদ্ধে। এই মুহুর্তে আমাদের ঈমানি কর্তব্য হচ্ছে পানিবন্ধি বন্যাগ্রস্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। এর চেয়ে ঈমানের পরীক্ষা আর কি হতে পারে। এর চেয়ে আর মানব কল্যান কি হতে পারে? এজন্য জাতি ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে মোরা সকলে আদম জাতি এ ঈমান কলবে এস্থাপণ করে মানব কল্যানে আমাদেরকে এগিয়ে আসতেই হবে উচিত এবং তা এখনই। সব রকমের ভেদাভেদ ভুলে মানবতার কল্যানে কাজ করার কোন বিকল্প নেই আর ভাই। তাই আসুন, আমরা বন্যার্ত অসহায় মানুষের পাশে দাড়াই।
কোরআন হাদিসের আলোতেই হচ্ছে সঠিক কল্যান,গোটা আদম জাতির জন্য কল্যান কামনা করা। আজকে বন্যায় প্লাবিত আমার ভাই ও বোন। তাদের উদ্ধার কাজে সাহায্য সহযোগিতা করা ঈমানদার অঙ্গ। তাদের প্রতি প্রত্যেকের দয়ার হাত প্রসারিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্য ও কর্তব্য
হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্নিত, রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
আল্লাহ তায়ালা সে ব্যক্তির উপর অনুগ্রহ করেন না। যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি দয়া করেন না। (সহি বুখারী)
এই হাদিসের শিক্ষা ও সারমর্ম হলো,মানুষ হয়ে মানুষের প্রতি দয়া অনুগ্রহ করা, পক্ষান্তরে আল্লাহ তায়ালার দয়া অনুগ্রহ লাভের অন্যতম একটি মাধ্যম।কেনওনা আল্লাহ সর্বদাই বিরাজ মান। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, বন্যা কবলিত অসহায় মানুষেরা আমাদের ভাই বোন। আদমজাতি
আমাদেরই দেহের একটা অংশ।
বিখ্যাত সাহাবী হযরত নুমান ইবনে বাশির (রা.) থেকে বর্নিত, রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাঃ বলেছেন, সকল মুমিন এক ব্যক্তির মতো যদি তার চক্ষু অসুস্থ হয় তখন তার সর্বাঙ্গ অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর যদি তার মাথায় ব্যথা হয় তখন তার সমস্ত শরীরই ব্যথিত হয়। (সহি মুসলিম)
কাজেই আমাদের এসব বন্যার্তদের সেবায় এগিয়ে আসা পড়ত্যেক মুসলমানের ঈমানি দায়িত্বও বটে।যা ইসলামের চিরন্তন একটি শিক্ষা ও হুকুম, আমাদের উচিত তাদের পাশে সাধ্যমত সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্নিত, রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এক মুমিন মুসলমান অপর মুমিন মুসলমানের ভাই। সে তার উপর জুলুম করবে না এবং তাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিবে না। যে ব্যক্তি তার আদম জাতি এক ভাইয়ের প্রয়োজনে অপর ভাই সাহায্য করবে, আল্লাহ তার প্রয়োজনে সাহায্য করবেন। যে ব্যক্তি বা জাতি তাঁর জাতি ভাইের দুঃখ-কষ্ট দূর করবে। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তার বিপদ দূর করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখবে। আল্লাহ তায়ালা তার দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখবেন।’ (সহি বুখারি ও মুসলিম) আজ যদি আমরা আমাদের এই জাতি ভাই দের প্রয়োজনে পাশে দাড়াই। অর্থ কড়ি সময় দিয়ে। কিংবা কোনো সুচিন্তিত বুদ্ধি পরামর্শ দেওয়ার মাধ্যমেও। তবে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে কিয়ামতের দিন এর সঠিক নিয়ামত ও প্রতিদান দান করবেন। অবশ্যই বিশ্বাস রাখুন এই ভালো কাজের বিনিময়ে জান্নাতের নেয়ামত লাভ করব। আল্লাহ তায়ালা এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আমাদেরকে তাদের পাশে দাঁড়াবার সৎসাহস ও তাওফিক দান করুন। যাতে আমাদের দ্বারা তাদের মঙ্গল হয়। ০১৯৯৬১৩৫৯০৯,