মোঃ সাইদুল ইসলাম তানভীর স্টাফ রিপোর্টার ।!
বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার নয়াখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক সৈয়দ হাসান ইমাম
এর ওপর সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার (১৪ জুলাই ) সকাল ১০টার দিকে পানবাড়িয়া রাস্তার মাথায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে ঘটনার দিন রাতেই ভুক্তভোগী শিক্ষক নিজেই বাদী হয়ে মেহেন্দিগঞ্জ থানায় ৮জনকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। আহত শিক্ষক মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভার খড়কি ওয়ার্ডের মৃত মীর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন এর ছেলে।
কথিত সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত অবস্থায় তাকে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ওই সিনিয়র শিক্ষকের সঙ্গে একই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের মিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন দ্বন্দ চলে আসছে।
ওই শত্রুতার জের ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এর ইন্ধনে বিবাদীরা ভূক্তভোগী শিক্ষক হাসান ইমামকে বিভিন্নভাবে হুমকি এবং মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছিল। এক পর্যায়ে রোববার সকালে শিক্ষক হাসান ইমাম স্কুলে যাওয়ার সময় পানবাড়িয়া গ্রামের রাস্তার মাথায় তার পথরোধ করে রাস্তা থেকে তুলে বাগানের মধ্যে নিয়ে একটি গাছের সাথে ঠেকিয়ে ব্যপক মারধর করে। এছাড়াও ভুক্তভোগী শিক্ষককে মারধর করে তার সাথে থাকা মানিবেগ এবং টাকা ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। আহত শিক্ষক হাসান ইমাম বলেন, হামলাকারীরা তার বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এর ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী। চাঁদার দাবীতে তার উপর হামলা করা হয়। হামলায় অভিযুক্তরা হলেন আল আমিন, নয়ন তালুকদার, সোহান, সোয়াবুল, জিসান খান, অন্তর সরদার, সিয়াম আকন, ফয়সাল সরদার। এরা দলবদ্ধভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিতভাবে শিক্ষক হাসান ইমাম এর ওপর হামলা করে। অভিযোগে জানা যায়, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের মিয়ার বিরুদ্ধে রয়েছে, অবৈধভাবে নিয়োগ লাভ, নিয়োগ কেলেঙ্কারি, বিদ্যালয়ের ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ, নারী কেলেঙ্কারিসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ। অভিযুক্ত ইন্ধনদাতা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষককের উপর হামলার কথা শুনেছি তবে
তার বিরুদ্ধে এদিন বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনীর ৪ জন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছে তাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যাঙ্গে হাত দিয়েছে ভুক্তভোগী শিক্ষক হাসান ইমাম। তাই ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের সাথে বাকবিতন্ডা হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগকারী ২জন শিক্ষার্থী এবং তাদের পরিবার বলেন, আমরা অভিযোগ করিনি, হামলাকারীরা দরখাস্ত লিখে এনে আমাদেরকে বলে স্কুলে তোমাদের স্বাক্ষর প্রয়োজন আমরা সরল মনে স্বাক্ষর করি, কিন্তু স্যারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানলে স্বাক্ষর করতাম না, স্যার খুবই ভালো মানুষ। হামলার বিষয়ে প্রধান অভিযুক্ত আল আমিন এর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও বক্তব্য পাওয়া যায় নি। অপর হামলাকারী সোয়াবুল এর পিতা আবুল খায়ের বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষক খুবই ভালো মানুষ, তাকে হামলা করা উচিৎ হয়নি, আমি দুঃখীত, আমি আমার ছেলেসহ সকল হামলাকারীর বিচার চাই। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার একাধিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলেন, নয়াখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক হাসান ইমাম এর ওপর পৈশাচিক হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সেই সাথে হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, শিক্ষক এর উপর হামলার ঘটনাটি শুনেছি, আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলে দিয়েছি। মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি এবং ঘটনার তদন্ত চলছে, ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছে, টের পেয়ে অভিযুক্তরা আত্নগোপনে রয়েছে।