কঠিন রোগে ভর করল, বাবার গায়ে এসে
ধান গুলো সব বানের জলে ,যাচ্ছে ভেসে ভেসে।
মা তখন ধারেনি কো ,লোক-লজ্জার ধার
নিজের কাঁধে নিয়ে নিল, বাবার কাজের ভার।
ঘোমটা খুলে আঁচলখানি, কোমর পরে বেঁধে
কাস্তে হাতে ধান কাটে আর ,বোঝা বহে কাঁধে।
হাসি মুখে স্বামীর তরে ,কেটে যাচ্ছে তাই
লোকের মুখে বাহবা সাবাস, খ্যাতির অন্ত নাই।
বাবা সেদিন ছোট মাছ ,আনল বাজার থেকে
তাড়াতাড়ি কাটতে হবে ,বলল মাকে ডেকে।
মায়ের গায়ে সেদিন ছিল, কাঠফাটানো জ্বর
কাটতে বসে দেখি মায়ে, কাঁপতেছে থর থর।
বাবা তখন মাছ কাটতে ,বসল মায়ের পাশে
পাড়াপড়শি দেখে সবাই ,খিলখিলিয়ে হাসে।
স্বামী হয়ে স্ত্রীর কাজে ,হাত দিয়েছে তাই
লোকের মুখে কানাঘোষা, নিন্দার অন্ত নাই।
পুরুষরা আজ বউয়ের গোলাম, এল কলির কাল
নিন্দা করে কয় মুরুব্বী ,শুকুর আলী লাল।
কেউ বাবারে বউ পাগল কয় ,কেউ বা বউয়ের দাস
মিটিমিটি হেসে করে ,কেউ বা উপহাস।
কলঙ্কিত উল্টো নীতি ,চলছে সমাজ জুড়ে
স্ত্রীর প্রেমে স্বামীর মুখে ,চুনকালি যায় পরে।
স্ত্রীর প্রতি সদয় হলে, পুরুষরা পায় লাজ
কেন ?কেন? ওহে সমাজ, জবাব দেবে আজ।
উল্টো নিয়ম ভাঙতে বউয়ের ,পা দেব আজ টিপে
চুপ হে সমাজ !কথা বললে ,গলা ধরব চেপে।
শোনোনি কি মহামানব ,বিশ্ব নবীর কথা!
কেমন ছিল স্ত্রীদের প্রতি ,উনার উদারতা।
হযরত উনার প্রাণের স্ত্রীদের, উটে তুলে দিতে
ভালোবেসে হাসিমুখে ,উরু দিতেন পেতে।
নবীর গায়ে চরণ রেখে, স্ত্রী উঠত উটে,
তাতে উনার শান শওকত, কমেনি তো মোটে।।
এই সমাজের স্বামিরা সব, তুলসী পাতায় ধুঁয়া
ভূলে বউয়ের পা লাগলেও ,স্বামিত্ব যায় খোয়া।
স্বামী-স্ত্রী তো পরম বন্ধু ,দুই দেহে এক প্রাণ
হালাল মধুর প্রেমের মাঝে ,কিসের ব্যবধান।
আজও অনেক স্বামিরা চায়,সাহায্য করতে স্ত্রীরে
ইচ্ছে থাকলেও সাহস পায়না ,সমাজ নিন্দার ডরে।
বউয়ের অসুখ !সবার সামনেই ,রান্না করব আজ
সঠিক নিয়ম প্রতিষ্ঠা হোক, অনিয়ম পাক লাজ।