১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ এএম | অনলাইন সংস্করণ
পরিসংখ্যান ব্যুারো
Advertisement
দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের মূল্য নির্ধারণ করা হবে। এর পাশাপাশি একজন মানুষ সারা জীবনে কত অক্সিজেন গ্রহণ করে, কত পানি ব্যবহার করে এবং এগুলোর আর্থিক মূল্য কত, সেটিও নিরূপণ করা হবে।
এজন্য ন্যাশনাল রিসোর্স অ্যাকাউন্টস (এনআরএ) তৈরি করছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। জাতিসংঘের এনভায়রনমেন্টাল ইকোনমিক অ্যাকাউন্টিং সিস্টেমের আওতায় এটি করা হবে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী আয়োজিত সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবন অডিটোরিয়ামে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার এবং এফএও-এর রিপ্রেজেনটেটিভ জিয়াকুন সাই। বক্তব্য দেন বিবিএস-এর উপমহাপরিচালক পরিমল চন্দ্র বসু।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এদেশের মাটি, পানি, বাতাস, বন, প্রাণিসম্পদসহ সব ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদের হিসাব করা হবে। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পরিবেশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় এ হিসাব (অ্যাকাউন্টস) কার্যকর ভ‚মিকা রাখতে পারবে। যে কোনো নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রেও এটি ব্যাপক কাজে আসবে।
সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করবে। এছাড়া প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভ‚মি, বন ও বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করবে। এর ভিত্তিতে এবং জাতিসংঘের সহায়তায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখানে ১৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ একসঙ্গে কাজ করবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, একটি ধারণা হলো, পরিবেশ ও উন্নয়ন পরস্পরবিরোধী। কিন্তু এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এজন্যই টেকসই উন্নয়নের নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। যাতে দুটোই করা সম্ভব। আগে গায়ের জোরে অনেকেই বন ও পরিবেশ ধ্বংস করত। কিন্তু এখন প্রভাব খাটিয়ে পরিবেশ ধ্বংস করা চলবে না। সবার আগে দেখতে হবে জাতীয় স্বার্থ। এজন্যই অ্যাকাউন্টস দরকার। এখন বিশ্বব্যাপী পরিবেশের সঙ্গে যুদ্ধ চলছে। কিন্তু এই যুদ্ধে প্রকৃতি কখনোই হারবে না। তাই পরিবেশকে বাদ দিয়ে উন্নয়ন হবে না।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সরকার। এর আওতায় আরও ১১টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে। তখন প্রাকৃতিক সম্পদের লাইভ তথ্য পাওয়া আরও সহজ হবে। এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) বাস্তবায়ন এখনো অনেক দূরে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী যেভাবে এসডিজি বাস্তবায়ন হচ্ছে, এতে ২০৩০ সালে নয়, ২০৬৮ সালেও এসডিজি পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মো. শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, বেঁচে থাকাটাই এখন মানুষের অন্যতম চিন্তা। এই চিন্তা মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আর এই বেঁচে থাকার জন্য প্রকৃতির দ্বারস্থ হতে হয়। আমাদের তথ্যভান্ডার যত সমৃদ্ধ হবে, ততই আমরা টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা নিতে পারব। এজন্য সঠিক জরিপ প্রয়োজন।
ড. শাহনাজ আরেফিন আলেন, প্রকৃতিকে বাদ দিয়ে কিছু করার সুযোগ নেই। প্রকৃতির মধ্য থেকেই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে হবে। প্রাকৃতিক সম্পদের যে অ্যাকাউন্টস করা হচ্ছে, সেটির জন্য সবার সহায়তা প্রয়োজন। এসডিজির অনেক নির্দেশকের তথ্য আসবে এই অ্যাকাউন্টস থেকে।