।
এইচ এম গোলাম কিবরিয়া রাকিব (জি কে রাকিব) কুমিল্লা প্রতিনিধি।
দুটি হাত নেই, তবুও জীবন যুদ্ধে থেমে নেই প্রতিবন্ধী আশাদুল ইসলাম
জন্মগত ভাবেই দুটি হাত নেই প্রতিবন্ধী আশাদুল ইসলামের। তবুও মনের প্রবল ইচ্ছে শক্তিতে ছোট বেলা থেকে পা দিয়ে লিখে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শিদলাই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের নোয়াপাড়া ছমুদ্দিন বাড়ীর মৃত খাজা আহাম্মেদের নাতি আশাদুল ইসলাম (১০)। নানী কুহিনুর আক্তার ৬ বছর যাবৎ লালন পালন ও লেখাপড়া করাচ্ছেন। তার বাবা একজন রাজমিস্ত্রী ছিলেন। তার বাবার নাম মৃত সুমন মিয়া ও মাতার নাম মিনুয়ারা বেগম। অভাবের সংসার ৩ ছেলে ১ মেয়ে নিয়ে আশাদুলের বাবা গত বছর মারা যায়। সে শিদলাই স্থানীয় একটি ব্র্যাক স্কুলে চতুর্থ শ্রেণীতে লেখাপড়া করছে। এছাড়াও তার নানী মৃত খাজা আহাম্মেদের স্ত্রী কুহিনুর বেগম বলেন, আমার এই টানাপোড়নের সংসার তা উপর আমার নাতির লেখাপড়া করাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার দুটি হাত না থাকায় গোসল, খাওয়া-দাওয়াসহ সকল কিছু আমাকে করতে হচ্ছে। তারপরও আমার নাতি আশাদুলের ইচ্ছায় আমি তাকে লেখাপড়া করাচ্ছি। তারও ইচ্ছা লেখাপড়া করে একজন সরকারি কর্মকর্তা হবে। এব্যাপারে আশাদুলের নানীর বাড়ির স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হক বলেন, আশাদুল শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও মানুসিকভাবে অনেক দৃঢ়। প্রতিদিন স্কুলে আসা যাওয়া করে। সে একজন মেধাবী ছাত্র। তার ইচ্ছা কষ্ট করে হলেও লেখাপড়া চালিয়ে গিয়ে দেশের জন্য কিছু করা। তার স্কুলের শিক্ষক বলেন আশাদুল প্রতিদিন নিয়মমাফিক স্কুলে আসা-যাওয়া করে। সে লেখাপড়াও অনেক ভালো। আমরা মাঝে মাঝে খাতাপত্র দিয়ে সহায়তা করার চেষ্টা করি। তবে সমাজের বিত্তবান মানুষ আশাদুলের জন্য এগিয়ে এলে সে অনেক দুর এগিয়ে যেতে পারবে। তার নানী আরো বলেন, আমার মেয়ে অল্প বয়সে বিধবা হয়। তার থেকে আশাদুল আমার বাড়িতে থাকে। ৩ ছেলেমেয়ে নিয়ে আমার মেয়ের সংসার চলতে খুবই কষ্ট হয়। তার কষ্ট কিছুটা কমানোর জন্য প্রতিবন্ধী আশাদুল আমার বাড়িতে থাকে। কিন্তু আমারও স্বামী নেই। আমিও চলতে খুবই কষ্ট হয়। আবার আশাদুলের লেখাপড়া খরচ চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। সরকারি কোন সুযোগ-সুবিধা পাই না। যদি সরকারি কোন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় তাহলে আশাদুলের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে কোন বাধা থাকবে না।
এব্যাপারে শিদলাই ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম আলাউল আকবর বলেন, আশাদুল ইসলাম একজন প্রতিবন্ধী হলেও পা দিয়ে লেখাপড়া করছে। তার অধম্যশক্তি অনেক দৃঢ়। আমার পরিষদের পক্ষ থেকে যতটুকু সহযোগিতা করার সেটা আমি চেষ্টা করবো। তবে আমি শুনেছি আশাদুল একজন ভালো ছাত্র। বিত্তবানরা আসাদুলের পাশে দাঁড়ালে এক দিন সে লেখাপড়া করে মানুষের মত মানুষ হবে।