today visitors: 5073432

দুই সন্তানেরই থ্যালাসেমিয়া, দিশেহারা কৃষক বাবা মেয়ের বয়স ১৪, ছেলের ১১

 

১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪

 

জেলা প্রতিনিধি নওগাঁ : মো সাকিল ইসলাম সামিম

 

চৈতী বড়ুয়ার জন্ম হয় ২০০৭ সালে। তার তিন বছরের ছোট সুশান্ত বড়ুয়া। মিষ্টি ছেলেমেয়ে দুটি ছিল পরিবারে সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। রনি বালা বড়ুয়ার ব্যস্ত সময় কাটছিল দুই সন্তানের লালন–পালনে।

 

কিন্তু তিনি লক্ষ্য করলেন, ছেলেমেয়ে দুটি ক্রমশ ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে, দুর্বল হয়ে পড়ছে, নিয়মিত খাবারেও অনীহা। জন্মের বছরখানেক পেরোতেই রক্তস্বল্পতার চিকিৎসা শুরু হয়। দু’জনেরই ধরা পড়ে থ্যালাসেমিয়া রোগ। মা-বাবার ঘরে যেন অন্ধকার নেমে আসে। এ রোগে আক্রান্তদের সুস্থ থাকার জন্য সারা জীবন নিয়মিত রক্ত দিতে হয়। ভর্তি করানো হয় চট্টগ্রাম নগরের মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে। ছেলেমেয়েকে নিয়ে তারা দিনের পর দিন হাসপাতালে গিয়েছেন, এক ব্যাগ রক্ত পাওয়ার জন্য অনেক খাটুনি খাটতে হয়েছে। চিকিৎসার খরচও অনেক। তাদের বাবা জমি চাষ করে যা আয় করেন, তার মোটা অংশই চলে যায় ছেলেমেয়ের চিকিৎসায়। তাই বলে কি চিকিৎসা থামান যায়? নিজে একবেলা না খেলেও সন্তানদের চিকিৎসায় কোনো ঘাটতি দেবেন না তিনি।

 

 

কিন্তু থ্যালাসেমিয়া রোগ অন্য যেকোনো রোগের মতো নয় যে, একবার চিকিৎসা করালেই সেরে উঠবে। বছরের পর বছর এ রোগের চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া লাগে।

 

 

চৈতী বড়ুয়া ও সুশান্ত বড়ুয়ার বাড়ি চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ইছাখালী ইউনিয়নের চরছর গ্রামে। শুরু থেকেই তাদের চিকিৎসা হয় চট্টগ্রামের মা ও শিশু হাসপাতালে। কিন্তু পরিবারে যেমন আর্থিক অনটন, সঙ্গে যাতায়াতের অসুবিধা। ফলে মফস্বল থেকে চিকিৎসার জন্য প্রতিমাসে চট্টগ্রাম শহরে আসতে পারে না পরিবারটি। নিয়মিত রক্ত না দেওয়ায় দুই ছেলেমেয়ের শরীরে হিমোগ্লোবিন কমে ৩ গ্রামে নেমে আসে। মারাত্মক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসে ওরা।

 

 

চৈতী (১৪) ও সুশান্তের (১১) মা রনি বালা বড়ুয়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘একটা সন্তান অসুস্থ হলে হয়তো আমরা খরচটা কোনোরকম টানতে পারতাম। কিন্তু দুজনের চিকিৎসার খরচ বহন করা খুব কষ্টের। দুই সন্তানেরই জন্মের দু’বছর পর এই রোগ ধরা পড়ে।’

 

ভেজা চোখে তাদের বাবা অনল বড়ুয়া বলেন, বর্তমানে তারা দু’জন চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের ডা. ইন্দিরা চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছে। তাদের প্রতিমাসে রক্তের প্রয়োজন হয়। রক্তের জন্য অসহায়ের মতো রাস্তার মানুষকে ধরে ধরে আকুতি করি। প্রতিমাসে দুই সন্তানের চিকিৎসায় খরচ হচ্ছে ৫০ হাজার টাকার বেশি। কৃষি কাজ করে দিনে এনে দিনে খাই। তাদের চিকিৎসার জন্য সব মাসে খরচ জোগাড় করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’

 

এ অবস্থায় দুই সন্তানের চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে নিরুপায় হয়ে হৃদয়বানদের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন অমল বড়ুয়া ও রনি লালা বড়ুয়া। সাহায্য পাঠানোর বিকাশ নম্বর ০১৮৮২৮১২৯৩১, ০১৭৮৭৮৬২৩৮৩। আপনার সাহায্যের টাকা বাঁচাতে পারে দুটি