হাসান আহমেদ নাারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
গত এক সপ্তাহ ধরে আমরা ফুটপাতে দোকান মেলতে পারি না। বসলেই পুলিশ প্রশাসনের লোকজন এসে আমাদেরকে দৌড়ে দেয় এবং মালামাল নিয়ে যায়। শহরে আমরা হকারেরা দৌড়াদৌড়ির উপর রইছি। এই বুঝি পুলিশ আইলো।
ফুটপাতে আমরা বইলে দৌড়ে দেয় অথচ ফুটপাতে উপরে বন্ধ করে শত শত গাড়ি খাঁড়ায়া থাকলেও চক্ষে কেউ দেখে না। যা যায়, গরীবের উপর দিয়ে যায়।
শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে-ফুটপাতে কয়েকজন হকার ছাড়া পুরো রাস্তাই হকারমুক্ত। তবে রাস্তা-ফুটপাত হকারমুক্ত হলেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সামনে রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে দাঁড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য গাড়ি।
অবস্থা দেখলে মনে হবে, হকারদের উচ্ছেদ করা হয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য। গাড়ি পার্কিং এর এই দৃশ্য দেখেই ক্ষোভের কথাগুলো বলেন ফুটপাত ব্যবসায়ী আফজাল
হোসেন।
শুক্রবার ছুটি হওয়ায় এই সুযোগে আবার ফুটপাতে বসেছেন আফজাল হোসেন। এছাড়া বাকি দিনগুলো পুলিশের ভয়ে দৌড়ের উপরেই থাকতে হয় তাকে।
গত শনিবার নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের আয়োজনে গোলটেবিল বৈঠকে শহরের হকার সমস্যা ও যানজট নিরসনে এক টেবিলে নারায়ণগঞ্জের জনপ্রতিনিধি বসার ফুটপাত দখলমুক্ত করার ঘোষণার পর থেকে হকাররা উচ্ছেদের মুখে রয়েছেন। ১০ মিনিটের জন্য ফুটপাতে বসলেই পুলিশ এসে উঠিয়ে দেয়।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের চাষাড়া পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কৃষি ব্যাংকসহ বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র রাস্তার পাশে ও ফুটপাতে পার্কিং করে থাকতে দেখা যায় শত শত গাড়িকে।
সড়কের তিন ভাগের এক ভাগ পার্কিংয়ের দখলে। গত শনিবারের আগেও এসব এলাকায় রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে হকারদের রমরমা ব্যবসা চলতো।
উচ্ছেদ অভিযানের পর হকাররা উঠে গেলেও প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন পরিবহনের অবৈধ পার্কিং বেড়ে গেছে।
ফুটপাতে বসা আরেক হকার আলামিন বলেন, ‘আমাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে রাস্তা- ফুটপাত দখলমুক্ত করার জন্য। পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা মটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার দেখিয়ে তিনি বলেন, দেখেন, কত গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে।
ছুটির দিন না হলে আরো কত দেখতেন! হকারদের থেকে গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে রাস্তা বেশি দখল হয়। তাহলে আমাগো কি দোষ? -বলে প্রশ্ন তোলেন আলামিন।
আর হকার উচ্ছেদের পরেও ফুটপাত-রাস্তা দখলমুক্ত না হওয়া ক্ষোভ প্রকাশ করেন এসব এলাকায় চলাচলকারী পথচারী, চাকরিজীবী ও বাসিন্দারা।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকতা অপূর্ব আহমেদ বলেন, ‘সুযোগ পেলে হকাররা বসতেছে। তবে নিয়মিত অভিযানের কারণে প্রায় কমে গেছে। গাড়ি পার্কিংয়ের উৎপাত অনেক বেড়েছে।
অফিসগুলোতে পার্কিং স্থান নেই। সব রাস্তায় দাঁড় করানো থাকে। রাস্তার উপর গাড়ি রাখা হকারদের জ্বালাতন থেকে কম না বলে জানান তিনি।