শেখ শোভন আহমেদ:
শৈলকুপার ঐতিহ্যবাহী ডাকুয়া নদী ও খাল এখন সম্পূর্ণ ভু’মিদস্যুদের দখলে চলে গেছে । শুধু মানচিত্রে ঠায় পেয়েছে সরকারী খাল ও নদীটি। সরকারী নদী ও খাল রক্ষায় সরকার ও প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিলেও শৈলকুপায় বাস্তবে এই নদী ও খালের এখন কোন অস্তিত্ব নেই !
যে ডাকুয়া কে কেন্দ্র করে উপজেলার কাঁচেরকোল ইউনিয়ন ও আশপাশে সমৃদ্ধ জনপদ গড়ে ওঠে, যে ডাকুয়া নদীই এখন মৃত। ভূমিদস্যু ও দখলদারদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি ভ’মি অফিস ও উপজেলা, জেলা প্রশাসন ।
সিএস রেকর্ডে ডাকুয়া নদীর শাখা প্রশাখা সরকারী খাল হিসাবে থাকলেও বাস্তবে এসব শাখা-প্রশাখা এখন ব্যক্তি নামে নামে রেকর্ড করে দিয়েছে সরকারের অসাধু কর্মকর্তারাই। সেখানে এখন ঘের দিয়ে দখলদাররা চাষাবাদ করছে, গাছ-গাছালি সহ দোকান-পাট ও পাকা স্থাপনাও তৈরী করেছে অনেক জায়গা। আবার কোথাও কোথাও সম্পূর্ণ ভরাট করে বিলীন করে দেয়া হয়েছে এর অস্তিত্ব ।
সরেজমিনে ও এলাকার প্রবীন মানুষদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, ডাকুয়া’র বিস্তৃতি এতটাই বড় ও চওড়া ছিল যা স্থানীয়রা নদী হিসাবে জানে ও পরিচিত। ডাকুয়ার বেশ কয়েকটি শাখা-প্রশাখা ছিল যা নদীর মতোই প্রবাহমান ও ভরা যৌবন ছিল। এই নদী ও খাল কে ঘিরে কৃষি, চাষাবাদ হতো মাঠের পর মাঠ। জেলেরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত, গড়ে ওঠে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের বসতি ।
উপজেলার ৫নং কাঁচের কোল ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে ডাকুয়া খাল উত্তর মির্জাপুর মৌজার ৭৩৪ দাগে গিয়ে পড়েছে। স্বাধীনতার আগে এই খাল কে কেন্দ্র করে স্থানীয় মানুষ তাদের জীবিকা নির্বাহ সহ যাবতীয় কাজ করত সরকারী বিশাল খালের উপর নির্ভর করে। তবে বর্তামানে খালের জায়গা প্লট আকারে বিভিন্ন ব্যক্তি নামে রেকর্ড হওয়ায় অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ছে খালটি ।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, স্বাধীনতার পর নানা সময় ও আর এস জরিপে উত্তর মির্জাপুর অংশে খালের ৮১ ও ৫৬৮ নং দাগ বিভিন্ন ব্যক্তি নামে রেকর্ড হয়েছে। সেটেলমেন্ট ও ভ’মি অফিসের দুর্ণীতিগ্রস্থ অসাধু কর্মকর্তারা এসব সরকারী খালের জায়গা বিলীন করে দিয়েছে।
স্থানীয়রা, সরকারী খালের আরএস রেকর্ড বাতিল সহ অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে সোচ্চার হয়েছে। তারা ডাকুয়া খাল ও নদী রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভূমি অফিস বরাবর বেশ কয়েকটি দরখাস্তও দিয়েছে।