বাঁশখালীতে ঘর নির্মাণে সংঘর্ষ ওয়ারেন্ট আসামি ধরতে গিয়ে ৬ পুলিশ সদস্য আহত

বাঁশখালী প্রতিনিধি প্রথম বুলেটিন

বাঁশখালীতে গেজেটভুক্ত বন বিভাগের জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গেলে উভয়ই পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়, এতে বন বিভাগের কর্মকর্তা ও স্থানী- য়সহ মোট ৭ জন আহত হয়েছে। বাঁশখালী ইকোপার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ ইসরাফিল হক জানান, এক বছর পূর্বে ৮০ ঘর পাড়া এলাকায় পাহাড়ের ঢাল কেটে ঘর নির্মাণের বিষয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে, পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণ কৃত ঘরটি উচ্ছেদ করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। মামলা চলমান অবস্থায় ফের ওই জায়গায় ঘর নির্মাণ করার খবর জানতে পেরে বাঁশখালী থানার পুলিশ নিয়ে মঙ্গলবার দুপুত্তে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গেলে স্থানীয়দের মধ্যে থেকে এক জন লোক উস্কানি দিলে পরে স্থানীয়রা বন বিভাগের লোকজনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, এ হামলায় বনকর্মী বিষ্ণু কুমার দাশ নামে একজনসহ চার জন আহত হয়। এবিষয়ে স্থানীয়রা জানান, গন্ডমারা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার ভূমিহীন অসহায় ভানবাসী মোক্তার ও তার স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে চায়ের দোকানে চাকুরী করে নানার বাড়িতে কোন মতে বসবাস করতেন, কিন্তু পরিবারের সদস্যদের তুলনায় ওই জায়গা সংকট দেখা দিলে, পরে স্থানীয় প্রতিবেশী দের সহয়তা নিয়ে বন বিভাগের কর্মকর্তা দের ২০ হাজার টাকা দিয়ে নয় মাস আগে ঘরটি নির্মাণ করে ছেলে সন্তান নিয়ে বসবাস করি, হঠাৎ আজ দুপুরে পুলিশ ও বন বিভাগের লোকজন এসে বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এতে ওই গ্রামের মানুষদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং উচ্ছেদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়। এ সময় বন বিভাগের কর্মীরা প্রতিবাদ কারীদের মারধর করা শুরু করে, এতে স্থানীয় মহিলাদের মারধর করেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা, তবে পুলিশ সমস্যারা কারো গায়ে হাত তুলেনি। একই দিন শীলকূপ ইউনিয়নে ৭ নম্বর এলাকায় ওয়ান্টেড ভুক্ত জিয়াউর রহমান (৪৩) নামের এক আসামিকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে গেলে আসামির ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বাঁশখালী থানা পুলিশের এআই মংথোয়াই (৪৮) মোহাম্মদ জসিম (৪৪) ইব্রাহিম কলিল (২৮) আনোয়ার হোসেন (২৭ ) পুলিশ এবং মোহাম্মদ নাছির (৩৮) নামের গ্রাম পুলিশ গুরুতর আহত হয়েছে, পরে আসামি জিয়াউর রহমান (৪৩) ওয়ারেন্ট আসামি ধরতে গেলে পালাবার চেষ্টা করে। পালাতে গিয়ে গাছের সাথে ধাক্কা লেগে মাটিতে পড়ে গেলে অতিরিক্ত পুলিশ তাঁকে হাতে নাতে গ্রেফতার করে।
বাঁশখালী থানা, ওয়ারেন্টভুক্ত দীর্ঘদিনের পলাতক আসামি জিয়াউর রহমান (৪৫)পিতা-মৃত দুলা মিয়া সাং- চরতিয়া পাড়া,৯ নং শিলকুপ,থানা- বাঁশখালী জেলা চট্টগ্রাম। গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে অভিযান পরিচালনা করিলে আসামি অফিসার অফ ফোর্স দের উপর অতর্কিত ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। আসামির অতর্কিত হামলায় এস আই মং থোয়াই, কং আনোয়ার হোসেন, কং ইব্রাহিম রক্তাক্ত জখম হয়। এই অবস্থায় বর্ণিত অফিসার ফোর্স স্থানীয়দের সহয়তাই আসামের বাড়ি ঘেরাও করে রেখে ওসি তোফায়েল কে ফোন করেন, ততখানিক ইন্সপেক্টর তদন্ত সুধাংশ ও এস আই তোফাজ্জলের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠায়। সকল অফিসার,ফোর্স এবং স্থানীয় জনতার সাহায্যে ধৃত আসামিকে তার ঘরের মধ্য থেকে বাহির হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হইলে আসামি বাহির না হলে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ নাসিরের সহায়তায় ধৃত আসামীর ঘরের দরজা নক করে বাহির হওয়ার জন্য পুনরায় অনুরোধ করা হয়। ধৃত আসামি গ্রাম পুলিশ নাসিরের ডাকে সাড়া দেয় এবং তার হাতে থাকার দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নাসিরকে হত্যার উদ্দেশ্যে আগাত করে, মাথা সরিয়ে নিলে তার কানে কোপ লেগে গুরুতর জখম হয় এবং পুনরায় হত্যার উদ্দেশ্যেই পুলিশকে তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে তখন পুলিশ আত্মরক্ষার জন্য শর্ট গান দিয়ে দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়েঁ।আসামি পালানোর চেষ্টা কালে গাছের সাথে ধাক্কা লেগে চোখে আঘাত প্রাপ্ত হয়। ১৭:৪৫ ঘটিকার সময় আসামিকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করার হয়,পরে তার কাছে আরো অস্ত্র আছে। স্বীকার করলে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে তার বসত ঘরে তল্লাশি করে আসামির শয়ন কক্ষে তোষকের নিচ থেকে একটি দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটার গান ও দুই রাউন্ড গুলি ১৭:৫০ ঘটিকার সময় জব্দ করা হয়। এছাড়াও দেশীয় ধারালো অস্ত্র জব্দ করা হয়। গ্রাম পুলিশকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ধৃত আসামিকেও উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য যে এই আসামি ২০১৯ সালের মার্চ মাসের ১৯ তারিখে ধারালো অস্ত্র নিয়ে বঙ্গভবনে প্রবেশ কালে পুলিশ বাধা দিলে পুলিশকে একইভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।এই সংক্রান্তের তৎকালীন সময়ে মতিঝিল থানায় পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় একটি নিয়মিত মামলা হয় । ধৃত আসামির বিরুদ্ধে ডিএমপিতে তিনটি মামলা চলমান আছে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আসামির বিরুদ্ধে সরকারি কর্তব্য কাজে বাধা দান, সরকারি কর্মচারীকে গুরুতর মারধর এবং অস্ত্র আইনে মামলা রেকর্ডের প্রক্রিয়াধীন।উল্লেখ জিয়াউর রহমান (৪৩) নামে থানায় বিভিন্ন অপরাধে তিনটি মামলা আছে। এ বিষয়ে বাঁশখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুধাংশু শেখর হালদার জানান, শীলকূপ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় ওয়ারেন্ট ভুক্ত জিয়াউর রহমান (৪৩) নামের এক আসামিকে থানা পুলিশ ধরতে গেলে সে ধরালো অস্ত্রদিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায়, এতে ৫ পুলিশ সমস্যাসহ এক গ্রাম পুলিশহ মোট ৬ আহত হয়, পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে আসামি জিয়াউর রহমান (৪৩)কে গ্রেফতার করা হয়, গ্রেফতার কৃত আসামি হইতে দেশীও তৈরি অস্ত্র সহ দুই রাউন্ড কার্তুস উদ্ধার করা হয়, বর্তমানে আসামি থানার হেফাজতে রয়েছে, এছাড়াও ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্ট ভুক্ত জসিম উদ্দিন নামের এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।