স্টাফ রিপোর্ট রাজিব হাওলাদার:
লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকা গরুর মাংসের দাম গত বছর নভেম্বরে হঠাৎ করে ৬০০ টাকায় নেমে আসে। এতে রাজধানীতে গরুর মাংসের বিক্রি বাড়ে বহুগুণ। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের আপত্তির মুখে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত কেজিতে ৫০ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ হয় ৬৫০ টাকা। কিন্তু নির্ধারিত সময় শেষে ঢাকার বাজারগুলোতে ফের বাড়তে শুরু করে গরুর মাংসের দাম। বর্তমানে প্রায় সব দোকানেই ৭০০ বা তারও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা লোকসানের অজুহাতে দাম আরও বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট সমিতির নেতারা।
এদিকে গরুর মাংসের ব্যবসায় কারসাজির অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বড় (করপোরেট) প্রতিষ্ঠান ব্যবসায় আসতে মাংসের দাম কমিয়ে দিচ্ছে। আবার অনেকে কম দামের প্রলোভন দেখিয়ে নাড়িভুঁড়ি ও চামড়া বাদে বাকি সব মাংস বলে বিক্রি করে দিচ্ছে। এতে ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছেন। এ ছাড়া বাজার নিয়ে সিটি করপোরেশন ও ব্যবসায়ীদের সমন্বয় না থাকায় ভোক্তারা যে কোনো সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য হচ্ছেন। এই সুযোগে যৌক্তিক কারণ ছাড়াই বাড়ানো হচ্ছে মাংসের দাম।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মুর্তজা কালবেলাকে বলেন, নির্বাচন পর্যন্ত কেজিপ্রতি সাড়ে ৬০০ টাকায় বিক্রি করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ওই সময়ে অনেক লোকসান হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে মাংস ব্যবসায়ীরা পথে বসবেন। সেজন্য আপাতত ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদিও এ দামেও খরচপাতি শেষে হাতে কিছু থাকে না। এ কারণে দাম আরও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
সমিতিটির তথ্যমতে, ২০১৮ সালে প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ছিল ৩২০ টাকা, ২০১৯-২০২০ সালে ৫০০ টাকা, ২০২১ সালে ৬৫০ টাকা, ২০২২ সালে ৭০০ টাকা। গেল বছর তা ৮০০ টাকায় গিয়ে ঠেকে। বছর শেষে নভেম্বরে ৬০০ এবং ডিসেম্বর থেকে নতুন বছর ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত বিক্রি হয় ৬৫০ টাকায়।
এখন নতুন করে দাম বাড়ানোর বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদা-জোগানের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে মাংসের দাম। কারণ বেঁধে দেওয়া দামে লোকসান হচ্ছে। অন্যদিকে, ভোক্তাদের অভিযোগ, দাম বাড়াতেই নানা ইস্যু তৈরি করছেন ব্যবসায়ীরা। শবেবরাত ও রমজান সামনে রেখে এটি তাদের চক্রান্ত। তাদের কারসাজি রোধে সরকারের তদারকি বাড়ানো এবং যারা ন্যায্যমূল্যে মাংস বিক্রি করবেন তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করার দাবি ভোক্তাদের।