আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে সোমবার দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর। সেখানেই এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) দিনভর মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী তেল-আভিভে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সবচেয়ে লম্বা বৈঠক হয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োআভ গ্যালান্টের সঙ্গে।
বৈঠকে, গাজা অভিযানের তীব্রতা ক্রমশ কমিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীও সে ইঙ্গিত দিয়েছেন। বস্তুত, বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে সংঘর্ষ-বিরতির আবেদন জানানো হচ্ছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও ফের এবিষয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার কথা। তার ঠিক আগে, এই ইঙ্গিত মিলল।
বস্তুত, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সংঘর্ষ-বিরতি নিয়ে ফের ভোটাভুটি হওয়ার কথা। মঙ্গলবার পর্যন্ত তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফের সংঘর্ষ-বিরতির দাবি তুলেছেন। এদিকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন পরিকল্পনায় আমেরিকার। নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ।
সোমবারের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে আমেরিকা ইসরায়েলকে জানিয়েছে, ৭ অক্টোবরের ঘটনার পর ইসরায়েল যে পাল্টা লড়াই শুরু করেছে, আমেরিকা তা সমর্থন করে। কারণ ইসরায়েলের আত্মরক্ষার সম্পূর্ণ অধিকার আছে। কিন্তু একইসঙ্গে বেসামরিক মানুষকে রক্ষা করার দায়িত্বও আছে ইসরায়েলের। সেদিকে এবার নজর দিতে হবে।
লোহিত সাগরে নিরাপত্তা বাড়াতে একটি আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে আমেরিকা। লোহিত সাগর দিয়ে যে জাহাজগুলি যাবে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এই গোষ্ঠী। গত কিছুদিনে একাধিকবার ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা এই পথে মার্কিন জাহাজের উপর আক্রমণ চালিয়েছে।
অস্টিন জানিয়েছেন, এটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা এবং সকলে মিলে এর সমাধান করতে হবে। আমেরিকার সঙ্গে এই অপারেশনে যোগ দেবে বাহরিন, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, ইটালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন এবং সেশেলস।
২০২২ সালের এপ্রিলে এই রাস্তায় একটি নিরাপত্তা বাহিনী আগেই তৈরি করা হয়েছিল। এবার সেই বাহিনীকে আরো শক্তিশালী করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। বস্তুত, আমেরিকা তিনটি ডেস্ট্রয়্যার যুদ্ধ জাহাজ ওই এলাকায় পাঠিয়ে দিয়েছে। যারা নিয়মিত সেখানে টহল দিচ্ছে। কিন্তু তাতেও নিরাপত্তার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ হয়নি। বহু বাণিজ্যিক জাহাজ ওই পথে চলাচল বন্ধ রেখেছে।
গত ৩ ডিসেম্বর ইরানের মদতপুষ্ট হুতি বিদ্রোহীদের মিসাইল তিনটি জাহাজে গিয়ে পড়ে। তিনটি জাহাজই বাণিজ্যিক। এর পরেই ওই পথে জাহাজ চালানো বন্ধ করে দেয় অসংখ্য জাহাজ সংস্থা।
সোমবার বিকেল পাঁচটায় নিরাপত্তা পরিষদে গাজা অভিযান নিয়ে ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। আরব দেশগুলি এনিয়ে নতুন খসড়াও তৈরি করছে। কিন্তু আমেরিকা এদিন ভোটে অংশ নিতে চায়নি। এর আগে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে আমেরিকা ভেটো দিয়েছে।
সূত্রের খবর, এবার আমেরিকা ভেটো দিতে চাইছে না। একটা সর্বসম্মত প্রস্তাব সামনে আসতে পারে। মঙ্গলবার এবিষয়ে চূড়ান্ত ভোটাভুটি হতে পারে। তবে আমেরিকা প্রস্তাবের খসড়া নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। সে বিষয়ে ঐক্যমত্য না হওয়া পর্যন্ত আমেরিকা প্রস্তাবটি মানবে না বলেই জানা গেছে। বস্তুত, তার আগে সোমবার ইসরায়েলের সঙ্গে বৈঠকে কী হয়, সেদিকেও নজর ছিল সকলের।
Leave a Reply