তাহিরপুরে ঝুঁকি নিয়ে ২০ গ্রামের মানুষের ভাঙা ব্রিজ পারাপার

সেলিম মাহবুব,সিলেটঃ

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিয়াঘাট নতুন বাজার থেকে কাউকান্দি বাজার হয়ে তাহিরপুর সদর এবং বৃহৎ বাদাঘাট বাজার পর্যন্ত একমাত্র সড়ক এবং ভাঙা ব্রিজটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কাশর না হওয়ায় একেবারে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। গত বন্যায় সড়ক এবং ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত আর মেরামত করা হয়নি। ভাঙাচুরা সড়ক এবং ব্রিজ দিয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকার ২০ গ্রামের মানুষদের। বিশেষ করে বালিয়াঘাট নতুন বাজার থেকে কাউকান্দি বাজার এবং বাদাঘাট বাজারে যাওয়ার পথে খলশাজুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের ব্রিজটি একেবারে ভেঙে পড়েছে। সড়ক এবং ব্রিজটি সংস্কার না হওয়ায় এই ভাঙা ব্রিজের উপর দিয়েই স্কুল-মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী সহ এলাকাবাসী চলাচল করছেন। ভাঙ্গা ব্রিজের চাটায়ের উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রায় সময়ই মোটরসাইকেল-অটোরিকশার চালকসহ যাত্রীরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। বছরের পর বছর সংস্কার না হওয়ায় ব্রিজ ও সড়কটি এখন এলাকার মানুষদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বন্যায় সড়কের দুই পাশ হাওরের ঢেউয়ে ভেঙে গেছে। সড়কজুড়েই এখন ভাঙন আর ভাঙন। কাউকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, খলশাজুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোলকপুর স্কুল, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী এবং বালিয়াঘাট নতুন বাজার, কাউকান্দি বাজারে আসা লোকজন এই ভাঙাচুরা সড়ক দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে এখন চলাচল করছেন। দীর্ঘদিন ধরে মেরামতের উদ্যোগ না নেয়ায় এলাকার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দ্রুত ভাঙা ব্রিজটি পুনরায় নির্মাণ এবং সড়কটি সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আমিন জানান, গত বন্যায় ব্রিজ এবং সড়কটি ভেঙে গেলেও এখন পর্যন্ত মেরামত করা হয়নি। গত বছর হাওর রক্ষা বাঁধের নাম করে কিছু মাটি দেয়া হয়েছিল। বর্ষায় পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে ব্রিজ এবং সড়কটি ভেঙে গেছে। পরে স্থানীয়রা ব্রিজের উপর বাঁশের চাটায় দিয়ে এখন কোন রকম চলাচল করছেন। অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চালকরা যাত্রী নিয়ে প্রায় সময়ই এখানে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছেন। কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, প্রতিদিন এই ভাঙা সড়ক এবং ভাঙা ব্রিজ দিয়ে আমাদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু এমন ভাঙাচুরা সড়ক এবং ব্রিজ দিয়ে একবার গেলে দ্বিতীয়বার আর ভয়ে যেতে ইচ্ছা করে না। মোটরসাইকেলচালক গফুর মিয়া বলেন, পেটের দায়ে আমরা মোটরসাইকেল চালাই। ভাঙা সড়কে গাড়ি চালাতে মন চায় না। কিন্তু নিরুপায় হয়ে আমাদেরকে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। ভাঙাচুরা সড়ক এবং ব্রিজ দিয়ে গাড়ি চালাতে গিয়ে কয়েকদিন পর পর এখানে দুর্ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় আবুল কালাম বলেন, গত বন্যায় সড়ক এবয় ব্রিজটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা এলজিইডি থেকে এখন পর্যন্ত সংস্কার করা হয়নি। প্রতিনিয়ত তাঁরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, জনবহুল সড়ক এবং ব্রিজটি বর্ষায় মাটিয়ান হাওরের ঢেউয়ে ভেঙে গেছে। বর্তমানে চলাচলের জন্য একেবারে অনুপযোগী। সড়ক এবং ব্রিজটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন বলে জানান স্হানীয় এলাকাবাসী। শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলী হায়দার জানান, জনবহুল এই সড়ক এবং ভাঙা ব্রিজটি মেরামতের জন্য হাওররক্ষা বাঁধের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। চৈত্র মাসের দিকে ব্রিজ এবং সড়কের কাজ শুরু হবে।##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *