মোঃ অহিদুর রহমান খান নিজস্ব প্রতিবেদক প্রথম বুলেটিন
খুলনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে ১০ জোড়া স্পেশাল ট্রেন ও দুটি ঘাটে নতুন করে ৬টি ফেরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, এসব ট্রেন নওয়াপাড়া, যশোর, বেনাপোল, চুয়াডাঙ্গা, কোটচাঁদপুর, আলমডাঙ্গা, মোবারকগঞ্জ ও কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে খুলনায় আসবে।
খুলনা রেল স্টেশন মাস্টার মো. মাসুদ রানা জানান, প্রধানমন্ত্রীর খুলনা সফর উপলক্ষে ১০ জোড়া নতুন ট্রেন বিভিন্ন জেলা থেকে খুলনায় এসে পৌঁছাবে। শুধুমাত্র আজ ১৩ নভেম্বর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ট্রেনগুলো চলাচল করবে।
১০ জোড়া স্পেশাল ট্রেনের সূচি- সোমবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ৯টায় কুষ্টিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে খুলনা অভিমুখে যাত্রা করবে স্পেশাল ট্রেন। এতে আসন সংখ্যা ৭৩৫টি। খুলনায় পৌঁছাবে ১২টা ১৫ মিনিটে। ট্রেনটি খুলনা থেকে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে, পৌঁছাবে রাত ৮টা ২০ মিনিটে।
আলমডাঙ্গা থেকে সকাল ৯টায় খুলনা অভিমুখে ছেড়ে আসা আলমডাঙ্গা স্পেশাল ট্রেন খুলনা পৌঁছাবে ১১টা ৫৫ মিনিটে। এতে আসন ৭৩২টি। ট্রেনটি খুলনা ছেড়ে যাবে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে, পৌঁছাবে রাত ৮টা ২০ মিনিটে।
চুয়াডাঙ্গা থেকে সকাল ৯টায় খুলনা অভিমুখে ছেড়ে আসা চুয়াডাঙ্গা স্পেশাল ট্রেন খুলনা পৌঁছাবে ১১টা ৪০ মিনিটে। এতে আসন ৭৬২টি। ট্রেনটি খুলনা ছেড়ে যাবে সন্ধ্যা ৬টায়, পৌঁছাবে রাত ৯টার দিকে।
কোটচাঁদপুর থেকে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে খুলনা অভিমুখে ছেড়ে আসা কোটচাঁদপুর স্পেশাল ট্রেন খুলনা পৌঁছাবে ১১ টায়। এতে আসন ৬৩০টি। ট্রেনটি খুলনা ছেড়ে যাবে সন্ধ্যা ৫টা ৩৫ মিনিটে, পৌঁছাবে রাত ৯টার দিকে।
মোবারকগঞ্জ থেকে সকাল ৯টায় খুলনা অভিমুখে ছেড়ে আসা মোবারকগঞ্জ স্পেশাল ট্রেন খুলনা পৌঁছাবে ১০টা ৪০ মিনিটে। এতে আসন ৭৩৫টি। ট্রেনটি খুলনা ছেড়ে যাবে সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে, পৌঁছাবে রাত ৮টার দিকে।
বেনাপোল থেকে সকাল ৭টায় খুলনা অভিমুখে ছেড়ে আসা বেনাপোল স্পেশাল ট্রেন খুলনা পৌঁছাবে ৮টা ৫০ মিনিটে। এতে আসন ৭৮০টি। ট্রেনটি খুলনা ছেড়ে যাবে সন্ধ্যা ৫টা ৫০ মিনিটে, পৌঁছাবে রাত ৭টা ৫০ মিনিটে।
এছাড়া যশোর ও নওয়াপাড়া থেকে স্পেশাল ট্রেন ২টি করে ট্রিপ দিবে। এরমধ্যে যশোর থেকে সকাল ৮টায় খুলনা অভিমুখে ছেড়ে আসা যশোর স্পেশাল ট্রেন খুলনা পৌঁছাবে ৯টায়। এতে আসন ৭৬৪টি। ট্রেনটি খুলনা ছেড়ে যাবে সকাল ৯টা ২০ মিনিটে, পৌঁছাবে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে। ২০ মিনিট অপেক্ষার পর আবারও যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে যশোর স্টেশন ত্যাগ করে খুলনা পৌঁছাবে বেলা ১২টা ৫ মিনিটে।
যশোরের উদ্দেশ্যে ট্রেনটি খুলনা ছাড়বে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে, পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৫টা ৩০ মিনিটে। যশোর থেকে ফের যাত্রী নিয়ে সন্ধ্যা ৫টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে খুলনায় আসবে সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে।
আর নওয়াপাড়া থেকে সকাল ৯টায় খুলনা অভিমুখে ছেড়ে আসা নওয়াপাড়া স্পেশাল ট্রেন খুলনা পৌঁছাবে ৯টা ৪৫ মিনিটে। এতে আসন ৪৯২টি। ট্রেনটি খুলনা ছেড়ে যাবে সকাল ১০টা ৫ মিনিটে, নওয়াপাড়ায় পৌঁছাবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে। নওয়াপাড়া থেকে যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে খুলনা পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে। নওয়াপাড়ার উদ্দেশ্যে ট্রেনটি খুলনা ছাড়বে বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে, পৌঁছাবে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে। নওয়াপাড়া থেকে ফের যাত্রী নিয়ে সন্ধ্যা ৫টা ৩৫ মিনিটে ছেড়ে খুলনায় আসবে সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে। ট্রেনটি খুলনা থেকে নওয়াপাড়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে, পৌঁছাবে রাত ৭টা ৫ মিনিটে। সবশেষ নওয়াপাড়া থেকে ট্রেনটি রাত ৭টা ২৫ মিনিটে ছেড়ে খুলনায় আসবে রাত ৭টা ৫৫ মিনিটে।
এদিকে মানুষ পারাপারের সুবিধার জন্য নতুন করে রূপসা ঘাটে ৫টি ও জেলখানা ঘাটে একটি ফেরি চলাচল করছে।
খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের (ফেরি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আজম শেখ জানান, প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় নির্বিঘ্নে দলীয় নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের আসা-যাওয়ার জন্য আমরা নদীপথে আগের চারটি ফেরির সঙ্গে আরও ৬টি নতুন ফেরি যুক্ত করেছি।
জনসভায় আসছেন নেতাকর্মীরা
খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় আসতে শুরু করেছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে নেতাকর্মীরা আসছেন জনসভায়।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি, দলীয় প্রতীক, প্লাকার্ড, দলীয় ও জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে যোগ দিচ্ছেন সার্কিট হাউজ মাঠে। ব্যানার নিয়ে মিছিল সহকারে আসছেন বিভিন্ন জেলা-উপজেলার নেতাকর্মীরা। সড়ক, রেল ও নৌপথে খুলনা বিভাগের ১০ জেলা এবং পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জ ও পিরোজপুর জেলা থেকেও আসছেন অসংখ্য নেতাকর্মী। লোকজন আসার সুবিধার্থে নগরীর রূপসা ঘাট ও জেলখানা ঘাটে ১০টি ফেরী চালু করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দেখা ও শোনার সুবিধার জন্য নগরীর ২৮টি পয়েন্টে এলইডি মনিটর স্থাপন করা হয়েছে। মাইক দেওয়া হয়েছে জনসভাস্থলের পার্শ্ববর্তী ৩-৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রধানমন্ত্রী ও জনসভার নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, নৌপুলিশ ও আনসার বাহিনীর কয়েক হাজার সদস্য।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক জানান, প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে দুপুর পৌনে ১টায় খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে নির্মিত হেলিপ্যাডে অবতরণ করবেন। এরপর দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত সার্কিট হাউজে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করবেন। বিকেল পৌনে ৩টায় সার্কিট হাউজ মাঠে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এরপর যোগ দেবেন আওয়ামী লীগ আয়োজিত খুলনা বিভাগীয় জনসভায়।
জেলা প্রশাসন জানায়, প্রধানমন্ত্রী ২ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ২২৩ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ ৫টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৮ সালের ৩ মার্চ খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে জনসভায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। পরে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি ব্যক্তিগত সফরে খুলনা এসেছিলেন।
Leave a Reply