রহিদুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহীঃ
ক্যাডার কম্পোজিশন সুরক্ষা, পদোন্নতি, পদসৃজন, স্কেল আপগ্রেডেশন ও আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবিতে কর্মবিরতি করেছেন রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষকরা।
আজ সোমবার (২ অক্টোবর) দিনব্যাপী রাজশাহী কলেজে কর্মসূচি পালন করেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তারা। দাবি পূরণ না হলে ১০-১২ অক্টোবর পর্যন্ত টানা তিনদিনের কর্মবিরতি পালন করবেন বলে জানান তারা।
ক্যাডার বৈষম্য নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নসহ শিক্ষা ক্যাডারের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়ে রাজশাহী কলেজ ইউনিটের বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির , সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী কলেজ ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুল মতিন বলেন, ক্যাডার বৈষম্য নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নসহ শিক্ষা ক্যাডারের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাচ্ছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। প্রাথমিকভাবে আগামী ২ অক্টোবর ২০২৩ দেশের সকল সরকারি কলেজ, টিটি কলেজ, আলীয়া মাদ্রাসা, মাউশি, শিক্ষাবোর্ডসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল দপÍর অধিদপ্তরে এই কর্মবিরতি পালন করা হবে। এরপরেও দাবি আদায় না হলে আগামী ১০, ১১ ও ১২ অক্টোবর ২০২৩ টানা তিনদিনের সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের নির্দেশনা দিলেও তা প্রতিপালিত হচ্ছে না। পদোন্নতি বৈষম্য কমাতে সকল ক্যাডারে সুপারনিউমারারি পদসৃষ্টি করে পদোন্নতি প্রদান, অধ্যাপক পদ তৃতীয় গ্রেডে উন্নীতকরণ ও অর্জিতছুটি সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা থাকলেও তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। শিক্ষা ক্যডারের তফসিলভুক্ত পদগুলো দখল করার মানসে সম্পূর্ণ অজ্ঞাতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর,মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও সরকারি আলীয়া মাদ্রাসার জন্য আলাদা নিয়োগ বিধিমালা করা হয়েছে যা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা কম্পোজিশন এন্ড ক্যাডার রুলস ১৯৮০ এর পরিপন্থী। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বেএসকল বিধিমালা বাতিল এবং শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভূক্ত পদ থেকে শিক্ষা ক্যাডার বহির্ভূতদের দ্রুত অপসারণের দাবী জানান। তারা জানান, পদোন্নতিতে সবচেয়ে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে শিক্ষা
ক্যাডারে। কোন কারণ ছাড়াই দুইবছর পদোন্নতি বন্ধ রাখা হয়েছে। এই মুহূর্তে প্রায় ৭ হাজার কর্মকর্তা সকল যোগ্যতা পূরণ করে পদোন্নতির অপেক্ষায় আছেন। সময়মত পদোন্নতি না হওয়ায় অনেকে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে অবসরে যাচ্ছেন। তারা বলেন গত ২৭ তারিখে সহযোগী অধ্যাপক পদে ৬৯০ জনের পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে, অথচ সহযোগী অধ্যাপক পদে ৩০০০ জন কর্মকর্তা পদোন্নতি যোগ্য আছেন।
ডাঃ মোঃ আব্দুল মতিন বলেন, অযৌক্তিক আংশিক পদোন্নতির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত ডিপিসি সভা করে সকল স্তরে যোগ্য সকল কর্মকর্তার পদোন্নতি দবি করেন। ২০১৫ সালের পে-স্কেলের ফলে সৃষ্ট বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক অধ্যাপক পদ তৃতীয় গ্রেডভুক্ত করা এবং ক্যাডার স্ট্রেন্থ অনুযায়ী ১ম ও ২য় গ্রেডের পদসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক পদসৃজন, শিক্ষা ক্যাডারকে নন-ভ্যাকেশন বিভাগ ঘোষণা করে অর্জিত ছুটি সমস্যা সমাধানের দাবি করেন। এছাড়া বাংলাদেশের শিক্ষার গুনগত মানের দুর্বলতার মূল কারণ অদক্ষ ও অপেশাদার ব্যক্তিবর্গ কর্তৃক শিক্ষা পরিকল্পনা ও প্রশাসন পরিচালনা। শিক্ষায় জাতীয় লক্ষ্য অর্জনে একটি দক্ষ যুগোপযোগী ও সয়ংসম্পূর্ন শিক্ষা ব্যবস্থাপনা সময়ের দাবি। এজন্য দরকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শন বাস্তবায়ন। তারা উপজেলা, জেলা থেকে শুরু করে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর অধিদপ্তর ও প্রকল্পসমূহে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়োগের দাবী জানান ।
কর্মসূচিতে অংশ নেন- রাজশাহী কলেজ ইউনিটের বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি ও রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা: আব্দুল খালেক, সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী কলেজ ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডঃ মোঃ আব্দুল মতিন, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কামরুজ্জামান কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ ড. ইলিয়াস হোসেন, রাজশাহী কলেজ উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা: ওলিউর রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সচিব মোস্তাক নাসিরুল আজম, নির্বাহী সদস্য প্রফেসর আব্দুস সালাম, প্রদীপ কুমার মোহন প্রমুখ।
Leave a Reply