জয়পুরহাটে ভুয়া সাংবাদিক তৈরির কার্ড বাণিজ্যের অভিযোগ

মোঃ আমজাদ হোসেন স্টাফ রিপোর্টার

জয়পুরহাটে ভুয়া সাংবাদিক তৈরির কারখানা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে। কিছু ব্যক্তি ফেসবুক পেজ ও ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে নিজেদের প্রকাশক ও সম্পাদক পরিচয় দিয়ে পরিচালনা করছেন সাংবাদিকতার আইডি কার্ড বিক্রির কারবার। এই চক্র চাঁদাবাজি, অপপ্রচার এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে অর্থ আদায়ের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।

“সকালের সংযোগ ২৪” নামের একটি ফেসবুক পেজ এবং অনিবন্ধিত অনলাইন পোর্টাল এই দুর্নীতির মূল হোতা হিসেবে উঠে এসেছে। প্রকাশক ও সম্পাদক হিসেবে পরিচিত রাশেদ খান মিলন নামে এক ব্যক্তি বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। ভুক্তভোগীদের দাবি, তার কোনো বৈধ রেজিস্ট্রেশন বা সুনির্দিষ্ট ঠিকানা নেই। অথচ পোর্টালটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে সাংবাদিকতার নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছে।

প্রকাশক ও সম্পাদক পরিচয়ধারী এই ব্যক্তি ফেসবুক পেজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। মাত্র ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার বিনিময়ে সাংবাদিকতার কার্ড বিক্রি করা হয়। এসব কার্ড দিয়ে নিজস্ব স্বাক্ষরে সাংবাদিক, সম্পাদক, প্রকাশক বা স্টাফ রিপোর্টার পরিচয়ে অবৈধ কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। কোনো বৈধ অনুমোদন ছাড়াই তারা সংবাদ প্রকাশের নামে অপপ্রচার এবং চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে।

ভুক্তভোগী রায়হান আলী বলেন, ফেসবুকে আমার সম্পর্কে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করেছে। আমি এই পোর্টালের বিরুদ্ধে তথ্য মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

আরেক ভুক্তভোগী সাগর চন্দ্র জানান, রাশেদ খান মিলন আমার কাছে বিশাল অঙ্কের অর্থ দাবি করেছে এবং মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়েছে। তার সহযোগীরা আরও বেশি হুমকি দেয়। এসব কর্মকাণ্ডে আমি দুশ্চিন্তায় আছি।

স্থানীয় সাংবাদিকরা মনে করেন, এমন অবৈধ কর্মকাণ্ড সাংবাদিকতার পবিত্রতাকে কলুষিত করছে। একজন বৈধ অনলাইন পোর্টাল তৈরিতে যে পরিমাণ পরিশ্রম ও অর্থ বিনিয়োগ প্রয়োজন, সেখানে এ ধরনের ভুয়া পোর্টাল গড়ে তুলতে কোনো নিয়ম-কানুন মানা হচ্ছে না। এই চক্র তাদের আইডি কার্ড ও সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে সমাজে ভীতি তৈরি করছে এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে। সাংবাদিকতা পেশাকে কলঙ্কিত করছে।

এই চক্র জয়পুরহাটে আলু চুরির অভিযোগ এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে ভিত্তিহীন ও অসংলগ্ন শিরোনাম দিয়ে অপপ্রচার চালিয়েছে এসব প্রতিবেদন ভিত্তিহীন।

বগুড়া প্রেসক্লাবের সিনিয়র সাংবাদিকরা বলেছেন, অনিবন্ধিত ও অনুমোদনবিহীন অনলাইন পোর্টাল কোনোভাবেই সংবাদ প্রচার করতে পারে না। জয়পুরহাট জেলার প্রশাসন, এনএসআই এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাকে অনুরোধ করছি, এসব ভুয়া পোর্টালের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

এই ধরনের অপপ্রচার ও চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। সাংবাদিকতার পবিত্রতাকে বজায় রাখতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *