today visitors: 5073432

চাঁদপুর জেলা পর্যায়ে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকার এবং মিডিয়া প্রতিনিধিদের সাথে প্রকল্প অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত

নির্বাহী সম্পাদক (প্রথম বুলেটিন) – ইমরান হক

চাঁদপুর জেলা পর্যায়ে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকার, সুশীল সমাজ, এনজিও এবং মিডিয়া প্রতিনিধিদের সাথে প্রকল্প অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

১৪নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল ১১টার দিকে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষে এ প্রকল্প অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিসিডিএ (সিমস) প্রকল্প প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. ইকবাল হোসেন।

চাঁদপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোস্তাফিজুর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।

তিনি বলেন, আপনাদের যে বিষয়গুলোর প্রতি বেশি নজর দেওয়া উচিৎ সেটি আগে করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় একটি জন্ম নিবন্ধন বা এনআইডি করতে গিয়ে প্রবাসীরা বিভিন্ন ভাবে জটিলতায় ভুক্তভোগী হয়। তবে সে ক্ষেত্রে ব্যাক্তি নিজেই দায়ী। কারণ তারা সচেতন নয়।

এসময় জেলা প্রশাসক সিসিডিএ ও এনজিও কর্মকর্তাগণকে বলেন, আপনারা তাদেরকে (প্রবাসীদের) ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে বুঝিয়ে অবগত করতে হবে। বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে আপনারা প্রবাসীদেরকে বুঝাতে হবে যে, আপনার বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে সরাসরি আপনি নিজে কাজ করেন। অথবা অফিসারদের কাছ থেকে সেবা নিতে পারেন। বিদেশ গমনিচ্ছুকদের ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে আরো সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, একজন ব্যাক্তি দুবাই গেলে ট্রাভেল ভিসায়ও যেতে পারে আবার ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় ও যেতে পারে। কিন্তু সমস্যা হলো, যাওয়ার আগে ভিসার বিষয়ে যাত্রী অবগত থাকেনা। সে কি ভিজিট ভিসায় যাচ্ছে, নাকি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যাচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায়, যে ব্যাক্তি বিদেশে যাবে, সে জানে সে ভিজিট ভিসায় যাচ্ছে, কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর ভিজিট ভিসায় কাজ খোঁজে। পরে যখন ভিজিট ভিসায় কাজ না পায়, তখনি সমস্যাটা হয়। এই রকম ভূল ভ্রান্তি অহরহ হচ্ছে। তাই প্রান্তিক লেবেলের লোকজনকে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বুঝিয়ে ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে অবহিত করতে হবে। ভিসা সম্পর্কিত তথ্য ভালোভাবে বুঝে শুনে যেতে হবে।

এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, অনেক সময় ছোটখাটো জটিলতার বিষয় নিয়েও দেখা যায় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক টাকা দিচ্ছে না, এনআইডি সমস্যা, জন্ম নিবন্ধন সমস্যা অথবা বিভিন্ন রকম সমস্যা নিয়ে যখন তারা সরকারি অফিসের লোকজনের দ্বারস্থ হয়, তখন তারা ভালো সেবা টা পায়না।

এই ক্ষেত্রে অবশ্যই অফিসারদের নিকট গেলে তারা ভালো সেবা পায়। কোনো সমস্যা হয়না। কিন্তু স্টাফ বা অফিসের লোকজন সেভাবে তাদেরকে বুঝাতে পারেনা। সেবা দিচ্ছে না, এগুলোও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।
তিনি প্রবাসীদের বিষয়ে বলেন, আপনি যদি মধ্যপ্রাচ্যের দেশে যান অবশ্যই ভাষা শিখে যেতে পারলে ভালো করতে পারবেন। আপনারা ভাষার জন্য ট্রেনিং নিয়ে যান। ভাষা শিখে গেলে সেখানে মূল্যয়ান বেশি পাবেন।
এছাড়াও তিনি বৈদিশিক বিষয়ে বিভিন্ন জটিলতা, শ্রমিক সমস্যা, কর্মক্ষেত্র, ভিসা সমস্যা, দালালদের দ্বারা হয়রানির স্বীকার হওয়া, ফেইক ভিসা দেওয়া, বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশে গমনসহ নানান দিক ও জনশক্তি রফতানির মূল ধারার বিষয়বস্তু নিয়ে তিনি আলোচনা করেন।

এছাড়াও অদক্ষ কর্মীদের বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, বেশিরভাগ লোকজনই দেখা যায় বিদেশে গিয়ে স্কীল লেভেল কোনো কাজ করতে পারেনা। আন স্কীল কর্মীই বেশী সেখানে।

দ্রুতাবাস গুলোর বিষয়ে ডিসি বলেন, দ্রুতা বাসগুলো আরো ভালো সার্ভিস দিলে কর্মীদের বিষয়ে আরো সচেতন হলে, তারা বিদেশের মাটিতে আরো ভালো করতে পারে এবং বিভিন্ন সমস্যা গুলো সমাধান করে সেখানে তারা অবস্থান করতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে দ্রুতা বাসগুলোতে গেলে, সেখানে চাহিদা মতো সেবা না পেলে তখন প্রবাসীরা দেশে ফেরত চলে আসতে বাধ্য হয়। এই বিষয়গুলো সমাধান হলে প্রবাসীদের জন্য আর কোনো জটিলতা থাকবেনা। দেশে রেমিট্যান্স আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।

একজন প্রবাসী দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর পর পারিবারিক ভাবেও অনেক সমস্যা হয়। সে বিষয়েও সতর্ক করতে হবে তাদেরকে। এছাড়াও প্রবাসীরা বিদেশের মাটিতে মারা গেলে তার লাশ আনতে কোনো টাকা লাগেনা। উল্টো টাকা আরো পায়। এই বিষয়ে ট্রেনিংয়ে প্রবাসীদেরকে অবগত করতে হবে, সচেতন করতে হবে।

যারা জানেন না, যারা সচেতন না, তাদের বিষয়ে সচেতনাতা বৃদ্ধির লক্ষে আপনারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণের সাথে এবং ইউএনও, সিসিডিএ এবং প্রবাসী হেল্প লাইনে ও তথ্য অফিসারের সাথে কথা বলবেন। ডোর টু ডোর প্রান্তিক লেবেলের লোকজনকে সচেতন করতে হবে।
তিনি বলেন, মূল স্টেকহোল্ডারদের সাথে কথা বলে তাদেরকে বুঝাতে হবে। আপনারা যদি ১শ জনের সাথে কথা বলেন, সেখানে যদি ১০জনও সচেতন হয়, সেটাই সফলতা। মানুষের সাথে কথা বলতে দুটি চেয়ার হলেই যথেষ্ট। আপনারা আপনাদের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার লক্ষ নিয়ে কাজ করুন, কোন সহায়তায় জেলা প্রশাসন পাশে আছে ও থাকবে বলে জেলা প্রশাসক তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করেন।

সেন্টার ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট এসিসটেন্স(সিসিডিএ) এর আয়োজনে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) রাশেদুল হক চৌধুরী, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্ত, সদর উপজেলা ইউএনও শাখাওয়াত জামিল সৈকত, সিসিডিএ ডেপুটি ডিরেক্টর মো. লুৎফর রহমান, সিসিডিএ কনসালটেন্ট মো. খালিদ হোসেন, সিসিডিএ এনডেটাস প্রতিনিধি মো. সাজ্জিদ, চাঁদপুর জেলা জনশক্তি অফিস কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান, সদর উপজেলা শাহ মাহমুদপুর ইউপি সচিব মো. কুদ্দুছ আখন্দ রোকন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর জেলা তথ্য অফিসার তপন বেপারী, জেলা পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা মো. মাহাবুবুর রহমান, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমন সিসিডিএ সিমস প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারী নার্গিস আক্তারসহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকবৃন্দগণ ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *