মোঃ নুর হোসেন লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী মো. সাব্বিরের লাশ দাফনের ২৯ দিন পর উত্তোলন করা হয়েছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে (আজ) বুধবার সকালে তাঁর লাশ কবর থেকে তোলা হয়। এসময় শোকে বাকরূদ্ধ তার বাবা আমির হোসেন নিষ্পলক তাকিয়ে আছেন আকাশের দিকে। তার মা মায়া বেগমসহ স্বজনদের আহাজারিতে আরও ভারী হয়ে উঠছে পুরো এলাকা। একজন বুকের মানিক সাব্বিরের মুখ দেখতে চেয়েছেন। কিন্তু সেই সৌভাগ্য হয়নি মায়া বেগমের।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহরের দক্ষিণে লক্ষ্মীপুর-টু-রামগতি সড়কের পাশে অবস্থিত মনির উদ্দিন পাটোয়ারী জামে মসজিদের কবরস্থান থেকে নিহত শিক্ষার্থীর মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মজিবুর রহমান ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর মডেল থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেনের উপস্থিতিতে কবর থেকে সাব্বিরের লাশ উত্তোলন করা হয়।
পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
শিক্ষার্থী সাব্বির নিহতের ঘটনায় তার বাবা আমির হোসেন বাদী হয়ে জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও সদর উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহ্ উদ্দিন টিপুকে প্রধান করে ৯১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০০ আসামী নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি আমলে নিয়ে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সদর কোর্ট) বিচারক আবু নোমান কবর থেকে লাশ উত্তোলনের আদেশ দেন।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেন জানান, আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে লাশটি উত্তোলন করা হয়। মামলার তদন্তে স্বার্থে। ময়নাতদন্তের পর ফের দাফন করা হবে।
নিহত সাব্বির সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। সেই দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিলেন। তবে তার মৃত্যুর পর লাশ আনা হয় নানার বাড়ী লক্ষ্মীপুর পৌরসভার (১২নং ওয়ার্ড) মনির উদ্দিন পাটোয়ারী বাড়ীতে। একদিন পর তার দাফন হয় মনির উদ্দিন পাটোয়ারী জামে মসজিদের কবরস্থানে।
উল্লেখ্য: গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে লক্ষ্মীপুরে সাব্বিরসহ ৪ শিক্ষার্থী আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের গুলিতে নিহত হয়। ওইদিন আরও শতাধিক মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়।