ইব্রাহিম আলম সবুজ রাজারহাট কুড়িগ্রাম সংবাদদাতাঃ
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নমজারি সহ নানারকম কাজে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বিস্তর অভিযোগ রয়েছে একজনের জমি অন্যজনকে পাইয়ে দেবারও। এমন ঘটনায় জেলা উপজেলা সহ কয়েকটি দফতরে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী একাধিক ব্যক্তি। ঘটনা কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে। অভিযোগকারীর দাবি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দফতরে ঘুরেও মিলছেনা সমাধান।
বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন আকন্দের বিরুদ্ধে এক অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে রেকর্ড খতিয়ান সঠিক না থাকা সত্বেও নামজারির মাধ্যমে একজনের জমি আরেকজনকে পাইয়ে দিয়ে আসছিলেন। এই অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছিলেন সাবেক রাজারহাট উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি এবিএম আরিফুল ইসলাম এমনটাই দাবি করেছেন অভিযোগকারী। আব্দুর রাজ্জাক নামের অভিযোগকারী তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, এর আগেও কয়েকবার উর্ধতন কর্মকর্তার নিকট তারা অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আলমগীর হোসেন আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
আব্দুর রাজ্জাকের অভিযোগ গত ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ইং তারিখ একটি নামজারির আবেদন করেন। দলিল মুলে বিক্রেতার নিকট ক্রয়কৃত জমি এবং ক্রয়ের দলিল রেকর্ড আরএস খতিয়ান সহ যাবতীয় কগজপত্র দাখিল করলে সকল তথ্যাদি সঠিক থাকা সত্তেও দায়ীত্ব প্রাপ্ত ইউনিয়ন সহকারী কর্মকর্তা ভূমি নামজারি না মঞ্জুর করেন। বিষয়টি আব্দুর রাজ্জাক জানতে চাইলে বিভিন্ন রকম টালবাহানা করেন এবং একপর্যায়ে তিনি পূনরায় আবেদন করতে বলেন। তার কথামত পুনরায় নামজারি আবেদন করেন অভিযোগকারী এবং যাবতীয় কাগজপত্র পুনরায় তার নিকট দাখিল করেন। দলিলাদি দাখিল করলে উক্ত নামজারিটি সম্পূর্ণ করে দিবেন মর্মে আব্দুর রাজ্জাকের নিকট বিশ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। ঘুষের টাকা দিতে দেরি হলে আংশিক নামজারি প্রস্তাব করেন এবং পুরো টাকা দিলে নামজারি করে দিবেন বলে জানান। পরবর্তীতে আব্দুর রাজ্জাক পুনরায় বাকী জমির নামজারির জন্য আবেদন করে। কিন্তু তার দাবীকৃত টাকা দিতে না পারায় তিনি আব্দুর রাজ্জাকের আবেদন পুনরায় নামঞ্জুর এর জন্য প্রতিবেদন প্রদান করেন। আব্দুর রাজ্জাকের এক প্রতিবেশী রবিউল ইসলামকে দলিলাদি ও আরএস রেকর্ড মুলে মালিক না হওয়া সত্ত্বেও মোটা অংকের ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে বিধি বহির্ভূত ভাবে নামজারি মঞ্জুরের প্রস্তাব করেন। উক্ত ব্যক্তির নামে দলিলাদি ও আরএস রেকর্ডের সত্যতা না থাকা সত্ত্বেও নামজারিটি সম্পূর্ণ করেন।
সাম্প্রতিক আরও একটি অভিযোগ তোলেন এই ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ইউনিয়নের পাড়ামৌলা গ্রামের বাসিন্দা আঃ খালেক। অভিযোগে তিনি বলেন তারা ত্রিশ বছর ধরে ভোগ দখল করে আসা জমির দখলিস্বত্ব দেন আরেকজনের নামে। মাঠে জরিপ না করে অফিসে বসে টাকার বিনিময়ে একের পর এক অপকর্ম কান্ড ঘটাচ্ছে আলমগীর হোসেন।
এবিষয়ে বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন তদন্ত রিপোর্ট এক তরফা দেই আর দুই তরফা দেই ওদের আমার প্রতিবেদন গ্রহণযোগ্য মনে না হলে নারাজি করতে পারে।
রাজারহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ ইকবাল সোহরাওয়ার্দী বাপ্পি বলেন, আমি একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এর আগেও তার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও পেয়েছি, সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুর আরিফ বলেন অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইব্রাহিম আলম সবুজ
রাজারহাট কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা।
তাং ০৪/০৭/২০২৪ইং।
মোবাঃ ০১৭১২০০০৫৪০