বিয়ের পরের দিনই গলা থেকে হার চুরি হলো নববধূ ফাতেমার। দিকবেদিক তন্য তন্য করে খুঁজেও কোথাও মিলছে না সেই হারের সন্ধান। ওদিকে ঝন্টির মা খবর দিলেন পূর্বপাড়ার বেলতলার ওই ঘরে থাকেন এক ঘটি বাবা।তিনি মন্ত্র পড়ে বাটি চালান দিতেই প্রয়োজনে মাটি ফুঁড়ে বেরোবে হার!
অনেক সমস্যার মধ্যেও যাওয়া হলো সেই বাবার কাছে। ভক্তি করে ডাকা হলো বাবাকে। বেশি না!আবার অনেকের কাছে বেশি! তিনি এ কাজের জন্য দাবি রাখলেন হাজার দুয়েকের মত টাকা। আর বললেন এতে কাজ হয়ে যাবে কোনোমতে, কিন্তু একজন তুলা রাশির জাতক লাগবে। তবে সে তুলা রাশির জাতক নাকি সরল,সোজা হাবা-গোবা হলে ভাল হয়!
একে তো বিয়ের পর দিন,তার উপর নতুন বউয়ের হার,মান-সম্মান ছাড়াও গ্রাম্য কুসংস্কার ছাপিয়ে যাবে এ ঘটনা,সে সব টানাপোড়ন এর ভয়েই বাবার কথা মত কাজ চলতে লাগল।আর ধরে আনা হলো এক তুলা রাশির জাতক,সেই সাথে পিতল-কাসার বাটিও জোগাড় করা হলো। শেষবার এর মত বাবা সাবধান করে দিলেন আর বললেন যে, উনার উপর সবার বিশ্বাস রাখতে হবে,বিশ্বাস হারালে চলবে না,আর হার পাওয়া! বিশ্বাস এর সামান্যতম ঘাটতি হলেই সেতো হবে তখন গুঁড়ে বালি। বাবার কথা মত মেয়েরা খোপা খুলল আর পুরুষেরা গা ছেড়ে দাঁড়াল।এবার মন্ত্র পড়ে ফুঁ দিতেই বাটি যেন চলতে শুরু করল।৭০ কেজি ওজন এর আস্ত মানুষটিকে টেনে নিয়ে যেতে শুরু করল বাটি! বাকিরা তো হতবাক। সেই সাথে আপনারাও তো বিস্ময়ের চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন নিশ্চয়! আর ভাবছেন এটা আবার কেমন আঁষাঢ়ে গল্প? কখনো হয় নাকি এমন? জ্বি হয়,হয়ে আসছে যুগযুগ ধরে।একটু ধৈর্য ধরে গল্পের শেষ অব্দি পড়ুন তবেই বুঝে যাবেন এর সব রহস্য!
আমাদের দেশের কিছু অঞ্চলে এ গল্পের দুই ধরণের শেষ থাকে। এক হলো মন্ত্র পড়া বাটি নিয়ে তার ধারক এমন এক জায়গায় গিয়ে থামে সেখান থেকে মাটি খুঁড়ে পাওয়া যায় কাঙ্ক্ষিত বস্তু। আর দ্বিতীয় হচ্ছে তিনি যদি ব্যর্থ হন তো বাবা সর্বদাই বিশ্বাস এর ঘাপলা বলে চালিয়ে দেন। বিষয়টা কিছুটা এমন যেন,অন্তত সাপ না মরুক,লাঠি তো ভাঙল না।কিন্তু কথা হচ্ছে আজও কিছু কিছু গ্রামে প্রচলিত আছে এই বাটি চালান প্রথা।যার কিছুটা নয়,পুরোটাই ভাঁওতাবাজি আর প্রবঞ্চনা। এখন হয়ত পাঠকেরা এটাই ভাবছেন,কিভাবে এগিয়ে যায় বাটি! আর কিভাবেই বা মিলে সঠিক স্থানে কাঙ্ক্ষিত বস্তু? মনে রাখবেন সর্বপ্রথমেই একে তো বিষয়টি সম্পূর্ণ ব্যক্তি নির্ভর, তার সঙ্গে যুক্ত হয় এক চিমটি হ্যালুসিনেশন। সব