today visitors: 5073432

রাজশাহী অঞ্চলে টানা বর্ষণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি, মারা গেলো কৃষক

রহিদুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহীঃ

রাজশাহী অঞ্চলে
টানা বর্ষণে ধান, শবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও অনেক পুকুরের পাড় ধুসে পড়ে ও প্লাবিত হয়ে মাছ চাষিদের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়াও বৃষ্টির পানিতে জলবদ্ধতায় শতশত পরিবার পানি বন্ধি হয়ে পড়েছেন বলে জানাগেছে।

এদিকে, রাজশাহীতে সপ্তাহ ধরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হলেও গত দুইনের ভারী বর্ষণে উপজেলাগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ভারী বর্ষণের কারনে সবজি চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে।
ফলে ব্যাপক লোকসান গুনতে হবে চাষিদের।

জানাগেছে,জেলার দুর্গাপুর উপজেলায় চুনিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক মাহাবুর রহমানের বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বৃষ্টিতে। এতে তিনি হতাশায় ছিলেন। শেষ পযন্ত তিনি স্টক করে মারা গেছেন।

এদিকে রাজশাহীতে গত বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত রেকট করা হয়েছে।
এতে করে আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে ও সবজিতে পচন ধরেছে।
দুর্গাপুর উপজেলার সিংগা
গ্রামের আশরাফ আলী বলেন, অনেক কষ্ট করে দেড় বিঘা জমিতে ধার রোপন করেছিলাম। গত দুই দিনের বৃষ্টিতে পুরো ধর তলিয়ে গেছে। আমারমত শত শত কৃষকের ধান তলিয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পানি স্থির হয়ে রয়েছে। ফলে ধানগুলো পচন ধরেছে।
রেইপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফ বলেন, ১৫ কাঠা জমিতে কলা লাগিয়েছিলাম কলার গাছ হয়েছিলো বেশ সুন্দর ভারী বর্ষণে কলার বাগানে হাটু পানি জমে গেছে। গাছ গুলো লাল হতে শুরু করেছে। যদি দুএকদিনের মধ্যে পানি না নামে তাহলে সব গাছ মরে যাবে। উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামের মাসুম, মনতাজ, নবীসহ অন্তত ২০জন চাষির ভারী বর্ষণে ফুলকপি পানিতে তলিয়ে গেছে।
ওই গ্রামের চাষি আনিছুর রহমান জানান, তার দেড় বিঘা জমিতে ফুলকপি ছিলো, সবে মাত্র বাজারযাত শুরু করেছিলেন আর এমন ভারী বষণে তার সাব শপ্ন ধূলিশাত হয়ে গেলো। এদিকে একই গ্রামের মাহাবুর রহমান প্রায় তিন বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছিলেন। এমন ভারী বর্ষণে তার জমিতেও পানি ওঠে যায়। তিনি বৃহস্পতিবার জমিতে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখে বাড়ি ফেরার পথে স্টক করে মারা যান। এ উপজেলায় অন্তত কয়েক কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তবে কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে তা উপজেলা কৃষি বিভাগ কিছুই জানাতে পারেননি।
ভারী বর্ষণে বিশেষ করে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে উপজেলার নওপাড়া, মাড়িয়া, কিসমত গণকৈড়, দেলূয়াবাড়ী, পানানগর,ঝালুকা ও জয়নগরসহ সকল ইউনিয়ন এলাকায়। ওইসব এলাকায় ফসল তলিয়ে যাওয়াসহ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। কাঁচা ঘর বাড়ির দেয়াল পড়ে গেছে। গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অনেক রাস্তা-ঘাট ডুবে গেছে। এদিকে ভারী বর্ষণের ফলে দুর্গাপুর সদর দুর্গাপুর কলেজ বাইপাস সড়ক তলিয়ে যাওয়া পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে ওই মহল্লার প্রায় ৩০টি পরিবার। পৌরসভা হতে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্তা না করায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। উপজেলার সিংগা গ্রামের মৎস্য চাষি তছলেম উদ্দিন জানান, ভারী বর্ষণের ফলে তার কয়েকটি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।

উপজেলা মৎস্য বিভাগ হতে জানা গেছে, পুরো উপজেলায় পুকুরের সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার ৯শত ১০টি। গত দুই দিন থেকে ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে ঢলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় ১হাজার ওর বেশি পুকুর তলিয়ে যায়। এসব পুকুরে বিভিন্ন জাতের বড় মাছ ও পোনা ছিল। এতে টাকার অঙ্কে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি টাকা।

এবিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, প্রায় কয়েক বছর ধরে এ অঞ্চলে তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মৎস্য চাষিদের মাছ চাষে হিমসিম খেতে হচ্ছিলো। কিছু পুকুর প্লাবিত হলেও অনেক মাছ চাষিরা এ বর্ষণে খুশি। এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *