বীরগঞ্জ (দিনাজপুর)প্রতিনিধি:
সবুজ পাতা ছাপিয়ে সোনালি রঙের ফুলে সেজেছে সোনালুগাছ। প্রতিটি গাছের গা থেকে যেন হলুদ ঝরনা নেমে এসেছে। সোনালু ফুল প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে অপরূপ ডানা মেলে সেজেছে নতুন রূপে। যার হলুদ উজ্জ্বল রূপ পথগুলোকে শোভিত করেছে। তীব্র গরম আর কাঠফাটা রোদে হলুদের অপরূপ দৃশ্য যেন ক্লান্ত পথিকের সব ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়। হলুদ ফুলের চোখ-জুড়ানো অপরূপ সৌন্দর্যের সমাহার, যা সবার মনে দাগ কেটে যায়।
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় পথেঘাটে, গ্রামে-গঞ্জে, গাছে গাছে ঝুলছে থোকায় থোকায় সোনালু ফুল। যার অপরূপ সৌন্দর্য আলোকিত করছে চারপাশ।
এই গাছটি গ্রীষ্মের প্রকৃতির সৌন্দর্যের একটি বড় অংশ দখল করে রাখে। এমনকি বসন্তেও এর ফুলেল রূপ দেখা যায় না। সমস্ত বসন্ত হলো এর প্রস্তুতি কাল। পুরোটা বসন্ত প্রস্তুতি নিয়ে বৈশাখের শুরুতে, ইংরেজি এপ্রিল/মে মাসের দিকে এই হলুদ সোনালু ফুল ফোটা শুরু হয়। এর হালকা মিষ্টি সুবাস প্রজাপতি, মৌমাছি, পাখিদেরও কাছে ডেকে আনে।
বাংলাদেশ, ভারতসহ পূর্ব এশিয়ায় এই গাছটির দেখা মেলে। সৌন্দর্যবর্ধন ছাড়াও সোনালুগাছের পাতা ও বাকল বিভিন্ন ভেষজ গুণসম্পন্ন। সোনালুর ফল লাঠির মতো গোল ও আকারে বেশ লম্বা হয়। তা ছাড়া ফুল, ফল ও পাতা বানরের খুব প্রিয়। গাছটি ১০ থেকে ২০ মিটার উচ্চতার হয়। এ ফুল দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি আছে বাহারি নামও। পরিচিত নামগুলো হলো সোনালু, সোনাইল, সোঁদাল, বান্দরলাঠি ইত্যাদি।
একসময় বীরগঞ্জ উপজেলার পথে-প্রান্তরে, গ্রামে-গঞ্জে অসংখ্য সোনালুগাছ চোখে পড়ত। কয়েক দশকের ব্যবধানে তার সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। উপজেলার ৫ নম্বর সুজালপুর, ১১ নম্বর মরিচাসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, পথের ধারে, ঝোপঝাড়ে এখনো কিছু সোনালুর গাছ চোখে পড়ে। এ গাছগুলো প্রাকৃতিকভাবেই জন্ম হয়। বেড়ে ওঠার সময় তেমন চোখে না পড়লেও ফুল ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই সবার দৃষ্টি আকর্ষিত হয়, প্রশান্তিতে হৃদয়-মন ও চোখ জুড়িয়ে যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, সোনালুগাছগুলো পরিবেশের জন্য উপকারী ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি এর ফুল চমৎকার ও দৃষ্টিনন্দন হওয়ায় শোভাবর্ধনকারী হিসেবে পরিচিত। এই গাছ থেকে ভালো মানের কাঠও পাওয়া যায়।