আশিক হাসান সীমান্ত, রাজবাড়ীঃ
রাজবাড়ীতে বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেটের স্বাক্ষর নকল করে ভুয়া রায়ের কপি তৈরি, মিথ্যা কাবিন নামা, সাজানো যৌতুকের মামলা ও জমি সংক্রান্ত মামলার রায় পক্ষে এনে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অবসর প্রাপ্ত এক শিক্ষকের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে রাজবাড়ী বার এ্যাসোসিয়েশন এর এ্যাডভোকেট মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ ও তার সহকারি মুহরি মিলনের বিরুদ্ধে ।
১২ই মে (রবিবার) দুপুরে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের মৃত হেরমত আলী মোল্লার ছেলে ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোঃ আব্দুল জলিল। অভিযোগে অপরাধীদের সাজার পাশাপাশি অবসরের খোয়া যাওয়া টাকা ফেরত ও বিচারের দাবী জানান। রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের হেল্প ডেস্ক বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয় রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের কার্যালয়, রাজবাড়ী জেলা বার এ্যাসোসিয়েশন, এনএসআই , ডিজিএফ আই, রাজবাড়ী প্রেস্কক্লাব ও ফরিদপুর র্যাব-১০ এর কার্যালয় ।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোঃ আব্দুল জলিল অভিযোগে উল্লেখ করেন, ৭-৮ মাস পূর্বে আমার আপন ছোট ভাই মোঃ মেহেরুজ্জামান এর সাথে আমার জমি জমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়া মনোদন্ড হইলে আমার ভাই মোঃ মেহেরুজ্জামান আমার বিরুদ্ধে রাজবাড়ী বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলা চলমান কালীন আমার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু হওয়ায় আমি পুলিশ কর্তৃক আটক হই। অতঃপর আমার পরিবারের লোকজন আমাকে ঢাকা হইকোর্ট হইতে জামিনের ব্যবস্থা করে।
পরবর্তীতে আমি জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর আমার প্রতিবেশি মৃত ইসমাইল মোল্লার ছেলে মিজানুর রহমানের সাথে আলাপ করে রাজবাড়ীতে এসে এ্যাডভোকেট মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ ও তার সহকারি মুহরি মিলনের সাথে আলাপ করলে আমার সমস্যার কথা বিস্তারিত শুনিয়া আমার মামলা হইতে আমাকে সম্পন্ন রুপে অব্যাহতি করাসহ আমার ভাইয়ের সাথে যে জমি নিয়া ঝামেলা উক্ত ৭ একর জমি সম্পন্নই আমার নামে লিখিত রায় করাইয়া দিবে মর্মে আশ্বস্ত করে এবং আমার নিকট হইতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজের প্রয়োজনের কথা বলিয়া পর্যায়ক্রমে আমার প্রতিবেশি মিজানুর রহমানের মাধ্যমে সর্ব মোট পচিশ লক্ষ টাকা গ্রহন করে। অতঃপর ১নং ও ২নং বিবাদী আমাকে আমার উক্ত জমির মামলার একটি রায় ঘোষনার কাগজ প্রদান করে। পরবর্তীতে আমি আমার উক্ত মামলার রায় ঘোষনার কাগজটি পর্যালোচনা করাসহ যাচাই বাচাই করিয়া জানিতে পারি যে, ১ ও ২নং বিবাদী আমাকে আমার মামলার রায় ঘোষনার যে কাগজটি প্রদান করিয়াছে, উক্ত কাগজে বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেটের স্বাক্ষর নকল এবং কাগজটি সম্পন্ন রুপে ভুয়া । পরবর্তীতে আমি উক্ত কাগজটি নিয়া ১নং বিবাদীর নিকট গেলে ১নং বিবাদী আমাকে উক্ত কাগজ সঠিক বলিয়া জানায় এবং আমার ভাইকে উক্ত মামলায় নিজে থেকে আপোষ করাইতে বাধ্য করানোর জন্য ১নং বিবাদী শারমিন আক্তার জুই নামক একটি মেয়েকে দশ লক্ষ টাকা কাবিন মূলে একটি কাবিননামা তৈরী করে আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা যৌতুকের মামলা দায়ের করে।
অতঃপর ১ ও ২নং বিবাদী আমাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের অজুহাত দেখাইয়া কালক্ষেপন করিতে থাকে। দীর্ঘদিন অতিক্রম হওয়ার পরেও ১ ও ২নং বিবাদী আমাকে আমার উক্ত মামলা হইতে অব্যাহতি না করাইয়া আমাকে ঘুরাইতে থাকিলে আমি নিজে কোর্টে উপস্থিত হইয়া আমার মামলার বিষয়ে খোঁজ খবর করিয়া জানিতে পারি যে, আমার উক্ত মামলাটি অদ্যবদি ঢাকা হাইকোর্টে চলমান রহিয়াছে। পরবর্তীতে আমি একাধীকবার ১ ও ২নং বিবাদীর নিকট আমার প্রদেয় টাকা ফেরত চাইলে বিবাদীদ্বয় আমাকে আমার টাকা ফেরত না দিয়া উল্টা আমাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি প্রদান করিয়া আসিতেছে। ‘