এইচ এম গোলাম কিবরিয়া রাকিব, কুমিল্লাঃ
কুমিল্লার চার উপজেলায় বজ্রপাতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকেলে পৃথক সময়ে জেলার চান্দিনা, সদর দক্ষিণ, বুড়িচং ও দেবিদ্বার উপজেলায় এ চারজনের মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে।
বজ্রপাতে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- চান্দিনার বরকইট ইউনিয়নের কিছমত-শ্রীমন্তপুর গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে দৌলতুর রহমান (৪৭), সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ার ইউনিয়নের উত্তর সূর্যনগর গ্রামের আতাউর ইসলাম (৫০), দেবিদ্বার উপজেলার ধামতী গ্রামের মোখলেছুর রহমান (৫৮) এবং বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের পাচোরা গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার পুত্র আলম হোসেন।
সংশ্লিষ্ট থানার ওসি ও স্থানীয় সূত্রে চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
চান্দিনায় বজ্রপাতে একজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমাকে ফোন করে একজনের মৃত্যুর সংবাদ জানিয়েছেন। জানতে পেরেছি, তিনি কৃষি জমিতে কাজ করছিলেন।
কিছমত-শ্রীমন্তপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মন্দির মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে ধান ক্ষেতে ওষুধ ছিটানোর সময় হঠাৎ বৃষ্টি নামলে ওষুধ ছিটানোর মেশিন জমির কাছে রেখে বাড়িতে চলে আসেন দৌলতুর রহমান। কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি কমলে ওই মেশিনটি আনতে গেলে তিনি বজ্রপাতে আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে বুড়িচংয়ে বজ্রপাতে একজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার আবুল হাসানাত।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে আলম হোসেন জমিতে ধান কাটছিলেন। এসময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
দেবিদ্বার থানার ওসি মোঃ নয়ন মিয়া বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি বজ্রপাতে একজন মারা গেছে। তবে বৃষ্টির কারণে ঘটনাস্থলে যেতে পারিনি। তবে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোখলেছুর রহমান বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে তার বাড়ির পাশে খড় শুকাচ্ছিলেন। এসময় হঠাৎ গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয় এবং একটু পরেই বজ্রপাতে তিনি মারা যান। নিহত মোখলেছ ধামতী গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার পুত্র।
দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা বলেন, বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি তাৎক্ষনিক নিহতের বাড়িতে লোকজন পাঠাই। তার পরিবারকে নগদ ২০ হাজার টাকা সহযোগিতা করা হয়েছে।
অপরদিকে, সদর দক্ষিণে মারা যাওয়া আতাউর ইসলামের স্বজনরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে বৃষ্টি শুরু হওয়ার পূর্বে তিনি ফসলের জমি দেখার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু জমিতে যাওয়ার পূর্বে রাস্তাতেই বজ্রপাতে তিনি মারা যান। পরে স্থানীয়রা তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যায়। আতিকুল ইসলাম সূর্যনগর গ্রামের গ্রামের আক্কাস মিয়ার পুত্র।
এদিকে প্রচ- দাবদাহের পর বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। কুমিল্লা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে হাকলা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হলেও আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার এলাকায় সামান্যবৃষ্টিপাত হয়েছে-যা ১মিলিমিটারেরও কম। এদিন কুমিল্লায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৫.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।