ক্রাইম রিপোর্টার জয়:
প্রতিদিন মসজিদে নামাজ পড়ছেন মুসল্লিরা,কিন্তু কেউই বলতে পারছেন না মসজিদের ইতিহাস।কত শত বছর আগে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে স্থানীয় কোনো বাসিন্দা জানে না। মসজিদের সামনে এক খন্ড পাথরে ফারসি ভাষায় কিছু লেখাও রয়েছে। সেই লেখা কেউই পড়তে পারছেন না।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার উত্তর বাঞ্চানগর পাইকবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই অবস্থিত ইতিহাস না জানা ঐতিহাসিক মসজিদটি। এটি হাবিব উল্যাহ ভূঁইয়া বাড়ি জামে মসজিদ নামে পরিচিত। তবে ইতিহাস না জানলেও হাবিব উল্যাহ ভূঁইয়া নামের একজন মসজিদটি নির্মাণ করেছেন বলে স্থানীয়দের ধারণা।
মসজিদটি ঘুরে দেখা গেছে,তিন গম্বুজবিশিষ্ট পুরোনো মসজিদ। গম্বুজের চূড়ায় ও সামনের অংশে পাঁচটি কলস রয়েছে। মসজিদের দেওয়ালের পুরুত্ব প্রায় এক মিটার। পুরো দেওয়াল জুড়ে ফুলের কারুকাজও রয়েছে।
মসজিদের ভেতরে ইমামসহ প্রায় ৪১ জন একসঙ্গে নামজ পড়তে পারেন। মুসল্লিরা দুই কাতারে দাঁড়ালেও অতীতে তিন কাতার হতো। ঐতিহ্যবাহী এ মসজিদটি থেকে বের হতে তিনটি দরজা রয়েছে। এ ছাড়া মসজিদে দুটি জানালা রয়েছে।
স্থাপত্যশৈলীর অন্যতম নিদর্শন গুনাইঘর সাত গম্বুজ মসজিদ
স্থানীয়রা জানান, এলাকার ও মসজিদের নাম হয়েছে হাবিব উল্লাহ ভূঁইয়ার নামে। তবে তার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। কবর কোথায় আছে তাও কেউ জানে না। তবে এলাকাটি একসময় বাঞ্চানগর নদী ছিল। পরে চর তৈরি হলে জমিদাররা এ অঞ্চল শাসন করে। তখন হয়তো মসজিদটি নির্মাণ হতে পারে।
স্থানীয় পাইকবাড়ির প্রবীণ বাসিন্দা ছৈয়দ আহমেদ বলেন, ‘কত বছর আগে মসজিদটি নির্মাণ হয়েছে, আমরা কেউই জানি না। আমার বাবা-দাদারাও জানতেন না। তবে হাবিব উল্যাহ ভূঁইয়া নামে এক ব্যক্তি মসজিদটি নির্মাণ করেছেন বলে জেনেছি। পাশের বাড়ির নামও তার নামে। জমির দলিলপত্রেও তার নাম পাওয়া গেছে। তার নামেই মসজিদটি হাবিব উল্যা ভূঁইয়া বাড়ি জামে মসজিদ হিসেবেই পরিচিত।’
মসজিদের মুসল্লি ও স্থানীয় বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, ‘মসজিদের ভেতরে গরমকালে ঠান্ডা ও শীতের সময় গরম লাগে। মসজিদটি চুন সুরকির ঢালাই দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদের প্রতিটি ছাদ, গম্বুজসহ প্রতিটি দেওয়ালে পুরুত্ব অনেক বেশি।’
হাবিব উল্যাহ ভূঁইয়া বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. মমিন উল্যা বলেন, ‘প্রায় ১১ বছর ধরে আমি এই মসজিদে ইমামতি করছি। কেউ মসজিদের সঠিক ইতিহাস জানাতে পারেননি। কয়েক বছর আগে মসজিদের সঙ্গে সংযুক্ত করে সামনে সম্প্রসারিত ভবন হয়েছে। ইতিহাস বিজড়িত মসজিদটি অক্ষত রয়েছে। কয়েক বছর পর পর শুধু রঙ করা হয়।’
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু তাহের সুমন পাটওয়ারী বলেন, ‘মসজিদটি বয়স সঠিক জানা নেই কারোর। ৬০০ বছরের পুরনো মসজিদ বলছে এলাকার মুরব্বিরা। আমরাও তেমনটাই জানি।’
লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. আবু সিনহা মো. তারেক বলেন, ‘মসজিদের নেমপ্লেটে ফারসি ভাষায় যে সাল লেখা আছে সেই অনুযায়ী সময়টা মুঘল আমলের শেষের দিকের হবে। তবে নির্দিষ্ট করে সময় বলতে পারছি না কেউ!