মোহাম্মদ আসাদ ।।
জামালপুরের বকশীগঞ্জ বাট্রাজোর পলাশতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খন্দকার আতাবুজ্জামান হেলালের অপসারণ চেয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে ।
নানা অনিয়ম দুর্নীতি ,স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারী ) বিকেলে বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে উপজেলা ও কিয়ামত উল্লাহ কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, খন্দকার আতাবুজ্জামান হেলাল সরকারী চাকুরীজীবি হয়েও সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ গ্রহন করে প্রভাব বিস্তার। অদৃশ্য ছত্রছায়ায় গত ১০ বৎসর যাবৎ তিনি বিদ্যালয়ে না গিয়েও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেখিয়ে বেতন ভাতা উত্তোলন করেছেন, । প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নাম ভাঙ্গিয়ে শিক্ষকদের কাছে মোটা অংকের চাঁদা আদায়। বাট্টাজোড় পলাশতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সরকারী গাছ কেটে বিক্রয় করে টাকা আত্মসাৎ। সরকারী চাকুরীজীবি হয়েও দাদন ব্যবসার সাথে জড়িত। বর্তমান/ সাবেক প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার যোগসাজসে বিভিন্ন স্কুলের নামে সরকারী বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ । শিক্ষক নেতা হওয়ায় সাধারন শিক্ষকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া। গত ১০ বৎসরে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে বনভোজনের নামে শিক্ষকদের কাছে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার কথার অবাধ্য হওয়ায় কমপক্ষে ২০ জন শিক্ষককে লাঞ্চিত করেছেন। বকশীগঞ্জ থানায় তাহার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থী কম থাকলেও বেশি শিক্ষার্থী দেখিয়ে সরকারী বই উত্তোলনের পর খোলা বাজারে বিক্রি।
তার এহেন কর্মকান্ডে বকশীগঞ্জ উপজেলার সকল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক/ শিক্ষিকা, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও সুধী সমাজের লোকজন দারুনভাবে বিব্রত। ইতোপূর্বে দুর্নীতিবাজ শিক্ষক খন্দকার আতাবুজ্জামান হেলাল এর বিরুদ্ধে মানবন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলে তাহার বদলী ও অপসারণ দাবী করা হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাহার বদলী ও অপসারণ না হলে লাগাতার কর্মসূচী ঘোষনা দিয়েছেন সূধীজন, অভিভাবকগন ও বকশীগঞ্জের আপামর জনতা।
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক খন্দকার আতাবুজ্জামান হেলালের মুঠোফোনে যোগাযোগ হলে তিনি বলেন,এ বিষয়ে আমি অবগত নয় ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অহনা জিন্না বলেন, স্মারকলিপি পেয়েছি। বিষয়গুলো যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে, বুধবার ( ৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে বকশীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ ও সরকারি কিয়ামত উল্লাহ কলেজ ছাত্রলীগ যৌথভাবে তার অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের করে।
বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে। মিছিলে এই মুহুর্তে প্রয়োজন হেলালের অপসারণ, হেলালের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’সহ নানা স্লোগান দেয় নেতাকর্মীরা। মিছিলটি দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম তালুকদার জুমান,ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান লাল, উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক রাজন মিয়া,কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফরহাদ রেজা, পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক সাদ আহমেদ নয়ন,কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়ক প্রান্ত ও রাশেদুজ্জামান রনি প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সহকারী শিক্ষক আতাবুজ্জামান হেলালের অপসারণ দাবি করেন।
ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম তালুকদার জুমান তার বক্তব্যে বলেন, পলাশতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খন্দকার আতাবুজ্জামান হেলাল শিক্ষক জাতির কলঙ্ক। তিনি দুর্নীতিবাজ,চরিত্রহীন ও একজন চিহ্নিত দালাল। তার কারনে এই উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষার মান ধ্বংস হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে অপসারণ না করা হলে লাগাতার কর্মসূচী ঘোষনা করা হবে।