স্টাফ রিপোর্টার রাজীব হাওলাদার: ভারতের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রামমন্দির উদ্বোধন সে অঞ্চলের সংখ্যালঘুদের হুমকির মুখে ফেলে দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। মঙ্গলবার ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় অবস্থিত শতাব্দীর প্রাচীন বাবরি মসজিদ ভেঙে একই স্থানে রামমন্দির প্রতিষ্ঠার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি। রেজাউল করীম বলেন, অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভেঙে রামমন্দির নির্মাণের যে পাঁয়তারা চলছে, তা পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে মন্দির উদ্বোধন করে বিশ্বব্যাপী অশান্তির দাবানল জ্বালিয়ে দিয়েছে। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে শাসকেরা সামপ্রদায়িকতার পক্ষ নেয়। শাসকরা রাম ও রহিমের মধ্যে যে পার্থক্য সৃষ্টি করেছে, আমরা তা ঘোচাতে সর্বদা সচেষ্ট থাকবো। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রামমন্দির উদ্বোধন সে অঞ্চলের সংখ্যালঘুদের হুমকির মুখে ফেলে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদি সরকার এবার পবিত্র বাবরি মসজিদকে ভেঙে রামমন্দির উদ্বোধন করেছেন! ভারতের সাধারণ নির্বাচনের আগে বিতর্কিত রামমন্দিরের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার অনানুষ্ঠানিক প্রচার হিসেবেই দেখছি আমরা। আমরা এহেন সামপ্রদায়িক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাই।নরেন্দ্র মোদি সরকারের এমন কর্মকাণ্ডে মুসলিম বিশ্ব হৃদয়ে আঘাত পেয়েছে এবং কলিজায় রক্তক্ষরণ হয়েছে। মসজিদের জায়গায় মন্দির নির্মাণ মুসলমানরা কখনো মেনে নেবে না। নরেন্দ্র মোদি সরকারকে এহেন কর্মকাণ্ড থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।চরমোনাই পীর বলেন, মুসলিম জাতিসত্তার ওপর আঘাত হেনে ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ভেঙে এর স্থলে রামমন্দির স্থাপন করে ভারত সরকার সামপ্রদায়িক সংকীর্ণতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য নরেন্দ্র মোদি সরকার মুসলমানদের এ ঐতিহাসিক স্থাপনাকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে সামপ্রদায়িকতার এক ন্যক্কারজনক নজির স্থাপন করেছে। এহেন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। তিনি আরও বলেন, বাবরি মসজিদস্থলে কোনো মন্দির ছিল না, তা ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত। বাবরি মসজিদের নিচে ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বারবার খুঁড়েও কোনো মন্দিরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। কেবলমাত্র হিংসার বশবর্তী হয়ে মুসলমানদের প্রাণের চেয়ে প্রিয় আল্লাহর ঘর মসজিদকে ভেঙে মন্দির নির্মাণের উদ্বোধন করে সামপ্রদায়িকতার পরিচয় দিয়েছে।
ইসলামী আন্দোলনের আমীর বলেন, বহুবার খোঁড়াখুঁড়ি চালানোর পরও কোনো প্রত্নতাত্ত্বিকই মন্দির খুঁজে পাননি। এমনকি সর্বশেষ ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ‘দ্য আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এআইএ)’র প্রত্নতাত্ত্বিক খননেও কোনো মন্দিরের অস্তিত্ব মেলেনি। পনেরো শতকের ঐতিহাসিক স্থাপনা বাবরি মসজিদ ১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর গুঁড়িয়ে দেয় বর্তমান ক্ষমতাসীন বিজেপি, শিবসেনা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উগ্রপন্থিরা। বাবরি শহীদ করে তদস্থলে মন্দির উদ্বোধন করে উগ্রবাদী নরেন্দ্র মোদি সরকার ইতিহাসে কলঙ্কিত হয়ে থাকবেন। মুসলমানরা ভারত সাড়ে সাতশত বছর শাসন করেছেন। যদি মুসলমানরা ইচ্ছে করতেন ভারত উপমহাদেশ হিন্দু শূন্য করতে পারতেন। কিন্তু মুসলমান শাসকগণ তা করেননি। এ ইতিহাস ভারত সরকারকে ভুলে গেলে চলবে না। প্রথম বুলেটিন