আরমান খান
যশোর জেলা প্রতিনিধি
নির্বাচনে নয়ছয়ের দিন শেষ হতে যাচ্ছে। ইচ্ছেমতো আর প্রার্থী হওয়া যাবে না। আগামী ৭ জানুয়ারি আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তেমনটিই হচ্ছে। স্বতন্ত্রের মোড়কে প্রার্থী হওয়া অনেকেরই মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাছাইয়ে রিটার্নিং অফিসার তাদের অবৈধ ঘোষণা করেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের অনেক হেভিওয়েট নেতা রয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ ও চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম হাবিব। যারা দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
কেবল স্বতন্ত্র না; বিভিন্ন দলের আরও নয় প্রার্থীর মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। যশোরের ছয়টি আসনে ১৮ জনের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছে জেলা রিটার্নিং অফিসার। রোববার বাছাই শেষে রিটার্নিং অফিসার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার এসব প্রার্থীর মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন।
অবৈধ হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন যশোর-১ (শার্শা) আসনে ৩ জন, যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে ২ জন, যশোর-৩ (সদর) আসনে ৬ জন, যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনে ১ জন, যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনে ৪ জন ও যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে ২ জন।
যশোর-১ আসনে অবৈধ হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহরাব হোসেন, জাতীয় পার্টির আক্তারুজ্জামান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজমুল হাসান। জমা দেয়া এক শতাংশ ভোটারের তথ্য সঠিক না থাকায় সোহরাব হোসেন, সিআইবি ঋণখেলাপীর জামিনদার হওয়ায় জাতীয় পার্টির আক্তারুজ্জামান ও এক শতাংশ ভোটারের তথ্য সঠিক না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজমুল হাসানের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
যশোর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম হাবিবুর রহমান ও বিএনএফের শামছুল হকের মনোনয়নপত্র অবৈধ বিবেচিত হয়েছে। এক শতাংশ ভোটারের তথ্য সঠিক না থাকায় এসএম হাবিবুর রহমান এবং টিন নম্বর না থাকা ও রিটার্ন দাখিল না করায় শামছুল হকের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
যশোর-৩ আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মোহাম্মদ তৌহিদুজ্জামান, তৃণমূল বিএনপির কামরুজ্জামান, জাকের পার্টির মহিদুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহিত কুমার নাথ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের শেখ নুরুজ্জামান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের।
হলফনামা ও আয়করের তথ্য গরমিলের কারণে মোহাম্মদ তৌহিদুজ্জামান, কামরুজ্জামান ও মহিদুল ইসলাম, এক শতাংশ ভোটারের তথ্য সঠিক না থাকায় মোহিত কুমার নাথ, বিদ্যুৎ বিল খেলাপী হওয়ায় শেখ নুরুজ্জামান ও এক শতাংশ ভোটারের তথ্য সঠিক না থাকায় শহিদুল ইসলাম মিলনের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
যশোর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সন্তোষ কুমার অধিকারীর মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এক শতাংশ ভোটারের তথ্য সঠিক না পাওয়ায় তার মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
যশোর-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল হাসান বারী, জাকের পার্টির হাবিবুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী হুমায়ুন সুলতান ও আমজাদ হোসেন লাভলুর মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এক শতাংশ ভোটারের তথ্য সঠিক না পাওয়ায় এই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল হাসান বারী, হুমায়ুন সুলতান ও আমজাদ হোসেন লাভলু এবং সমর্থনকারী অন্য নির্বাচনী আসনের ভোটার হওয়ায় জাকের পার্টির হাবিবুর রহমানের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
যশোর-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হুসাইন মোহাম্মদ ইসলাম ও আজিজুল ইসলামের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এক শতাংশ ভোটারের তথ্য সঠিক না পাওয়ায় হুসাইন মোহাম্মদ ইসলাম ও আয়কর ফরম ১০ বি জমা না দেয়ায় আজিজুল ইসলামের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার আবরাউল হাছান মজুমদার।
তবে, অবৈধ ঘোষিত প্রার্থীরা আজ দুপুরের পর রিটার্নিং অফিসারের দপ্তর থেকে ঘোষণার সার্টিফাইড কপি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন। ইতিমধ্যে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথসহ অনেকেই আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।
Leave a Reply