নূরুন নবী : নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করায়
রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীকে কারণ দর্শনোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। রোববার (৩ ডিসেম্বর) রাজশাহী-১ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ (দ্বিতীয় আদালত) মো. আবু সাঈদ তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।
এর আগের দিন শনিবার বিকালে ওমর ফারুক চৌধুরী তানোর পৌরসভার গোকুল ও বুরুজ এলাকায় সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচির উপকারভোগীদের নিয়ে সমাবেশ করেন। এসব সমাবেশ থেকে তিনি আসন্ন নির্বাচনে সবাইকে নৌকার পক্ষে থাকার আহ্বান জানান।
তফসিল ঘোষণার পর প্রতীক বরাদ্দের আগে এ ধরনের সমাবেশ নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। একই কারণে নির্বাচন কমিশনে নির্দেশনায় গত ২২ নভেম্বর তাকে শতর্ক করে চিঠি দেন রিটার্নিং অফিসার।
ওমর ফারুক চৌধুরীকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি জানতে পেরেছে যে, ওমর ফারুক চৌধুরী প্রতীক বরাদ্দের আগেই বিধি লঙ্ঘন করে তানোরে দুটি সভা করে নৌকায় ভোট চান। এটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা-২০০৮ এর বিধি ৬ (ঘ) বিধি ১২ লঙ্ঘন। এটি নির্বাচন পূর্ব অনিয়ম হিসেবে গণ্য হয়েছে।
ওমর ফারুক চৌধুরী কেন আইন লঙ্ঘন করে এ ধরনের সভা করেছেন তা আগামী মঙ্গলবার (০৫ ডিসেম্বর) বেলা ৩টায় স্বশীরের উপস্থিত হয়ে অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে রাজশাহী-১ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজের (দ্বিতীয় আদালত) কার্যালয়ে লিখিত ব্যাখা প্রদানের জন্য তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই চিঠিতে।
ওমর ফারুক চৌধুরী ২০০৮ সাল থেকে টানা তিনবার এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য রয়েছেন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। এর আগেও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আচরণবিধি ভেঙে তানোর ও গোদাগাড়ীতে উপকারভোগীদের নিয়ে বেশ কয়েকটি সভা করে নৌকায় ভোট চান।
এসব সমাবেশ দৃষ্টিতে পড়লে সংশ্লিষ্ট উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি উল্লেখ করে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দেন। এর ভিত্তিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনে (ইসি) প্রতিবেদন দেন। ইসি এই সংসদ সদস্যকে সতর্ক করার জন্য একটি চিঠি দিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা গত ২২ নভেম্বর তাকে সতর্ক করে চিঠি দেন। এর এক সপ্তাহ পর তিনি আবার আচরণবিধি ভেঙে সভা করেন।
এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, কারণ দর্শনোর নোটিশ সঙ্গে কথা বলা যায়নি। আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন। সেদিন তিনি বলেছিলেন, এক শ্রেণির সাংবাদিকেরা তাকে সব সময় আলোচনায় রাখতে পছন্দ করেন।
এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, এখন ভোটের সময়। আমি ভোটে দাঁড়িয়েছি। এখন ঘরে বসে থাকার সময় নয়। দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করতে হচ্ছে। জনসভা তো কোথাও করিনি। আচরনবিধিও ভঙ্গ করিনি। কারণ দর্শনোর চিঠির উপযুক্ত জাবাব দেবো।
Leave a Reply