মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট (ম্যাটস) ও প্যারামেডিকেল এক নয় – এইচ.এম.তামীম আহাম্মেদ,

ডিএমএফ চিকিৎসক, কুমিল্লা।

ম্যাটস পড়াশোনা করতে হলে নূন্যতম বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জীববিজ্ঞানসহ এস.এস.সি/সমমান পরীক্ষায় নূন্যতম জিপিএ ২.৫০ পেতে হবে। ভর্তিকৃত সালের ৫ বছর আগের শিক্ষা বিরতি শিথিল যোগ্য। অপরদিকে; প্যারামেডিকেল পড়তে এমন যোগ্যতারই প্রয়োজন হয় না। তাদের সার্টিফিকেট কোর্স: ৬ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে শেষ করা যায়। প্যারামেডিকেল কোর্স এমন কিছু প্রশিক্ষণ প্রদান করে যা স্বাস্থ্যসেবা খাতে দক্ষ পেশাদার তৈরি করে। এই কোর্সগুলো সাধারণত রোগীর চিকিৎসায় সরাসরি সহায়তা বা চিকিৎসা-সম্পর্কিত প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা শেখায়।

মেডিকেল এসিস্টেন্ট ( ম্যাটস) কোর্স সম্পর্ন্ন কারীকে ডিএমএফ  সার্টিফিকেট প্রদান করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ। এই ডিগ্রি প্রাপ্তদের কে বলা হয় সহকারী ডাক্তার। ডিএমএফ ডিগ্রি প্রাপ্ত ডাক্তারদের কর্মক্ষেত্রের পরিধি বিশাল।

সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র, বিভিন্ন স্বাস্থ্য – উপকেন্দ্র, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, স্কুল হেলথ্‌ ক্লিনিক, বিভিন্ন আধাসরকারি/ কর্পোরেশন যেমনঃ তিতাস গ্যাস, বি আই ডব্লিউ টি এ, বিজি প্রেস, বাংলাদেশ বিমান, ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান যেমন:- ব্র্যাক,আশা, গণস্বাস্থ্য, কেয়ার, গণ সাহায্য সংস্থা, আই সি ডি ডি আর বি, সেভ দ্যা চিলড্রেন, প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে তারা নিয়োগ প্রাপ্ত হয় এবং কাজ করার সুযোগ পায়।

এছাড়াও দেশি বিদেশী নানা প্রতিষ্ঠানেও কাজ করার সুযোগ রয়েছে। ভবিষ্যতে আরও নতুন নতুন কর্ম ক্ষেত্র তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি চাকরিতে ডিএমএফদের সাব এ্যাসিস্টেন্ট কমিউনিটি  মেডিকেল অফিসার বা উপ-সহকারী চিকিৎসক কর্মকর্তা  অথবা মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্ট হিসাবে এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে নানাবিধ পদে চাকরির সম্ভাবনা রয়েছে।  এক কথায়, এই কোর্স সম্পন্ন করলে ১০০% নিশ্চিত চাকরি অথবা আত্ম-কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে।

চার বছর মেয়াদী এই কোর্স শেষের পর সহকারী চিকিৎসক হিসাবে পেশাজীবী সনদপত্র ও রেজিস্ট্রেশন  দেওয়া হয়। চূড়ান্ত ভাবে কোর্স সম্পন্নকারীকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ সার্টিফিকেট প্রদান করে। সরকারি কিংবা  বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থীকে  সমমানের ডিএমএফ  ডিগ্রী প্রদান করা হবে। কোন মেডিকেল কলেজ থেকে এম বি বি এস ডিগ্রি গ্রহণ করা থাকলেও সরকারি ডাক্তার হিসাবে প্র্যাকটিস শুরু করা যায় না।

ডাক্তার হিসাবে প্র্যাকটিস শুরু করতে চাইলে বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল ( বিএমডিসি) থেকে নিবন্ধন নিতে হয়। ম্যাটস  কোর্স করলেও  বিএমডিসি  থেকে রেজিঃ প্রদান করা  হয়। ফলে ম্যাটস্‌ কোর্স শেষ করেও  বিএমডিসি  রেজিস্ট্রেশন নিয়ে সহকারী ডাক্তার হিসাবে কাজ করা যায়।

ম্যাটস শিক্ষার্থীরা ইন্টার্ণ করতে হয়;
এই ইন্টার্নশিপ ট্রেনিংটি অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ভবিষ্যতে কর্মক্ষেত্রের সাথে অর্জিত জ্ঞানের সমন্বয় সাধন করে বলে। হাতে কলমে রোগী পর্যবেক্ষণ, রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা প্রদান সহ রোগীর অন্যান্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ের উপর সরাসরি শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা এই ট্রেনিং এর অন্তর্ভূক্ত। এই ট্রেনিং এর উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রতিটি ছাত্র ছাত্রী পূর্বের তিনটি বছরের ব্যবহারিক ক্লাসের মাধ্যমে যা কিছু শিখেছে তার বাস্তব প্রয়োগ ও জ্ঞান অর্জন। চতুর্থ বর্ষে ফিল্ড ট্রেনিং(ইন্টার্নশিপ) এক বছরের জন্য করতে হয়। এই এক বছরের মধ্যে নয় মাস সদর (সরকারি) হাসপাতালে এবং তিন মাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে  ট্রেনিং নেয়া বাধ্যতামূলক ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *