এস চাঙমা সত্যজিৎ
স্টাফ রিপোর্টারঃ
“পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তুলুন ” এ প্রতিপাদ্য বিষয়ের উপর আহ্বানে খাগড়াছড়ির পৌর এলাকার মারমা উন্নয়ন সংসদ কমিউনিটি সেন্টারের হল রুমে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি সুভাষ কান্তি চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শুধাকর ত্রিপুরা। সমাবেশে আরও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সাধারণ সম্পাদক মিটন চাকমা, ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সন্তোষিত চাকমা বকুল, দীঘিনালা উপজেলার দীঘিনালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দ্র রঞ্জন চাকমা, বিশিষ্ট ঠিকাদার ও সমাজ সেবক রবি শঙ্কর তালুকদার, বিশিষ্ট তরুণ সমাজ সেবক ধীমান খীসা, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুজন চাকমা, খাগড়াছড়ি হেডম্যান-কার্বারী এসোসিয়েশনের সভাপতি রণিক ত্রিপুরা, বুদ্ধ লাল চাকমা , প্রফুল্ল কুমার চাকমা।
আজ সোমবার ০২ ডিসেম্বর ২০২৪ খাগড়াছড়ির সদরস্থ মারমা উন্নয়ন সংসদ কমিউনিটি সেন্টারের হল রুমে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে জুম্মো জনগণের একমাত্র রক্ষা কবচ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে তেমন কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারগুলো কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়াতো দূরের কথা, অধিকন্তু গোয়েবলসীয় কায়দায় অব্যাহতভাবে অসত্য তথ্য প্রদান করে চলেছে। চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের ব্যর্থতাকে ধামাচাপা দিতে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার
সঞ্চালক সমীর চাকমা।
বক্তব্য রাখেন প্রীতি খীসা, পিন্টু চাকমা সহসাধারণ সম্পাদক পিসিপি, প্রিয়দর্শী চাকমা সুদর্শন সাধারণ সম্পাদক পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি। রণিক ত্রিপুরা সভাপতি হেডম্যান-কার্বারী এসোসিয়েশন।
ধীমান খীসা বিশিষ্ট সমাজ সেবক। চন্দ্র রঞ্জন চাকমা চেয়ারম্যান দীঘিনালা। সুজন চাকমা চেয়ারম্যান ভাইবোনছড়া ইউনিয়ন।
শোভা কুমার চাকমা সভাপতি জেএসএস খাগড়াছড়ি সদর।
জ্ঞানজীব চাকমা, সহসভাপতি জনসংহতি রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
রবি শঙ্কর তালুকদার বিশিষ্ট ঠিকাদার ও সমাজ সেবক। কাকলী খীসা সভাপতি পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি।
মিটন চাকমা সাধারণ সম্পাদক ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)।
পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে জুম্মো জনগণের একমাত্র রক্ষা কবচ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে তেমন কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারগুলো কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া তো দূরের কথা, অধিকন্তু গোয়েবলসীয় কায়দায় অব্যাহতভাবে অসত্য তথ্য প্রদান করে চলেছে। চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের ব্যর্থতাকে ধামাচাপা দিতে ফ্যাসিস্ট সরকার
কিন্তু দীর্ঘ ২৭ বছরেও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মৌলিক ধারাগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রাম জাতি সংঘের সদর দপ্তরে আদিবাসী বিষয়ক পার্লামেন্ট ফোরামের ২২তম অধিবেশনে চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৬৫ টি ধারা সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়েছে মর্মে অসত্য তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। অথচ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মধ্যে শুধু মাত্র ২৫টি ধারা সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হয়েছে বলে তারা বক্তব্যে স্বীকার করে। এর মধ্যে ১৮টি আংশিক এবং ২৯টি ধারা সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করা হয়নি বা অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে এবং সরকার এসব ধারা অব্যাহতভাবে লঙ্ঘন করে চলেছে। বিশেষ করে চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো অকার্যকর অবস্থায় রাখা হয়েছে সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের পরিবর্তে সরকার চুক্তি-পূর্ব শাসকগোষ্ঠীর মতো ব্যাপক সামরিকায়নের মাধ্যমে চলমান পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আন্দোলনকে দমন করার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। চুক্তি পূর্ব অবস্থার মতো বর্তমান সময়েও অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে বহিরাগত মুসলিম বসতি স্থাপন, আদিবাসীদেরকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিতকরণ, রাষ্ট্রীয় বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহায়তায় মুসলিম সেটেলার কর্তৃক আদিবাসীদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলা ও গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া, ভূমি বেদখল ও উচ্ছেদ, আদিবাসী নারী ধর্ষণসহ জাতিগত নির্মূলীকরণের সকল কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলেও বক্তারা অভিযোগ করেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হওয়া পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি আন্দোলন চালিয়ে যাবে এবং প্রয়োজনে চুক্তির পূর্বাপর অবস্থায় গিয়ে চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে সরকারের সাথে আবার সংগ্রাম চালিয়ে যাবে বলে আহ্বান জানান।
Leave a Reply