today visitors: 5073432

ঢাবির আল্লামা ইকবাল হলের নাম পুনঃপ্রবর্তন করতে হবে।’


প্যান-ইসলামিক মুভমেন্ট

প্রতিবেদক:এইচ এম গোলাম কিবরিয়া রাকিব
ধর্ম, দর্শন ও রাজনীতির কবি আল্লামা ড. মুহাম্মদ ইকবাল শুধু পাকিস্তানের কবি নন, তিনি মুসলিম জাতিসত্তার কবি ও গোটা মুসলিম জাহানের জাতীয় কবি। আজকের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ স্বাধীন-স্বার্বভৌম বাংলাদেশের জাতিসত্তা গঠনেও আল্লামা ইকবালের রাজনীতি, সাহিত্য ও দর্শন দারুণভাবে কাজে লেগেছিল। তাই শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতাবোধের জায়গা থেকে অবিলম্বে ঢাবির ইকবাল হলের নাম পুনঃপ্রবর্তন করতে হবে। সার্জেন্ট জহুরুল হকের নামে আরেকটি হল প্রতিষ্ঠা করেও সম্মান প্রদর্শন করা যাবে। আল্লামা ইকবাল হলটাকেই কেন সার্জেন্ট জহুরুল হকের নামে হবে?

রাজধানীর পুরানা পল্টনের ডা. নওয়াব আলী টাওয়ারে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ (১২ নভেম্বর, বাদ মাগরিব) আল্লামা ইকবালের ১৪৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্যান-ইসলামিক মুভমেন্টের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল বক্তারা এসব কথা বলেন।
প্যান-ইসলামিক মুভমেন্টের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো: মোস্তফা জামাল ভূইয়ার সভাপতিত্বে, সংগঠনের উপদেষ্টা এবং নবাব সলিমুল্লাহ একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শুভ’র সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নবাব সলিমুল্লাহ একাডেমীর সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুল জব্বার বলেন যে,’একাত্তর পরবর্তীকালে সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদের কারণে আমরা মুসলিম জাহানের অনেক সূর্যসন্তানকেই শ্রদ্ধা জানাতে পারিনি। কিন্তু আজ সময় এসেছে, মুসলিম জাতিসত্তার বলে বলীয়ান হয়ে সকল বাঁধার বিন্ধ্যাচল পেরিয়ে আমরা আমাদের পূর্বসূরীদের অবদান, ত্যাগ ও সংগ্রাম জাতির সামনে তুলে ধরার।’
সভাপতির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট মো: মোস্তফা জামাল ভূইয়া বলেন যে,’দুঃখজনক হলেও সত্য যে, মহাকবি আল্লামা ইকবালকে আমরা হৃদয়ে লালন করলেও আজ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায় করতে পারিনি। পাঠ্যপুস্তকে তার রচনাবলী সংযুক্ত করতে পারিনি। তার রাজনীতি, দর্শন ও সাহিত্যকে বাংলাদেশী মুসলমানদের মধ্যে চর্চিত করতে পারিনি। এ ব্যর্থতা আমাদের সকলের। আজ নতুন বাংলাদেশে হিন্দুত্ববাদী ন্যারেটিভের বাইরে গিয়ে বৃহত্তর মুসলিম আইডেন্টিটিকে জাগিয়ে তুলতে হলে আল্লামা ইকবাল অপরিহার্য। ‘
সঞ্চালক সাইফুল ইসলাম শুভ সঞ্চালনার ফাঁকে বলেন যে, ‘করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট থাকতে পারলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন ড. মুহাম্মদ ইকবালের নামে হল থাকতে পারবে না? ইসলামাবাদের প্রধান সড়কটির নাম যদি শেরেবাংলার নামে হতে পারে তাহলে ঢাকার বুকে গুলিস্তানের জিন্নাহ এভিনিউ কেন পুনঃপ্রবর্তন হবে না? কায়েদে আজমের সমাধিফলকে যদি বাংলা লেখা থাকতে পারে তাহলে বাংলাদেশে কেন একটিও উর্দু পত্রিকা থাকবে না?’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উনসত্তরের সেই ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের সংগঠক ও জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন খান বলেন যে, ‘নবাব সলিমুল্লাহ, শেরেবাংলা, সোহরাওয়ার্দী ও ভাসানীকে যৌথভাবে ফাউন্ডিং ফাদার হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। নতুন বাংলাদেশে কোনো একক ব্যক্তিকে আর জাতির পিতা হিসেবে মেনে নিয়ে জাতিকে বিভক্ত করা উচিৎ নয়। আল্লামা ইকবাল চর্চায় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা জরুরী।’
আমন্ত্রিত অতিথি সাইমুম সাদী বলেন যে, ‘উলামায়ে কেরাম আল্লামা ইকবালের কবিতা দিয়ে ওয়াজ-মাহফিল করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকলেও তার চর্চায় এগিয়ে আসছে না। আজ সময় এসেছে আল্লামা ইকবালকে জাতির সামনে তুলে ধরার।’
বিহারি কমিউনিটির নেতা আফজাল ওয়ার্সী আল্লামা ইকবাল রচিত বেশ কয়েকটি ফার্সি ও উর্দু কবিতা আবৃত্তি করে ইকবালের অমর সৃষ্টির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা পোষণ করে বক্তব্য রাখেন।

উক্ত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, খেলাফত মজলিসের নেতা সাইমুম সাদী, নেজামে ইসলামীর নেতা মুহাম্মদ নুরুজ্জামান, বিহারি কমিউনিটির নেতা আফজাল ওয়ার্সীসহ প্রমূখ আলোচকবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *