নির্বাহী সম্পাদক (প্রথম বলেটিন) - ইমরান হক
চাঁদপুর শহরে অনুমোদনহীনভাবে হিলশা মেডিকেল হাসপাতালটি চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, চাঁদপুর শহরের কুমিল্লা রোডস্থ পৌর ভূমি অফিসের পূর্ব পাশে বহুতল একটি ভবনে ২ মাস যাবত চালু হয়েছে হিলশা মেডিকেল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামক স্বাস্থ্য সেবামূলক এ প্রতিষ্ঠানটি।
এটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনুমোদন থাকলেও নেই কোন হাসপাতাল পরিচালনা করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। অথচ ২ মাস যাবত ধরে ৬তলা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে হাসপাতালের সকল কার্যক্রম চালু করেছে। প্রতিদিন রোগী ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে দায়িত্বরত ডাক্তাররা। আরো জানা যায়, স্বাস্থ্য সেবার দেয়ার মতো অভিজ্ঞ লোকবল নেই এখানে। এমনকি চিকিৎসার পর্যাপ্ত সরঞ্জামাদিও নেই।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সিভিল সার্জন, ডা : মোহাম্মদ নুর আলম দীন এর সাথে এ বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন, এ হাসপাতালের কাগজপত্র কিছু অংশ জমা পড়েছে গত সপ্তাহে। আমরা ইনকোয়ারি করবো, তারপর বলতে পারবো এ হাসপাতালের পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন আছে কি না। যদি তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে থাকেন তাহলে পরিচালনা করার সঠিক আছে। তবে এ বিষয়ে শীঘ্রই তদন্তে যাবো।
অপরদিকে চাঁদপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো : হান্নান এর সাথে হিলশা মেডিকেল হাসপাতালের পরিবেশ ছাড়পত্র রয়েছে কি না এ বিষয়ে আলোচনা করলে তিনি বলেন, ওনারা আবেদন করেছেন।
এখনও ছাড়পত্র পায়নি।
তিনি আরো বলেন, পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া হাসপাতাল পরিচালনা করা সম্পূর্ণ বেআইনী।
এ বিষয়ে হিলশা মেডিকেল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর পরিচালনার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে গেলে তারা বিভিন্নভাবে উচ্চস্বরে পূর্ব দলীয় প্রভাব দেখানোর চেষ্টা করেন।
হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, রোগী অনুযায়ী পর্যাপ্ত ডাক্তার ও নার্সের অভাব রয়েছে। দায়িত্বরতরা স্বাস্থ্য সেবায় কতটুকু অভিজ্ঞতা সম্পন্ন তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এদিকে চাঁদপুর শহরে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল।
উল্লেখ্য, চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন কর্তৃক তথ্য অনুযায়ী, চাঁদপুর জেলা শহরে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়গনিক সেন্টার আছে ১০৮ টি।
প্রায়ই দেখা যাচ্ছে, অভিজ্ঞ ডাক্তারের অভাবে প্রসুতি মারা যাচ্ছে অথবা সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুরা অকালে ঝড়ে যাচ্ছে। গ্রাম অঞ্চলের রোগীরা না জেনে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয় স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার জন্য। সেবা নেয়ার পর বিভিন্ন চার্জ ধরে এমনভাবে বিল করা হয় যা দেখে অনেক রোগীদের চোখ কপালে উঠে। শহরের পরিচিত কেউ থাকলে তাকে এনে বার্গের্ডিং করে সেই বিলের অনেক অংশ কমানো হয়।
কিন্তু যাদের কেউ থাকে না তাদের ধার্যকৃত পুরো বিলটি দিয়ে আসতে হয়। এভাবে হাসপাতালগুলো অধিক মুনাফা আদায় করে থাকে রোগীদের থেকে। যার ফলে সেবা নয়, বরং মুনাফা আদায় করতে শহরের এত হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক স্টোর গড়ে উঠছে। তবে কিছু হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক এর কার্যক্রম সন্তোষজনক হলেও বহু সংখ্যকই অধিক মুনাফা আদায়ে সেবার নামে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে।