লবণ উৎপাদনে স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মান ক্রমান্বয়ে উন্নত হচ্ছে

আন্তর্জাতিক:
গত সেপ্টেম্বরে বছরের লবণমৌসুম শেষ হয়। সিচাংয়ের ছাংতু শহরের মাংখাং জেলার নাসি জাতি থানার ল্যাঙ্কাং নদীর তীরে, পাহাড় ও উপত্যকার ঢালে, জিয়াদা গ্রামের বাসিন্দারা তাদের ১৩০০ বছরের পুরানো লবণপ্যানের রুটিন মেরামতকাজ শুরু করেন।

২০০৮ সালে মাংখাংয়ের ভালো লবণ শুকানোর কৌশল জাতীয় অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের নামতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।

এখন লবণক্ষেত মেরামতের মৌসুম। লবণপ্যানের নীচে এক ধরনের লাল মাটি দিয়ে প্রলেপ দেওয়া হয়। ক্ষেতের পানি বাষ্পীভূত হয় এবং আংশিকভাবে লবণের স্তম্ভ তৈরি হয়। লাল মাটি প্রতি বছর প্রতিস্থাপিত করা আবশ্যক, অন্যথায় সমস্ত ব্রাইন নেমে যাবে এবং কণা সংগ্রহ করা যাবে না।গ্রামে ৩৮টি লবণের কূপ রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা তাশিরাম বলেন, আগে তাদের কাজের পরিবেশ খুবই খারাপ ছিল। তখন লবণের শেডে ঘুমাতে হতো। লবণের স্তম্ভ থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি তার চোখে পড়তো। ২০ বছরেরও বেশি সময় আগে যখন তাঁরা কাজে ব্যস্ত থাকতেন, তখন তিনি ও তার বাবা-মা রাতে মাত্র ৪ ঘন্টা ঘুমাতেন।

২০১১ সালে লবণক্ষেত্রে বিদ্যুতের সুবিধা আসে। সাবমার্সিবল পাম্প ব্যবহার করে, পাইপ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে, ব্রাইন বিভিন্ন পুকুরে প্রবাহিত হয়। মানুষকে আর মাটির সুড়ঙ্গে বা লবণের শেডে ঘুমাতে হয় না।
লবণের ক্ষেতে একটি ১০ ​​সেন্টিমিটার গভীর ব্রাইন প্রায় ২৫ কিলোগ্রাম লবণ উৎপাদন করতে পারে। একসময় লবণক্ষেত্র ছিল শিশুদের প্রিয় খেলার জায়গা। শিশুরা পুরানো লাল মাটি ও নোনাজল ব্যবহার করে মাটির ঘর তৈরি করতো।

স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মান ক্রমান্বয়ে উন্নত হচ্ছে। কয়েক বারের রূপান্তরের মাধ্যমে তাশিরামের পরিবার ২০১২ সালে একটি ৫ শ বর্গমিটারের তিন তলা ভবন নির্মাণ করেছে। বাইরে একটি ৩ শ বর্গমিটারের উঠান আছে।

২০২৩ সালে ছাংতং শহর মাংখাং প্রাচীন লবণক্ষেত্রের সুরক্ষার জন্য একটি নিয়ম প্রকাশ করে। খনিজ ও অণুজীবের ক্রিয়াকলাপের অধীনে, পাহাড়ের ধারে ‘প্যালেট’-র মতো ব্রাইনটি বিভিন্ন রঙে উপস্থিত হয়।

বর্তমানে চমৎকার লবণের ক্ষেত্র, সুন্দর লবণের শেড, ও দীর্ঘ কিংবদন্তি বাসিন্দাদের আয়ের নতুন উৎস হয়ে উঠেছে।
২০১৬ সালে তাশিরাম ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে লবণক্ষেত্রে উৎপাদিত লবণ বিক্রয় শুরু করেন। তিনি হলেন গোটা থানার প্রথম মানুষ, যিনি ই-কর্মাসের মাধ্যমে লবণ বিক্রয় শুরু করেন। তাঁর অনলাইন দোকানের বার্ষিক আয় ১ লাখ ইউয়ান আরএমবি’রও বেশি।

এ সম্পর্কে তাশিরাম বলেন, আমাদের গ্রামের অনেক মানুষ নিজেদের পারিবারিক হোটেল খুলেছেন। গত বছর আমাদের গ্রামে আসা পর্যটকের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৬ হাজার পার্সনটাইমস। গ্রামবাসীদের পর্যটন খাতে আয় ২৬.৪ লাখ ইউয়ান ছাড়িয়ে গেছে।
তাশিরাম সাংবাদিককে বলেন, লবণ হলো সময়ের স্বাদ এবং দুনিয়ার স্বাদ।
সূত্র: ছাই ইউয়ে মুক্তা, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।