মোঃ শান্ত খান ঢাকা জেলা প্রতিনিধি
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পায়ে গুলিবিদ্ধ নাজমুল ইসলাম রুবেলকে নিয়ে উদ্বিগ্ন তাঁর পরিবার। সুস্থ হওয়া ও তাঁর কাজে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
নাজমুল ইসলাম রুবেল শাহীবাগ এলাকার মফিজ উদ্দিনের ছেলে। ৫ জনের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। গত ২০ জুলাই সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন রুবেল।
সরজমিনে রুবেলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি বিছানায় বালিশের উপর গুলিবিদ্ধ পা দিয়ে বসে আছেন। পাশে হতাশা আর উদ্বিগ্ন হয়ে বসে আছেন তার বাবা। সন্তান সুস্থ হতে পারবে কি না, এ নিয়ে চিন্তিত সে। পাশে দাড়িয়ে থাকা স্ত্রীর চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরছিল।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার বর্ণনা দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন রুবেল। আন্দোলনে সফলতার কোনো আনন্দ তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি।
সেদিনের রোমহর্ষক ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে রুবেল বলেন, তিনি বিএনপির একজন কর্মী হিসেবে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। গত ১৮ জুলাই সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের উপর হামলা চালায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ওই দিন থেকে রুবেলও ছাত্রদের সাথে রাজপথে আন্দোলনে নামে। তবে তার এই রাজপথে আন্দোলন থেমে যায় ২০ জুলাই সাভার বাসস্ট্যান্ডের নিউ মার্কেটের সামনে পুলিশের গুলিতে। এসময় তার আশেপাশে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। পরে রুবেলকে চিকিৎসার জন্য সিআরপি'তে নিয়ে গেলে সেখানেও হামলা চালায় পুলিশ, ছাত্রলীগ-যুবলীগ। তবে সেখানে কর্মরত চিকিৎসকেদর সহযোগিতায় প্রাণে বেঁচে জান এবং প্রাথমিক চিকিৎসা নেন বলেও জানান রুবেল।
কিন্তু ওই চিকিৎসা যথেষ্ট ছিলোনা তার পায়ের জন্য। পায়ের অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছিল। পরে ডাক্তাররা দ্রুত পায়ে অস্ত্রপাচার করতে বলেন। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে তিনি অপারেশন করাতে পারছিলেন না। পরে গত ৩ সেপ্টেম্বর বিএনপি নেতা লায়ন খোরশেদ আলমের সহযোগিতায় অপারেশন করান। তবে চিকিৎসকরা বলেছেন গুলিবিদ্ধ ওই পা দিয়ে আগের মতো চলাচল করা সম্ভব না। তাই ওই পা নিয়ে এখন কোনো কাজ করতে না পাড়ায় তার পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তিনি চান সবার সহযোগিতায় দেশের জন্য আবারও রাজপথে ফিরতে।