কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রনায়লয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ভেঙে যাওয়া রেগুলেটন পরিদর্শনে এসে বলেন, সমস্যাটা সরকারের চশমা দিয়ে না দেখে মানুষের চশমা দিয়ে দেখতে হবে। মানুষ ও সরকার ভিন্ন সত্তা হলে চলবে না। মানুষকে আর সরকারকে একসাথ হয়ে একমত হয়ে সমস্যা সমাধান করতে হবে। আমি নদী ভাঙ্গন এলাকায় এসে মানুষের দুর্দশার কথা শুনলাম। রেগুলেটর ভাঙ্গন আপনাদের এলাকায় হয়ত এটা প্রথম কিন্তু এ দুর্দশা বাংলাদেশের অনেক জায়গায় আছে। সরকারী হিসেব মতে প্রতি বছর ৩০হাজার মানুষ নদী ভাঙ্গনে সর্বশান্ত হয়ে যায়। আমরা যারা একসময় বেসরকারীভাবে এসব নিয়ে কাজ করেছি, আমাদের হিসেব মত নদী ভাঙ্গনে একলক্ষ মানুষ প্রতি বছর সর্বশান্ত হয়ে যায়।
তিনি বলেন, মুছাপুর এলাকায় রেগুলেটন ভেঙ্গে গেছে। আপনাদের মুছাপুরে একটি রেগুলেটর দরকার। যেহেতু এটা উজান থেকে পানি আসার ব্যাপার এবং আপনাদের এ এলাকার সাথে সমুদ্রের সংযোগ আছে। লোনা পানির আগ্রাসনকে ঠেকাতে একটা রেগুলেটর লাগবেই। আজকে চাইলেই আজকে রেগুলেটর নির্মাণ করা সম্ভব নয়। এ রেগুলেটর নির্মানে একটা প্রক্রিয়াগত ব্যাপার আছে। আমরা যদি দ্রুতগতিতে এ রেগুলেটর নির্মাণ করি, তাহলে এটা নির্মাণ করতে ২-৩ বছর সময় লাগবে।
পানি সম্পদ উপদেষ্টা আরও বলেন, এখন সরকারকে রেগুলেটরের কথা ভাবতে হচ্ছে এবং ড্রেজিং এর প্রস্তাবনাও মাথায় রাখতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা এখন অনেক টাকার উপর বসে আছি এবং পরিকল্পনা করছি। সবচেয়ে কার্যকর কি ব্যবস্থা নেওয়া যায় ঢাকায় গিয়ে সিদ্ধান্ত নেব। আমরা একটি দ্রুত সময়ের মধ্যে নদী ভাঙ্গন রোধের ব্যবস্থা নেব। ভাঙ্গনটা আমরা কতটুকু রোধ করতে পারব সে ব্যাপারে আমরা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আলোচনা করব। মুছাপুর রেগুলেটর কেন ভেঙ্গে গেল। যে পরিমাণ পানির ¯স্রোত আসবে সেটা চিন্তা করে রেগুলেটর নির্মান করা হয়নি। এর সক্ষমতা কম ছিল এজন্য ভেঙ্গে গেছে, নাকি নি¤œমানের সামগ্রী দেওয়া হয়েছে, সেকারণেও রেগুলেটর ভেঙ্গে যেতে পারে। আমরা পানি সম্পদ সচিব ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছি।
তিনি সোমবার সকাল ১০টায় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নে ভেঙ্গে যাওয়া রেগুলেটর পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, পানি সম্পদ সচিব নাজমুল আহসান, ডিজি আমিরুল ইসলাম ভ‚ঞা, চীফ ইঞ্জিনিয়ার (ডিজাইন) মাহফুজ আহমেদ, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক ইশতিয়াক আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনুছের আইনজীবী ব্যারিষ্টার খাজা তানভীর আহমেদ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসাইন পাটওয়ারী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম শিকদার, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসেন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ২৬ আগস্ট ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানি ও টানা বর্ষনে মুছাপুর রেগুলেটন ভেঙ্গে নদীর তলদেশে চলে যায়। এতে রেগুলেটরের ২৩টি গেইটও নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।