today visitors: 5073432

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির আওতায় যেসব ক্ষমতা পেল সেনাবাহিনীর কমিশন প্রাপ্ত কর্মকর্তারা

স্টাফ রিপোর্টার – ইমরান হক

ঢাকাসহ সারাদেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে আগামী দুই মাসের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়েছে ড. ইউনূসের নেতৃত্বধীন অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এই ক্ষমতা পেয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেতী প্রুর সই করা এক প্রজ্ঞাপনে সেনাবাহিনীকে মেজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়ার কথা জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ থেকে পরবর্তী ৬০ দিনের জন্য এ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন সিনিয়র সহকারী সচিব জেতী।

সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ‘ফৌজদারী কার্যবিধির, ১৮৯৮’ এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ভয়েস অফ আমেরিকার বলেন, ‘যেসব ধারা উল্লেখ করে সেনাবাহিনীকে মেজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেয়া হয়েছে তাতে গ্রেফতারসহ অনেক কিছু করতে পারবে।’

তিনি বলেন, ‘৬৪ ধারায় বর্ণিত ক্ষমতা অনুযায়ী তারা গ্রেফতার করতে পারবে। আর ১০৫ অনুসারে সরাসরি তল্লাশি করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।’

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত আইনের এসব ধারা অনুযায়ী একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সাধারণ ক্ষমতা-
ধারা : ৬৪-ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অপরাধ সংঘটনকারী ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার বা গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়ার এবং হেফাজতে রাখার ক্ষমতা রয়েছে।

ধারা : ৬৫- গ্রেফতার করার ক্ষমতা, বা তার উপস্থিতিতে গ্রেফতারের নির্দেশনা জন্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে পারেন।

ধারা : ৮৩/৮৪/৮৬-ওয়ারেন্ট অনুমোদন করার ক্ষমতা বা ওয়ারেন্টের অধীনে গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অপসারণের আদেশ দেয়ার ক্ষমতা।

ধারা : ৯৫(২)- নথিপত্র ইত্যাদির জন্য ডাক ও টেলিগ্রাফ কর্তৃপক্ষের দ্বারা অনুসন্ধান এবং আটক করার ক্ষমতা।
ধারা : ১০০- ভুলভাবে বন্দী ব্যক্তিদের হাজির করার জন্য জন্য অনুসন্ধান-ওয়ারেন্ট জারি করার ক্ষমতা।

ধারা: ১০৫- সরাসরি তল্লাশি করার ক্ষমতা, তার উপস্থিতিতে যেকোনো স্থানে অনুসন্ধানের জন্য তিনি সার্চ-ওয়ারেন্ট জারি করতে পারেন।

ধারা : ১০৭- শান্তি বজায় রাখার জন্য নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ক্ষমতা।

ধারা : ১০৯- ভবঘুরে এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ভালো আচরণের জন্য নিরাপত্তার প্রয়োজনীর ক্ষমতা।

ধারা : ১১০- ভালো আচরণের জন্য নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ক্ষমতা।

ধারা : ১২৬- জামিনের নিষ্পত্তি করার ক্ষমতা।

ধারা:১২৭-বেআইনী সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার আদেশ দানের ক্ষমতা।

ধারা :১২৮- বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য বেসামরিক শক্তি ব্যবহার করার ক্ষমতা।

ধারা : ১৩০- বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি ব্যবহার করার ক্ষমতা।

ধারা : ১৩৩- স্থানীয় উপদ্রবে ক্ষেত্রে ব্যবস্থা হিসেবে আদেশ জারি করার ক্ষমতা।

ধারা : ১৪২-জনসাধারণের উপদ্রবের ক্ষেত্রে অবিলম্বে ব্যবস্থা হিসেবে আদেশ জারি করার ক্ষমতা।

উল্লিখিত ক্ষমতা ছাড়াও যেকোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর অধীনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার জন্য সরকার এবং সেই সঙ্গে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা সংশ্লিষ্ট এখতিয়ারের মধ্যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

এই আইনের অধীনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তার উপস্থিতিতে সংঘটিত অপরাধ বা ঘটনাস্থলে তার বা তার সামনে উন্মোচিত হওয়া অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারেন। অভিযুক্তের স্বীকারোক্তির পর ম্যাজিস্ট্রেট আইনের বিধান অনুযায়ী অপরাধীকে দুই বছর পর্যন্ত সাজা দিতে পারেন।