মাহিদুল ইসলাম ফরহাদ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাবেক সহকারী প্রেস সচিব কাইয়ুম রেজা চৌধুরী এবং তার মেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জারা জাবীন মাহবুবের বিরুদ্ধে বিল দখল, চাঁদাবাজি, অর্থ আত্মসাৎ, লুটপাট যৌথ বাহিনী দিয়ে তুলে নিয়ে অপহরণ ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি হুমকির অভিযোগ সংবাদ সম্মেলন করেছেন মৎস্যজীবীরা৷ শনিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা শহরের বিশ্বরোড় মোড়ের চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক এসোসিয়েশনের অফিসে কমিরাদহ বিলের ৫০০ মৎস্যজীবী পরিবারের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন মৎস্যজীবীরা।
সংবাদ সম্মেলনে মৎস্যজীবীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কুমিরাদহ বিলের ইজারাদার মো. আলফাজ উদ্দিন৷ এসময় তিনি বলেন, নিয়ম মাফিক চৌধুরী ইসমাইল সাজ্জাদ জোয়াদ ওয়াকফ এস্টেটের মোতাওয়াল্লী ও সাবেক এমপি জারা জাবীন মাহবুবের বাবা কাইয়ুম রেজা চৌধুরীর নিকট কাছ থেকে কুমিরাদহ বিল ইজারা নেওয়া হয়। কিন্তু এমপি জারা তার লোকজনের মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে এমপি নিজে উপস্থিত থেকে বিলের ধারে থাকা মাছের খাবার ও বিভিন্ন সরঞ্জাম লুটপাট করেছে৷
মৎস্যজীবীরা আরও বলেন, একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে সাবেক এমপি জারা৷ এমনকি মাদক মামলা দিয়ে ও যৌথ বাহিনীর মাধ্যমে আটকের হুমকি দিয়ে বিল দখলের পায়তারা করছে আ.লীগ নেতা কাইয়ুম রেজা চৌধুরী ও তার লোকজন। এছাড়াও বিলের বাঁধ ভেঙে মাছ লুটপাট করার চেষ্টা করছে তারা। এনিয়ে প্রায় ৫০০ মৎস্যজীবী পরিবার বিনিয়োগ করা আড়াই কোটি টাকা হারানোর আশঙ্কায় রয়েছে। এমনি বিভিন্ন হুমকি-ধামকিতে বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে মৎস্যজীবীরা।
বিলের ইজারাদার আলফাজ উদ্দিন বলেন, সাবেক সরকারের শাসনামলে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা 'র' এর এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি কাইয়ুম রেজা চৌধুরী। তার এই কাজ এখনও চলমান রয়েছে। বর্তমানেও দেশের বিরুদ্ধে নানারকম ষড়যন্ত্র করছে তিনি ও তার পরিবার। গত কয়েকদিন ধরেই আদালতের মাধ্যমে না পেরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে বাড়ির মধ্যে ও আশেপাশে মাদক রেখে মৎস্যজীবীদের ধরিয়ে দেয়ার নাটক শুরু করেছেন কাইয়ুম রেজা চৌধুরী। সাবেক সরকারের শাসনামলে কয়েকজন শীর্ষ মন্ত্রী ও এমপির সাথে যোগসাজশে প্রভাব খাটিয়ে বিল দখলের পায়তারা শুরু করেন তিনি।
আলফাজ উদ্দিন আরও বলেন, কুমিরাদহ বিল ছাড়াও আমরা ৫০০ জেলে পরিবার কায়েম রেজা চৌধুরীর কাছে ১০ কোটি ৯০ লাখ ৭১ হাজার ২১২ টাকা পাওনা রয়েছে, যা তার বাড়ীর দফাদার রবু, কেয়ারটেকার খাইরুল ইসলাম খায়ের, ও তার প্রধান হিসাব রক্ষক মোজাম্মেল হক ও কায়েম রেজা চৌধুরীর নিজের স্বাক্ষরিত ওয়াকফ স্টেটের ভাউচার ও চৌথায় উল্লেখ্য থাকলেও তিনি টাকা দিচ্ছেন না। তার কাছে টাকা চাইতে গেলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিচ্ছেন। তার মেয়ে সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি জারা জাবীন মাহবুব তার প্রভাব খাটিয়ে থানায় মামলা করতে দেয়নি। উল্টো আমাদের নামেই বারবার মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন।
তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন, শেখ মুজিবুর রহমানের সাবেক সহকারী প্রেস সচিব ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি কাইয়ুম রেজা চৌধুরী। তিনি জানান, বিলটির মোতাওয়াল্লী আমি নিজেই। এটি আমাদের সম্পত্তি। এমনকি উচ্চ আদালতের রায় রয়েছে আমাদের পক্ষে। পরে আলফাজ উদ্দিন নিম্ন আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। আমাদের সকল অধিকার ও কাগজপত্র ঠিক থাকলেও আমার সাবেক ম্যানেজার আলফাজ উদ্দিন জোরপূর্বক দখল করে মাছ আহরণ করছে। জোরপূর্বক দখল, মিথ্যা মামলা ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।