মাহিদুল ইসলাম ফরহাদ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
নগদ অর্থের বিনিময়ে জাল সার্টিফিকেট বিক্রির অভিযোগ উঠেছে রসুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। জাল সার্টিফিকেট সংক্রান্ত একটি ফোন রেকর্ড আমাদের হাতে পৌঁছেছে। রসুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের, ভর্তি রেজিষ্ট্রার খাতায় দেখা যায়, ১৯৯৬ সালে শেষ ছাত্র টুটুল এর পর থেকে ঐ রেজিষ্ট্রারে আর কোন ছাত্র ছাত্রীর নাম নাই।
নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার রসুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জাল সার্টিফিকেট বানানোর কারিগর, শহিদুল ইসলাম একাধিক জাল সার্টিফিকেট বানিয়ে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেছেন বলে তিনি নিজ মুখে স্বীকার করেছেন।
গোমাস্তাপুর উপজেলার আড্ডা এলাকার স্থানীয়রা বলেন, রসুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুলের জাল সার্টিফিকেট ব্যবসা নতুন নয় প্রধান শিক্ষক পদে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন ভাবে জাল সার্টিফিকেট ব্যবসা করে আসছেন। তার জাল সার্টিফিকেট দিয়ে টুটুল নামে একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে চাকরি করছেন সোনাবর উচ্চ বিদ্যালয়ে । শুধু টুটুলই নয় এরকম অনেকেই শহিদুলের দেয়া জাল সনদ দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করছেন।
সোনাবর উচ্চ বিদ্যালয়ের চাকরি প্রার্থীদের একজন নাসিম তিনি বলেন, গত আট মাস আগে, সোনাবর উচ্চ বিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়, আমি সহ আরো কয়েকজন ঐ পদে আবেদন করি, আমাদের একাডেমিক সার্টিফিকেট থাকলেও আমাদের চাকরি না হলেও, চাকরি হয় টুটুলের, পারে জানতে পারি টুটুল এর একাডেমিক সনদটি জাল, বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটি ও সোনাবর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানালেও তারা কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি, পরবর্তীতে এবিষয়ে আমি বাদী হয়ে জেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ করলেও কোন লাভ হয়নি। আমি নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়টি পুনোরায় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।
সোনাবর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সোনাবর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিছন্নতা কর্মী পদে নিয়োগ প্রকাশের পর থেকে অনেকেই উক্ত পদের জন্য আবেদন করেছিল, আমি সহ ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে টুটুলকে নিয়োগ দেয়া হয়। টুটুলের একাডেমিক সনদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সনদ টি রসুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের, হওয়ায় নিয়োগের সময়, যাচাই-বাছাই করে দেখা হয়নি, পারে আরেক প্রার্থী নাসিম অভিযোগ করলে বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করলে, আমরা তদন্ত কমিটি তদন্ত করে দেখি টুটুলের সনদ ঠিক আছে। ১৯৯৬ সালে পর রেজিষ্ট্রার খাতায় টুটুলের পর আর কোন ছাত্র ছাত্রীর নাম আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওটা রসুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যাপার আমার কিছু বলার নাই।
এবিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছিলাম, কমিটি আমাদের জানান টুটুল এর একাডেমিক সনদ ঠিক আছে, এবং নিয়ম অনুযায়ী টুটুলকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘটনাটি আমি যোগদানের আগে হওয়ায়, কিছু বলতে পারছিনা, লিখিত অভিযোগ পেলে, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে সুশীল সমাজ ও শিক্ষকরা বলেন, একজন শিক্ষক দ্বারা সনদ বিক্রির বিষয়টি খুবই দু:খজনক। যদি ওই শিক্ষক এ কাজ করে থাকেন তাহলে তিনি শিক্ষক জাতির জন্য কলঙ্ক। বিষয়টি তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।