আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিবের বহিস্কার দাবী
বরগুনা প্রতিনিধি - মাসুম বিল্লাহ
বিএনপির দলীয় পদ ব্যবহার করে আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা ও তার সহযোগীরা চাঁদা আদায়, বাস স্ট্যান্ড দখল, ভাংচুর ও লুটপাট করছে। তার এমন কর্মকান্ড ও আওয়ামীলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার প্রতিবাদে আমতলী উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মোঃ জহিরুল ইসলাম মামুন (ভিপি) সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি তুহিন মৃধাসহ এমন কর্মকান্ডে যারা জড়িত তাদের দল থেকে বহিস্কারের দাবী জানান তিনি। শুক্রবার বেলা ১১ টায় আমতলী উপজেলা পরিষদ সড়কের দলীয় অস্থায়ী কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক জহিরুল ইসলাম মামুন বলেন, গত ৫ আগষ্ট ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেন। ওই দিন আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা ও উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সদস্য সামসুল হক চৌকিদারসহ অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী আমতলী উপজেলায় ব্যাপক তান্ডব চালায়। বাড়ী-ঘর ভাংচুর, জমি দখল, অগ্নি সংযোগসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে জড়িয়ে পরেন। গত বুধবার আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা এবং সিনিয়র সদস্য সামসুল হক চৌকিদারসহ ২০-২৫ টি মোটর সাইকেল নিয়ে চলাভাঙ্গা গ্রামে নির্মাণাধীন পাওয়ার গ্রীড উপ-কেন্দ্রের শ্রমিক সরবরাহকারী হুমায়ুন কবির মিল্টনের মুদি মনোহরী দোকানে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা ও ভাংচুর চালায়। ওই দোকান থেকে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা ও তার সহযোগীরা দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। ওই টাকা না দেয়ায় তাকে মারধর করে। পরে দোকান থেকে দুই লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়াও উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা গ্রামাঞ্চলের হাট বাজারে দখল বানিজ্য ও চাঁদা আদায় করে আসছে। তুহিন মৃধা ও তার অনুসারীদের এমন কর্মকান্ডে আমতলী উপজেলা বিএনপির ভাবমুর্তি একেবারে শুন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। তুমিন মৃধা ও তার এমন কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিএনপি থেকে বহিস্কার করে দলীয় ভাবমুর্তি উদ্ধারের দাবী জানান ভিপি মামুন। সংবাদ সম্মেলনে পৌর বিএনপির আহবায়ক কবির উদ্দিন ফকির বলেন, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধার বাবা মরহুম আব্দুস ছত্তার মৃধা ছিলেন আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি। তার চাচাতো ভাই আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান মোতাহার উদ্দিন মৃধা উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি। তার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা এমন কর্মকান্ড করছেন। দ্রুত তাকে দলীয় পদ থেকে বহিস্কারের দাবী জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মকবুল আহম্মেদ খাঁন, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মইনুদ্দিন মামুন, আবু সাইয়েদ জুবেরী, আব্দুর রাজ্জাক চৌকিদার, বিএনপি নেতা রুস্তুম আলী আকন, পৌর বিএনপির সদস্য সচিব জালাল আহম্মেদ খাঁন, মাহহারুল ইসলাম মিলন, মতিউর রহমান মানিক, মোঃ সেতু মল্লিক ও উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ইমরান খাঁন।
আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হাসিনা দেশ ত্যাগের পর আমতলী উপজেলায় যত গুলো ঘটনা ঘটেছে তার সঙ্গে আমি ও আমার অনুসারীরা জড়িত নহে।
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. তুহিন মৃধা চাঁদা দাবীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন চাঁদা দাবী, ঘর ভাংচুর মালামাল এবং নগদ টাকা লুট কোনটিই করি নাই। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর সাবেক সভাপতি জালাল ফকিরের নেতৃত্বে খুরিয়ার খেয়াঘাট এলাকায় চাঁদা বাজি চলছিল। আমি তা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি এ জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ আনা হয়েছে।