এস চাঙমা সত্যজিৎ
স্টাফ রিপোর্টারঃ
কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় আজ ২৪ আগষ্ট ২০২৪ শনিবার রাত ১০টায় কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৬টি স্পিলওয়ের গেট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হবে। এজন্য ভাটি অঞ্চল আতঙ্কিত না হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, যেটুকু পানি নির্গমন হবে, তাতে কর্ণফুলী নদী বা ভাটি অঞ্চলে কোনো প্রভাব পড়বে না।
গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছেছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এটিএম আব্দুজ্জাহের দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'শনিবার (২৪ আগষ্ট ২০২৪) বিকেল ৩টা পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে পানি আছে ১০৭.৬৬ এমএসএল (মিন সি লেভেল)। যেখানে সর্বোচ্চ পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। রাত ১০টায় সবকটি অর্থাৎ ১৬টি স্পিলওয়ের গেট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হবে পানি নির্গমনের জন্য।'
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির সিভিল মেন্টেইন্যান্স বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিলাদ হোসেন বলেন, '১৬টি স্পিলওয়ের গেটগুলো সর্বোচ্চ ২৬ ফুট খোলা যায়। ৬ ইঞ্চি গেট খোলা হলে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউবিক ফুট পানি নির্গমন হবে। যা কোনো প্রভাবই ফেলবে না। সাধারণ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট চললেও প্রতি সেকেন্ডে ৩২-৩৩ হাজার কিউবিক ফুট (সিএফএস) পানি নির্গমন হয়। সে তুলনায় ৬ ইঞ্চিতে খুব বেশি পানি নির্গমন হবে না।'
চট্টগ্রাম শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে, রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই উপজেলায় বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে কৃত্রিম হ্রদ সৃষ্টি করা হয় ১৯৬২ সালে। এর ফলে ৬৫৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়। বাস্তুচ্যুত হয় প্রায় এক লাখ মানুষ। ওই সময় ৪,২৫০ বর্গমাইল আয়তনের ক্যাচমেন্ট এরিয়া নিয়ে গড়ে তোলা এই হ্রদই বিদ্যুৎকেন্দ্রের শক্তি উৎপাদনের জলাধার হিসেবে কাজ করে।
বৃষ্টির পাশাপাশি লেকের উপরিভাগে অবস্থিত ভারতের লুসাই পাহাড়ের ঢল ও সেখানে বৃষ্টিপাত হলেও লেকে পানি প্রবাহিত হয়। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের টারবাইন ঘুরিয়ে পানি নির্গমন হয় হালদা ও কর্ণফুলীর মোহনা।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির পাঁচটি ইউনিটের মোট উৎপাদন সক্ষমতা ২৩০ মেগাওয়াট। বর্তমানে সবকটি ইউনিট চালু থাকলেও সর্বোচ্চ ২১৯ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। কাপ্তাই বাঁধের উচ্চতা ১২৭ ফুট। বৃষ্টির মৌসুমে রিজার্ভারে সর্বোচ্চ ১০৯ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত পানি সংরক্ষণ করা হয়। পানির উচ্চতা ১০৮ এমএসএল পর্যন্ত পৌঁছালে স্পিলওয়ে ডিসচার্জের মাধ্যমে ছাড়া হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এস চাঙমা সত্যজিৎ
স্টাফ রিপোর্টার প্রথম বুলেটিন।