এস চাঙমা সত্যজিৎ
স্টাফ রিপোর্টারঃ
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড় উপজেলার পাতাছড়া ইউনিয়নের পাহাড়ি গৃহবধুকে ধর্ষণের প্রতিবাদে এবং ধর্ষক মো. ইউসুফসহ জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার হিল উইমেন্স ফেডারেশ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সঙ্ঘ।
আজ শুক্রবার ২৩ আগস্ট ২০২৪ বিকাল ৩টায় সাজেক পর্যটন সড়কের উজোবাজার এলাকায় এই বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়।
মিছিল পরবর্তী উজোবাজারের ইউপিডিএফ কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার অর্থ সম্পাদক সমবালা চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সহসাধারণ সম্পাদক অর্চনা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সঙ্ঘের বাঘাইছড়ি উপজেলা কমিটির সভাপতি অর্চি চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি পলেন চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি বীর চাকমা।
বক্তারা বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে রাতের অন্ধকারে রামগড়ে পাহাড়ি গৃহবধুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, রামগড়ের এই ধর্ষণের ঘটনা বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন ও পাহাড়িদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার যে ষড়যন্ত্র এটি তারই অংশ। ১৯৯৬ সালে কল্পনা চাকমাকে অপহরণসহ এ যাবত যত পাহাড়ি নারী ধর্ষণ-নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে তার কোনটিরই সুষ্ঠু বিচার না হওয়ায় বার বার এ ধরনের বর্বর ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে।
বক্তারা আরও বলেন, দেশে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনো সেই ফ্যাসিস্ট সরকারের সেনাশাসন বলবৎ রাখা হয়েছে। ফলে সম্প্রতি আমরা দেখতে পেয়েছি সমতলের ন্যায় পাহাড়ের শিক্ষার্থীরা গ্রাফিতি অঙ্কন ও দেয়াল লিখন করতে গেলে সেনাবাহিনীর বাধা ও হামলার সম্মুখীন হচ্ছে। এতেই প্রমাণ হচ্ছে, সমতলের জনগণ ফ্যাসিস্ট শাসন থেকে মুক্তি পেলেও পাহাড়ের জনগণ এখনো স্বৈরাচারি শাসনের কবলে রয়েছে। আমরা অবিলম্বে এ ধরনের বৈষম্য ও নিপীড়নের অবসান চাই।
বক্তারা বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসন জিইয়ে রেখে বৈষম্যহীন, নিপীড়নমুক্ত ও প্রকৃত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা কখনো সম্ভব নয়। আর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্দেশ্য-লক্ষ্যও পূরণ হবে না। তাই পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রকৃত গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অন্তর্বতীকালীন সরকারকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে রামগড়ে পাহাড়ি গৃহবধুকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত মো. ইউসুফসহ সকল অপরাধীকে গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, সেটলার বাঙালিদের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সমতলে সম্মানজনক পুনর্বাসন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারীর ওপর সহিংসতা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
এস চাঙমা সত্যজিৎ
স্টাফ রিপোর্টার প্রথম বুলেটিন।