today visitors: 5073432

খুঁড়িয়ে হাঁটছে কুড়িগ্রামের রাজারহাট সেটেলমেন্ট অফিস

কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
রোববার, ০৪ আগষ্ট ২০২৪ ইং ১২:০১ এএম.

ব্যাপক জনবল সংকটে ধুঁকছে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস। অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন কর্মচারী দিয়ে খুঁড়িয়ে চলছে অফিসের কার্যক্রম। এতে করে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তাসহ ১৭টি পদ রয়েছে। তবে রাজারহাট অফিসে দীর্ঘদিন ধরে ১৫টি পদ শূন্য। সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তার পদে কাগজে-কলমে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন খাদেমুল ইসলাম নামের একজন। তবে তিনি একই সঙ্গে ১১টি উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হওয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্তির পর গত ৮ মাসে এক দিনও রাজারহাট অফিসে আসতে পারেননি।

এদিকে অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন এই অফিসের একমাত্র পেশকার শামস কিবরিয়া। তবে তিনিও তাঁর মূল কর্মস্থল ফুলবাড়ীর পাশাপাশি কুড়িগ্রাম সদর ও রাজারহাট উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন। এ ছাড়া অফিসের কাজে প্রায়ই তাঁকে যেতে হয় রংপুর জোনাল অফিসে। ফলে গত ৬ মাসে অধিকাংশ সময় রাজারহাট সহকারী সেটেলমেন্ট অফিস ছিল তালাবদ্ধ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাসে দু-একবার অফিসের তালা খোলা হলেও অল্প সময়ের মধ্যেই কাজ সেরে পেশকার চলে যান অন্য অফিসে। এতে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে রাজারহাট সহকারী সেটেলমেন্ট অফিস। সাধারণ মানুষ জমির মাঠ পর্চা, সিএস, আরএস খতিয়ানের কপিসহ অন্যান্য কাগজপত্র এ অফিস থেকে উত্তোলন করতে পারছেন না। বিশেষ করে জমি রেজিস্ট্রি ও ব্যাংক ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে রাজারহাট সেটেলমেন্ট অফিস বন্ধ থাকায় প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মানুষ ফিরে যাচ্ছেন সেবা না পেয়ে।

উপজেলা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিস সেবা নিতে আসা ছিনাই ইউনিয়নের রামরতন মৌজার আজিজুল হক জানান, আগে আরও দু’দিন এসেছেন জমির পর্চা উঠানোর জন্য। তবে অফিস বন্ধ থাকায় কাগজ উঠাতে পারেননি। চাকিরপশার ইউনিয়নের তালুক আষাঢ়ু গ্রামের মাইদুল ইসলাম জানান, ৬ মাসে যতবার এসেছেন, ততবারই অফিসটি বন্ধ পেয়েছেন। ফলে জরুরি প্রয়োজনে জমির কাগজ উঠাতে পারছেন না।

উপজেলার চান্দামারী ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক জাকির হোসেন জানান, অফিসটি বন্ধ থাকায় অনেক মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। প্রায় দুই মাস আগে একবার অফিস খোলা পেয়ে ওই দিন আংশিক পর্চা উঠিয়েছিলেন। বাকি অফিস বন্ধ থাকায় তুলতে পারেননি।

এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে রাজারহাট উপজেলা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসের ভারপ্রাপ্ত পেশকার শামস কিবরিয়া জানান, রাজারহাট ছাড়াও তাঁকে অতিরিক্ত দুটি উপজেলায় দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। তার ওপর প্রায়ই অফিসের কাজে রংপুর জোনাল অফিসে যেতে হয়।
রংপুর সদরের সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা ও রাজারহাট উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খাদেমুল ইসলাম প্রায় ৮ মাস আগে রাজারহাটে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। এর পর এক দিনও অফিসে আসতে পারেননি। এ কথা স্বীকার করে তিনি জানান, জনবল সংকটের কারণে সমস্যা হচ্ছে। তবে দ্রুতই এ সংকট কেটে যাবে। নতুন জনবল নিয়োগ করা হচ্ছে।