আবু আনছারী, নাগেশ্বরী কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামে গতকাল রোববার সন্ধ্যার পর থেকে জেলার নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। সমতল এলাকার পানি নামছে, কিন্তু ধীরে ধীরে। গতকাল রোববার রাতে এবং আজ মঙ্গলবার সকালে বৃষ্টি না হওয়ায় মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি দেখা দিয়েছে। তবে বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য ও গোখাদ্যের সংকট বাড়ছে। জেলায় এখনো প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (০৯ জুলাই) বিকেল ৩টায় কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ব্রহ্মপুত্র নদের নুনখাওয়া পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ সে.মি পানি কমে বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুধকুমোর নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রাম সদর পয়েন্টে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নাগেশ্বরী উপজেল রায়গঞ্জ ইউনিয়ন চর দামালগ্রাম, ঘুরে দেখা যায়,কোনো কোনো মানুষের বসতবাড়ি ও ঘর থেকে এখনো পানি নামেনি। অনেকের ঘরে এখনো হাটু পানি রয়েছে। এসব বানভাসি মানুষ কলার ভেলা ও নৌকায় আশ্রয় নিয়ে আছে।
রায়গঞ্জ ইউনিয়নের চর দামালগ্রামের জায়দা বেগম বলেন, ‘আমার বাড়িত পানি নামে নাই, আমরা বাড়িত আমরা ৮ জন মানুষ আছি। কোনো বেলা খেয়া আছি কোনো বেলা না খেয়া আছি। ২২ দিন ধরি পানি বাড়িতে,অন্যের জমিতে বাড়ি, অন্যের কল থেকে পানি আনি খায়। চৌকির উপর চুলা করি রান্না করি খায়,২২ দিনে একবার সরকারি সহায়তা পাইছি।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও দুর্যোগ শাখা জানিয়েছে, কুড়িগ্রামের ৭৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৬টি ইউনিয়নের মোট ১ লাখ ৬৩ হাজার ৪০৩ জন মানুষ বন্যায় পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ ভেঙ্গে জেলার ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
ত্রাণ ও দূর্যোগ শাখা আরও জানায়, এখন পর্যন্ত ৩৫টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ২ হাজারে মতো মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যার্তদের মাঝে ৩৯৭ মে.টন চাল এবং ২৩ হাজার শুকনা খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়।