মাওলানা মাহবুবুর রহীম:
দেখতে দেখতে চারটি বছর পার হয়ে গেলো। সুদীর্ঘ প্রায় অর্ধ-শতাব্দীকাল যাবত একটানা বিলাতে ইসলাম প্রচার ও প্রসারে গৌরবময় ও আলোকিত একটি নাম শামসুল উলামা হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (রহ.) এর অন্যতম খলিফা, ইউকে ওলামা সোসাইটি’র প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি ও আনজুমানে আল-ইসলাহ ইউকে’র প্রতিষ্ঠাতা, লন্ডন দারুল হাদীস লাতিফিয়ার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, বৃটেনে বাংলাদেশী শীর্ষ ওলিয়ে কামিল, প্রখ্যাত বুযুর্গ, শায়খুল হাদীস, উস্তাযুল ফুকাহা ওয়াল মুফাসসিরিন, রঈসুল কুররা, মুফতিয়ে আযম, হযরত আল্লামা মুফতি মুজাহিদ উদ্দীন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব (রহ.) ছিলেন সলফে সালেহীনের সুযোগ্য উত্তরসুরী। তিনি ছিলেন একটি প্রতিষ্ঠান, একটি উৎকৃষ্টতর চিন্তাচেতনার আলোকবর্তিকা। ইলমে হাদিস, ইলমে তফসীর, ইলমে ফিকহ, ইলমে ক্বিরাত, ইলমে তাসাউফ, দাওয়াত-তাবলিগ, সমাজ সংস্কার, ওয়াজ-নসিহত, শিক্ষকতা, আরবী, উর্দু ও বাংলা ভাষায় বই রচনা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসলামের খেদমতে ছিল তাঁর সরব উপস্থিতি। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, মিশর, ইয়েমেন, সিরিয়া, কুয়েত, ফিলিস্তিন, ইরাক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্দান-সহ পৃথিবীর বহু দেশের আকাবির উলামায়ে কেরামের সঙ্গে উঠা বসার সুযোগ হয়েছে তাঁর। সে সব দেশের মশহুর মুহাক্কিক উলামা-মাশায়িখদের সাথে ইলমী আলোচনা করেছেন, হাদীসের সনদ আদান-প্রদান করেছেন। তিনি যেন এক জীবন্ত কিংবদন্তি। তিনি এক বৈচিত্র্যময় অভিজ্ঞতা ও মহান ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন। তিনি আপন কর্মের দ্বারা তাঁর মুরিদীন-মুহিব্বীন-সহ সর্বস্তরের মানুষের হৃদয়ে বিশাল এক জায়গা দখল করে গেছেন। বিশেষ করে তিনি সিলেটের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি বিদ্যাপীঠ সৎপুর দারুল হাদীস কামিল মাদরাসার প্রবীণ আসাতাযায়ে কেরামগণের অন্যতম ছিলেন। তাঁর সময়ে উক্ত মাদরাসা বিশেষ প্রশংসিত হয়। মাদরাসার ইতিহাসে সর্বপ্রথম যে তিনটি প্রথম বিভাগ আসে এর পেছনে তাঁরও অক্লান্ত পরিশ্রম জড়িয়ে আছে। এর মধ্যে একজন ছিলেন (আমার শ্রদ্ধেয় পিতা) শায়খুল হাদীস মাওলানা মো. আব্দুল মজিদ (রহ.) এবং বাকি দু’জন হলেন শায়খুল হাদীস মাওলানা মো. রইছ উদ্দিন হামযাপুরী (রহ.) ও মাওলানা ইমাদ উদ্দিন ওরফে সাজিদুর রহমান (রহ.)। ফলে সৎপুর দারুল হাদীস কামিল মাদরাসার সুনাম ও অগ্রগতির পেছনে আল্লামা দুবাগী ছাহেবের অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশের প্রবীণ আলিম-ওলামা ও তৎকালীন তরুণগণের কাছে তিনি ‘দুবাগী ছাব’ এবং ‘দুবাগী হুজুর’ নামে খ্যাত ছিলেন।
আল্লামা মুফতি মুজাহিদ উদ্দিন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব (রহ.) সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলাস্থ দক্ষিণ দুবাগ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯২৯ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম মো. আপ্তাব আলী চৌধুরী। মাতা মরহুমা বিবিজান খাতুন চৌধুরী। পিতা ছিলেন একজন মুত্তাকী-পরহেজগার ব্যক্তিত্ব। মাতা ছিলেন তাপসী, আবেদা-ছালেহা ওলীয়াতুল্লাহ। তিনি বিশেষ দোয়া করলে তা আল্লাহ পাক কবুল করে নিতেন বলে মশহুর ছিল। আল্লামা দুবাগী ছাহেব রহ. প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেন পিতামাতার নিকট। তিনি বাল্যকালে মহীয়সী মাতাকে হারান। এর পর তাঁকে ভর্তি করা হয় স্থানীয় মক্তবে। বাড়ি সংলগ্ন জামে মসজিদে ১ বছর জ্ঞানার্জনের পর তাঁকে ভর্তি করা হয় দক্ষিণ দুবাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানে ২ বছর প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পর ভর্তি করা হয় মাথিউরা কেন্দ্র পাঠশালায়। উক্ত প্রতিষ্ঠানে ৩ বছর অধ্যয়নের পর তাঁকে ভর্তি করা হয় ইলমে ক্বিরাতের বিশেষজ্ঞ হযরত ক্বারী মাওলানা বশির উদ্দিন ছাহেব (রহ.) এর কোনাগ্রাম ক্বারীয়ানা মাদরাসায়। উক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্লাসগুলোর কোর্স শেষ করতে যেখানে অনেকের ৬ থেকে ১০ বছর সময় লাগে সেখানে আল্লামা দুবাগী ছাহেব (রহ.) মাত্র ৩ বছরে কোর্সগুলো বেশ দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করেন। এর পর তাঁকে ভর্তি করা হয় তদানিন্তন ঐতিহ্যবাহী গাছবাড়ী জামিউল উলূম কামিল মাদরাসায়। উক্ত মাদরাসায় তাঁর প্রখর ধীশক্তির বিকাশ ঘটে। সবার কাছে তাঁর অচিন্তনীয় মেধার পরিচয় ফুটে উঠে। তিনি ছরফ, মীজান, মুনশাইব, পাঞ্জগঞ্জ, নহমীর, হেদায়াতুন্নাহু, মীজান (ফার্সী), মছদর, ছিরাজী, ফরাইজ প্রভৃতি শাস্ত্র ক্লাসগুলোতে কন্ঠস্থ করে কৃতিত্ব দেখান। অতঃপর উক্ত মাদরাসা থেকে ১৯৫৬ সালে দাখিল, ১৯৫৮ সালে আলিম এবং ১৯৬০ সালে ফাজিল জামাত অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ও তীক্ষ্ণ জ্ঞানের অধিকারী। আলিম পরীক্ষায় মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে সম্মিলিত মেধা তালিকায় স্টার মার্কসসহ বৃত্তি পান। অতঃপর সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসা থেকে ১৯৬২ সালে কামিল কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন। কামিল বার্ষিক পরীক্ষায় সিলেট আলিয়া মাদরাসার ক্বাদিরিয়া বৃত্তি লাভ করেন। কামিল ক্লাসে অধ্যয়নকালে সম্মানিত ব্যক্তিগণের অনুরোধে তিনি সিলেট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব পালন করেন।
আল্লামা দুবাগী ছাহেব (রহ.) ছিলেন একজন বিখ্যাত বাগ্মী ও মুনাযীর। তিনি বাংলা, উর্দু, ফারসী ও আরবিতে অনর্গল বক্তৃতা দিতে পারতেন। ইংরেজি ভাষায় ছিল তাঁর ভালো দখল।
আল্লামা মুফতি মুজাহিদ উদ্দীন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব (রহ.) কর্মজীবনে বাংলাদেশে অবস্থানকালীন বিভিন্ন দ্বীনি দারসগাহে অধ্যাপনা করেন। তিনি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ, শায়খুল হাদীস ও মুফতী হিসাবে ইলমে দ্বীনের খিদমত করেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান হলো- সৎপুর দারুল হাদিস কামিল মাদরাসা, শ্রীমঙ্গল আনওয়ারুল উলূম ফাজিল মাদরাসা, মুকিমপুর সিনিয়র মাদরাসা, দাসউরা সিনিয়র আলিম মাদরাসা (বিয়ানীবাজার), তাহিরপুর ইত্তেফাকিয়া আলিম মাদরাসা (নবীগঞ্জ), আটগ্রাম আমজাদিয়া মাদরাসা (জকিগঞ্জ) এবং মেওয়া কুদছিয়া মাদরাসায় (বিয়ানীবাজার) ইলমে দ্বীনের খিদমত করে মাদরাসার ভিত্তিকে মজবুত করতে নিরলস প্রচেষ্টা চালান। এছাড়া অধ্যাপনায় বিশেষ কলাকৌশল ও দক্ষতায় তিনি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সর্বমহলের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হন।
তিনি কিতাবি ইলমে খুবই পারদর্শী ছিলেন। যখন যে বিষয়ে দারস দিতেন তখন মনে হতো সেই বিষয়েই তিনি বেশী পারদর্শী। সৎপুর মাদ্রাসায় তিনি যাবতীয় কঠিন কিতাবাদি অত্যন্ত সুনামের সাথে অধ্যাপনা করেন। যতবড় কঠিন কিতাবই দেওয়া হত না কেন, তিনি তা অত্যন্ত সহজ সরল এবং প্রাঞ্জল ভাষায় পাঠ দান করতেন। কঠিন থেকে কঠিন বিষয়কেও বিভিন্ন উদাহরণের মাধ্যমে সহজ করে ব্যক্ত করার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অতুলনীয়। ক্লাসের দুর্বল ছাত্রও তাঁর দরস বুঝতে বেগ পেতে হত না। তিনি অনেক ধৈর্যশীল, সময়ানুবর্তিতা এবং নিয়মানুবর্তিতার পাবন্দী ছিলেন। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কঠোর রীতি মেনে চলতেন।
আল্লামা দুবাগী ছাহেব (রহ.) সৎপুর দারুল হাদীস কামিল মাদরাসায় নিয়োগ হওয়ার পর মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তাঁকে কেন্দ্র করে প্রথমবারের মতো দারুল ইফতা বা ফতওয়া বিভাগ কায়েম করেন এবং তিনি প্রধান মুফতির দায়িত্ব পালন করেন। ফতোয়াদানের ক্ষেত্রে তাঁর গভীর দৃষ্টিভঙ্গি ও মৌলিকত্বের কারণে ধীরে ধীরে তাঁর মাধ্যমে ফতওয়া বিভাগের সুনাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিজ্ঞ মুফতিয়ানে কেরাম দুবাগী সাহেবের নিকট তাঁদের ফতওয়া সত্যায়নের জন্য প্রেরণ করা আরম্ভ করেন। যুক্তরাজ্যে তিনি ‘মুফতিয়ে আযম বাংলাদেশ’’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন ।
আল্লামা মুফতি মুজাহিদ উদ্দীন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব (রহ.) এর অসংখ্য ছাত্রবৃন্দ রয়েছেন যারা দেশ-বিদেশে ইলমে-দ্বীনের খেদমত, তরীকতের খিদমত চালিয়ে গেছেন এবং চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত হয়েছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য শাগরিদবৃন্দ হলেন- আল্লামা শিহাব উদ্দিন চৌধুরী ছাহেবজাদায়ে ফুলতলী। শায়খুল হাদিস মাওলানা আব্দুল হাই ছাতকী, প্রাক্তন মুহাদ্দিস, সৎপুর দারুল হাদিস কামিল মাদরাসা। শায়খুল হাদিস মাওলানা রইছুদ্দীন হামজাপুরী (রহ.), প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ ও মুহাদ্দিস,সৎপুর দারুল হাদিস কামিল মাদরাসা। শায়খুল হাদীস মাওলানা মো. আব্দুল মজিদ (রহ.), প্রাক্তন মুহাদ্দিস, বুরাইয়া কামিল মাদরাসা এবং ইছামতি দারুল উলূম কামিল মাদরাসা; প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ- মাথিউরা সিনিয়র ফাযিল মাদরাসা; প্রাক্তন আরবি প্রভাষক, সিংচাপইড় ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা। শায়খুল হাদিস মাওলানা শামসুল হুদা (রহ.), প্রাক্তন মুহাদ্দিস, ইছামতি দারুল উলুম কামিল মাদরাসা। মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সিদ্দিকী (রহ.), প্রাক্তন অধ্যক্ষ, মৌলভী বাজার টাউন কামিল মাদরাসা। মাওলানা মো. তৈয়্যিবুর রহমান (রহ.), প্রাক্তন অধ্যক্ষ, বিশ্বনাথ দারুল উলুম ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা। মাওলানা মাশুক আহমদ (রহ.), প্রাক্তন অধ্যক্ষ, ইছামতি দারুল উলুম কামিল মাদরাসা, জকিগঞ্জ। মাওলানা শফিকুর রহমান পাখিছিরী, প্রাক্তন অধ্যক্ষ, সৎপুর দারুল হাদিস কামিল মাদরাসা। মাওলানা মুহিবুর রহমান (রহ.), প্রাক্তন অধ্যক্ষ, হবিবপুর কেশবপুর ফাযিল মাদরাসা, সুনামগঞ্জ। মাওলানা কমর উদ্দিন (রহ.), প্রাক্তন অধ্যক্ষ, রসুলগঞ্জ জামেয়া কুরআনিয়া ফাজিল মাদরাসা, জগন্নাথপুর। মাওলানা মো. শফিকুর রহমান (রহ.), প্রাক্তন সুপার, থানাবাজার দাখিল মাদরাসা, জকিগঞ্জ। মাওলানা ইলিয়াস উদ্দিন (রহ.), প্রতিষ্ঠাতা সুপার, নূতন বাজার দাখিল মাদ্রাসা, ধারন বাজার, ছাতক, সু্নামগঞ্জ। মাওলানা মো. আব্দুশ শহীদ ঘোরী, প্রাক্তন সুপার, দিনারপুর আইনগাঁও দাখিল মাদরাসা, নবীগঞ্জ। মাওলানা আব্দুল হক নুমানী, প্রাক্তন ইমাম ও খতিব, বাংলাদেশি ইসলামিক সেন্টার এন্ড জামে মসজিদ, লজেলস, বার্মিংহাম, ইউকে। মাওলানা ইসহাক আহমদ, প্রাক্তন ইমাম ও খতিব, মদিনা মসজিদ ওল্ডহাম, ইউকে। মাওলানা মো. আব্দুল আলি, প্রাক্তন ইমাম ও খতিব শাহজালাল জামে মসজিদ, ওয়ালসল, ইউকে। মাওলানা হাফিজ নজির আহমদ (রহ.), প্রাক্তন ইমাম ও খতিব, হাইড জামে মসজিদ, ইউকে। মুফতি ইলিয়াস হোসেন, প্রাক্তন অধ্যক্ষ, লন্ডন দারুল হাদিস লতিফিয়া মাদরাসা। মাওলানা নজরুল ইসলাম মিটুপুরী, প্রাক্তন সুপার, গিয়াস নগর দাখিল মাদরসা, কুলাউড়া। মাওলানা আব্দুল মতিন (রহ.), প্রতিষ্ঠাতা ও মুহতামিম, ভুরকি হাবিবিয়া হাফিজিয়া দাখিল মাদরাসা। মাওলানা আব্দুল কাদির ঘোড়াডুম্বুরী (রহ.), প্রাক্তন আরবি প্রভাষক- বুরাইয়া কামিল মাদরাসা। মাওলানা নজমুল হুদা, প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ, রাখালগঞ্জ দারুল কোরআন ফাজিল মাদরাসা। মাওলানা ক্বারী জমির উদ্দিন (রহ.), প্রাক্তন ইমাম ও খতিব, কুদরতউল্লাহ জামে মসজিদ। মাওলানা মো. আব্দুল মালিক, প্রাক্তন আরবি প্রভাষক, ফতেহপুর কামিল মাদরাসা। মাওলানা মো. হবিবুর রহমান, প্রাক্তন অধ্যক্ষ, রাখালগঞ্জ দারুল কোরআন ফাজিল মাদরাসা। মাওলানা আব্দুল হালিম, প্রতিষ্ঠাতা ও সুপার, শাহ পরান দাখিল মাদরাসা, নবীগঞ্জ। মাওলানা হাফিজ রহমতুল্লাহ (রহ.), প্রতিষ্ঠাতা, সৎপুর দারুল হিফজ মাদরাসা। মাওলানা আব্দুস সালাম আল-মাদানী, অধ্যক্ষ, গোবিন্দনগর ফজলিয়া ফাজিল মাদরাসা, ছাতক। মাওলানা মুফতি এ কে এম মনোওর আলী, অধ্যক্ষ, কামাল বাজার ফাজিল মাদরাসা ও মহাসচিব, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ। মাওলানা রফিকুল হক, প্রাক্তন ইমাম ও খতিব, মদিনা মসজিদ ওল্ডহাম, ইউকে। মাওলানা আজিম উদ্দিন (রহ.), প্রাক্তন ইমাম ও খতিব, ডারল্যাস্টন সুন্নি জামে মসজিদ, বার্মিংহাম, ইউকে। মাওলানা মো. ফখরুল ইসলাম (রহ.), প্রাক্তন ইমাম ও খতিব, শাহজালাল মসজিদ, কিথলী, ইউকে, উপাধ্যক্ষ- জকিগঞ্জ ফাজিল মাদরাসা, খতীব, জকিগঞ্জ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। মাওলানা আবু আহমদ হিফজুর রহমান (রহ.), প্রাক্তন ইমাম দারুল উম্মাহ, লন্ডন। মাওলানা আবু জাফর মুহাম্মদ নুমান, অধ্যক্ষ, সৎপুর দারুল হাদিস কামিল মাদরাসা। মাওলানা আব্দুল মোছাব্বির, সহযোগী অধ্যাপক, সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসা। মাওলানা মো. আব্দুন নুর, অধ্যক্ষ, মোস্তফাপুর আনোয়ারুল উলুম আলিম মাদরাসা, হবিগঞ্জ। মাওলানা ছরওয়ারে জাহান, অধ্যক্ষ, চান্দাইরপাড়া সুন্নিয়া হাফিজিয়া ফাজিল মাদরাসা, বালাগঞ্জ, সহ-সভাপতি- বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ। মাওলানা হাফিজ আব্দুল জলিল, ইমাম ও খতিব দারুস সালাম মসজিদ, লেস্টার, ইউকে। মাওলানা মো. মাশহুদ ইকবাল, ইমাম ও খতিব, নর্থ ব্রঙ্কস জামে মসজিদ অ্যান্ড ইসলামিক সেন্টার, ইউএসএ। মাওলানা শরিফ উদ্দিন, ইমাম ও খতিব, নিউ জার্সি মসজিদ, ইউএসএ।
দ্বীন ইসলামের প্রচার ও ইলমে দ্বীনের খিদমত আঞ্জাম দেয়ার মহৎ উদ্দ্যেশ্যে আল্লামা মুজাহিদ উদ্দিন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব (রহ.) ১৯৭৮ সালের ১ জানুয়ারি স্থায়ী বসবাসের জন্য বৃটেন গমন করেন। বৃটেনে বাংলাদেশী কমিউনিটির সবচেয়ে প্রবীন আলেমে দ্বীন হিসেবে তিনি পরিগনিত। সেখানে প্রথমে তিনি লেস্টার শহরে বসবাস করতেন এবং তাঁকে বলা হতো ‘লেস্টারের ছাহেব’। তিনি হয়ে উঠেন সকল মত ও পথের আলেমগণের শ্রদ্ধাভাজন মুরুব্বি। ধীরে ধীরে তাঁর বুযুর্গি সর্বমহলে ছড়িয়ে পড়ে। উল্লেখ্য যে, আল্লামা দুবাগী ছাহেব ছিলেন যুক্তরাজ্যে জৈনপুরী-ফুলতলী মতাদর্শের প্রথম আলিমে দ্বীন। তিনি সর্বপ্রথম মসলকের ভিত্তিস্থাপন করেন। পরে একই বছর ১৯৭৮ সালের ২রা জুন শামসুল উলামা হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (রহ.) প্রথমবারের মত বৃটেন সফর করেন। দুবাগী ছাহেব নিজের পরিচিত ও মতাদর্শীগণকে নিয়ে ফুলতলী ছাহেব (রহ.)কে এক বিশাল ঐতিহাসিক অভ্যর্থনা জানান। তিনি বিভিন্ন কমিউনিটির মানুষের মধ্যে স্পৃহা যুগিয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে ফুলতলী ছাহেবের ওয়াজ-নসিহত মাহফিলের ব্যবস্থা করেন। এছাড়া এই মহতি কাজে নানা জাতি ও ভাষাভাষীর মানুষকে সম্পৃক্ত করতে তিনি বাংলার পাশাপাশি ইংরেজী, উর্দু, হিন্দী এবং গুজরাটি ভাষায়ও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে মানুষজনকে আগ্রহান্বিত করে তুলেন। এই সফরেই দুবাগী ছাহেব স্বীয় পীর ও মুর্শিদ আল্লামা ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী (রহ.) এর সাথে বৃটেনে মুসলমানদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের দ্বীনি শিক্ষার কথা আলোচনা করে মাদরাসা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবনা ও পরিকল্পনা করেন। ফুলতলী ছাহেব (রহ.) এ সফরেই লন্ডনে মাদরাসার ভিত্তিস্থাপন করেন। তখন মাদরাসার নাম ছিল মাদরাসা-এ-দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া। পরবর্তীতে এই মাদরাসার নামকরণ হয় লন্ডন দারুল হাদীস লাতিফিয়া।
সৈয়দপুরে হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (রহ.) এর উপর নির্মম হামলার পর ১৯৮০ সালে দুবাগী ছাহেব যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরের মুরব্বিয়ানকে নিয়ে লেস্টার শহরে এক সভার আয়োজন করে বিলাতে সর্বপ্রথম আনজুমানে আল-ইসলাহ প্রতিষ্ঠা করেন। বৃটেনে তিনি ফুলতলী মসলকের নীতিনির্ধারক ছিলেন। তাই দুবাগী ছাহেবের কারণে লেস্টারই ছিল মছলকের হেডকোয়াটার বা প্রধান কেন্দ্র। এই লেস্টারেই ফুলতলী ছাহেব সর্বপ্রথম গমন ও অবস্থান করেছিলেন। আর প্রথমে সেখানেই মছলকি মসজিদ মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনাও ছিল। পরে শহরকেন্দ্রিক মসজিদ-মাদরাসা প্রতিষ্ঠা বেশী গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় লন্ডনকে বেছে নেয়া হয়। পরে দুবাগী ছাহেবও লন্ডনে চলে আসেন।
মোদ্দাকথা, বৃটেনে তখন মছলকের সব কার্যক্রম পরিচালিত হত দুবাগী ছাহেব (রহ.) এর মাধ্যমে।
হযরত আল্লামা দুবাগী ছাহেব (রহ.) ছিলেন উস্তাযুল উলামা, প্রখ্যাত মুফতি, শায়খুল হাদীস, মুফাসসির ও উঁচু মার্গীয় প্রথম শ্রেণির ক্বারী। তাকওয়া ও পরহেজগারীসহ বহুগুণের অধিকারী এমন বিশিষ্ট বুযুর্গ ব্যক্তিত্ব ক্ষণজন্মা হয়ে থাকেন। অনেক যুগ কিংবা শতাব্দীর পর এমন বিরল গুণসম্পন্ন ব্যক্তিত্বকে পাওয়া যায়। তাদের কারো সংস্পর্শে আসা মহা সৌভাগ্যের বিষয় হয়ে থাকে।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, তাঁর শাগরেদগণের অনেকেই ছিলেন যুগের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস, মুফতি, মুফাসসির ও ক্বারী। তাদের স্মৃতিচারণ হলো- আল্লামা মুফতি মুজাহিদ উদ্দীন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব (রহ.) ছিলেন সুন্নতে নববীর প্রতিকৃতি। তাঁর অনুসরণ-অনুকরণে নিঃসন্দেহে সুন্নতের অনুসরণ-অনুকরণ হয়ে যেত। ফিকহের ক্ষেত্রে তিনি যেকোনো কঠিন মাসআলা-মাসায়েলের জবাব দিতেন সাথে সাথেই। যেন এক জীবন্ত ফিকহের কিতাব ছিলেন। তাফসির আর ইলমে নাহু-ছরফ, ফরাঈজ ও বালাগতে পাণ্ডিত্যপূর্ণ জ্ঞানের অধিকারী আল্লামা দুবাগী ছাহেব (রহ.) যে-কোন কঠিন পরিস্থিতিতে দালিলিক সমাধান দিতে পারদর্শীতা দেখাতেন। তাঁর দেয়া ফতোয়া, ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্ত সর্বদলীয় ওলামায়ে কেরামের কাছে ঐক্যমতে গ্রহণীয় হতো।
ইলমে দ্বীনের খিদমতে নজির স্থাপনকারী আল্লামা মুফতি মুজাহিদ উদ্দীন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব (রহ.) অসংখ্য গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। তন্মধ্যে মীলাদে বেনযীর, মানাছুল মুফতি, আল মাসাইলুন্নাদিরাহ, ও ফাতওয়ায়ে মুজাহিদিয়া বেশ প্রসিদ্ধ গ্রন্থ। তাঁর রচিত প্রকাশিত গ্রন্থাবলীর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হলো- ১. মীলাদে বেনযীর ২. মানাছুল মুফতি (উর্দু) ৩. এক নজরে হজ্জ্ব ও যিয়ারত ৪. ফাদ্বাইলে শবে বরাত ৫. পূণ্যের দিশারী ৬. ফাতওয়ায়ে মুজাহিদিয়া ৭. ফাতেহা ও কবর জিয়ারতের মাসাইল ৮. আল-মাসাইলুন্নাদিরাহ (উর্দু) ৯. দোয়ার মাহাত্ম্য ১০. মানাছুল মুফতির বঙ্গানুবাদ ১১. বিবিধ মাসাইল ১২. কদমবুছির তথ্য ১৩. জানাযার নামাজের পর দোয়া ১৪. শবে ক্বদরের তাৎপর্য ১৫. সুন্নত ও নফল নামাজের জরুরী মাসাইল ১৬. এতিম প্রসঙ্গে ১৭. শিফায়ে রূহ ১৮. মাসনূন দাড়ি ১৯. টুপী সুন্নত ও প্রতীক ২০. আল-মাসাইলুন্নাদিরাহ বঙ্গানুবাদ, ২১. ফাদ্বাইলে নিসফে মিন শা’বান (আরবি)।
ইলমে দ্বীনের খিদমতে আল্লামা দুবাগী ছাহেব (রহ.)-এর গ্রন্থাবলী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাঁর রচিত বেশ ক’টি পান্ডুলিপি অপ্রকাশিত হিসেবে সংরক্ষিত রয়েছে।
বৃটেনে তিনি বহুমুখী খিদমতে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। তিনি লেস্টার দারুস সালাম মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা ও খতিব ছিলেন। প্রায় চার দশক সেখানে প্রতিদিন আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত দারসে হাদিস এবং ইসলাহী নসিহত তথা আমল-আখলাক সংশোধনের নসিহত করতেন। অত্যন্ত সহজবোধ্যভাবে কুরআন, হাদীস, ইজমা ও কিয়াসের সমন্বয়ে তাঁর প্রগাঢ় আলোচনা গভীর ইলমি মাহফিলে পরিণত হতো। বিভিন্ন দেশের ইসলামি গবেষকগণও তাঁর মাহফিলে উপস্থিত হয়ে জ্ঞানার্জন করতেন। রুটিন করে প্রতি রবিবারে কোরআন থেকে তাফসীর করতেন। প্রতি বৃহস্পতিবারে নিয়মিত খানেকা তথা জিকিরের মাহফিল করতেন। এছাড়া সাত ক্বিরাতের একজন বিশিষ্ট ক্বারী হিসেবে বিশুদ্ধ ক্বিরাত প্রশিক্ষণ দিতেন। সর্বোপরি তিনি ছিলেন নির্লোভ ও নিরহংকারী পূতপবিত্র হৃদয়ের অধিকারী একজন ওলী-আল্লাহ। এছাড়া তিনি লন্ডন নিউক্রস জামে মসজিদ এবং ব্লাকবার্ন শাহ জালাল জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা। তদ্ব্যতীত যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে তাঁর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় ও পরামর্শে অনেক সংগঠন ও দ্বীনি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী এমন মহৎপ্রাণ গুণিব্যক্তিত্বের জীবন-কর্ম ও তাঁর জীবনের নানা দিক নিয়ে আলোচনা এতো সংক্ষিপ্ত পরিসরে করা অসম্ভব। ইলমে দ্বীনের খিদমত, ইলমে শরিয়ত, ইলমে মারিফত এবং খিদমে খলক ইত্যাদি ক্ষেত্রে তিনি যে বিস্ময়কর অবদান রেখেছেন এর আলোচনা বিশদভাবে করার দাবী রাখে।
একজন ওলী-আল্লার জীবনী আলোচনায় আল্লাহর বিশেষ রহমত বর্ষিত হয়। আর আল্লামা দুবাগী ছাহেব (রহ.) কেবলমাত্র একজন ওলীয়ে কামিল-ই ছিলেন না বরং তিনি শরিয়ত-মারিফতের একজন উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক ও দ্বীন ইসলামের খিদমতে সফল ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি ২০২০ সালের ১০ জুলাই শুক্রবার জুম্মার পূর্বক্ষণে ৯১ বছর বয়সে লণ্ডনের উইপক্রস হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সূরা ইয়াসিন ও কালেমা পড়তে পড়তে মাওলায়ে হাকিকী রফিকে আ’লার সান্নিধ্যে গমন করেন। লন্ডনের গার্ডেন্স অফ পিসে এই মহান ব্যক্তিত্বকে দাফন করা হয়। উল্লেখ্য যে, তাঁর ইন্তেকালের আরবি তারিখ পুণ্যভূমি সিলেটের সুলতান হিসেবে খ্যাত হযরত শাহ জালাল (রহ.) এর সাথে মিলে যায়। হযরত শাহজালাল (রহ.) পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন ৭৪০ হিজরীর ১৯ জিলকদ আর আল্লামা দুবাগী (রহ.) বিদায় নেন ১৪৪১ হিজরীর ১৯ জিলকদ।
তাঁর ইন্তেকালে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি, বৃটেনে বাংলাদেশ দূতাবাস, বিশ্বের মুসলিম-অমুসলিম অধ্যুষিত বিভিন্ন দেশের আলিম-ওলামা, নানান কমিউনিটির নেতৃস্থানীয়গণ, বড় বড় ইসলামি সংগঠনের প্রধান ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ যেভাবে শোক প্রকাশ করেছেন এবং তাদের শোকাহত শ্রদ্ধাঞ্জলি বা অভিব্যক্তি জানিয়েছেন তা একজন বাঙালি আলিম-শায়েখের ক্ষেত্রে ছিল বিরল। এমনই বিরল সম্মানজনক স্থান অধিকার করতে সক্ষম হয়েছিলেন আল্লামা মুফতি মুজাহিদ উদ্দীন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব (রহ.)। তিনি আমাদের মাঝে থেকে চিরবিদায় নিয়ে গিয়েছেন; তবে রেখে গিয়েছেন দীর্ঘ জীবনের বহু কীর্তি ও অবদান। এরকম গুণীজনদের জীবন-কর্ম আমাদের আদর্শিক পথ চলায় প্রেরণার সঞ্চার করে।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৩ ছেলে, ১ মেয়ে, অসংখ্য মুরিদীন-মুহিব্বীন, শাগরিদ-সহ বিভিন্ন শ্রেণির গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর বড় ছাহেবজাদা আল্লামা জিল্লুর রহমান চৌধুরী ছাহেব ঐতিহ্যবাহী লন্ডন ব্রিকলেন জামে মসজিদে দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ ইমাম ও খতিব হিসেবে কর্মরত। মেঝো ছাহেবজাদা মাওলানা ওলিউর রহমান চৌধুরী ছাহেব নিউ ক্রস মসজিদে ইমাম ও খতিব হিসেবে কর্মরত। ছোট ছাহেবজাদা মাওলানা মহবুবুর রহমান চৌধুরী ছাহেব কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তাঁর উত্তরসুরীগণ পিতার রেখে যাওয়া খিদমতগুলো বেশ আন্তরিকতা ও দক্ষতার সাথে চালিয়ে যাচ্ছেন। অসহায় মানুষের সেবার জন্য বাংলাদেশে স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘আল্লামা দুবাগী ট্রাস্ট’ । মহান আল্লাহ তাঁর ওলীর যাবতীয় খিদমত কবুল করুন ও কিয়ামত পর্যন্ত জারি রাখুন। তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসের উঁচু মাকাম দান করুন। আমাদেরকে তাঁর ওলীর রুহানি দোয়া এবং ফয়েজ নসিব করুন, আ-মীন।
লেখক: সিনিয়র শিক্ষক, মানিককোনা দারুল কেরাত সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসা, ফেঞ্চুগঞ্জ, সিলেট।
ছাহেবজাদা, শায়খুল হাদীস মাওলানা মো. আব্দুল মজিদ (রহ.)।