নিজস্ব প্রতিবেদক নারায়ণগঞ্জ:-
সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর দেওয়ার নাম করে নারায়ণগঞ্জ সদর এলাকার বিভিন্ন স্থানে থাকা অসহায় মানুষের কাছ থেকে সহিদুল ইসলাম শহীদ (সুলতান শহীদ)নামের এক প্রতারক হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা ।এমন সংবাদ পাওয়ার পরপরই প্রতিবেদক একটি অনুসন্ধানী টিম নিয়ে এই ঘটনার রহস্য উন্মোচন করার জন্য কৌশলগত উপায়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর এলাকায়।অনুসন্ধানের প্রথম দিকেই একটি নাম বেশ কয়েক টি প্রতারনার শিকার হওয়া নিরীহ মানুষদের কাছ থেকে উঠে আসে যে নারায়ণগঞ্জ নিতাইগজ্ঞ ট্রাক স্টান্ডের শহীদ নামে এক জনের কথা। শহীদদের পরিচয় খুজতে পাওয়া গেল নোয়াখালির ছেলে এই প্রতারক শহীদ ।বাবা আলতাফ ট্রাক ড্রাইভার হওয়ার সুবাদে আশির দশকের শেষ সময় জীবিকা নির্বাহের জন্য নোয়াখালী থেকে নারায়ণগঞ্জ পারি জন্মিয়ে ছিলেন শহীদদের বাবা আলতাফ। এই শহীদ নাকি আবার বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর সহযোগি সংগঠন শ্রমিক লীগের যুব শ্রমিক লীগ নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। খোঁজ নিয়ে জানা গেল জাতীয় শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত জনাব শুক্কুর মাহমুদের জীবিত থাকা কালিন সময় কোন রকমের একটি কমিটি গঠন করেন। আর সেই কমিটিতে জায়গা করে নেন এই চিহ্নিত প্রতারক শহীদ । কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক ছিলেন অন্য আরেক প্রতারক জিমখানার বাচ্চুর ছোট ছেলে আশিক আহম্মেদ মিঠু । মুলত এই মিঠুর হাত ধরেই শহীদ জন্ম রাজনীতির ময়দানে। আর এই রাজনীতিকে পুজি করে একের পর এক বিবাহ থেকে শুরু করে এখন নিরীহ মানুষের আবেগ কে কাজে লাগিয়ে সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের নাম দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা ।জানা যায় এই প্রতারক চক্র প্রতিটি পরিবারের কাছ থেকে ঘর দেওয়ার কথা বলে নগদ ৩৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে ।নিরীহ সহজ সরল মানুষগুলো ইকটু মাথা গোজার ঠাই পাবে সেই চিন্তা করে এই প্রতারক দের হাতে তুলে দেয় নিজেদের কষ্টে উর্পাযিত টাকা ।শুধু টাকা নিলে সন্দেহ হতে পারে তাই এই প্রতারক রা টাকার সঙ্গে ছবি ও আইডি কার্ডের কপি ও আরও কিছু কাগজ পত্র নিয়ে নিরীহ মানুষের কাছে ভালো মানুষ সাজে ।
খোজ নিয়ে আরো উঠে আসে টাকা নেওয়ার সময় প্রতিটি নিরীহ পরিবার কে বলে থাকে যাতে কেউ এই ঘর দেওয়ার বিষয়টির সম্মন্ধে না জানে। কেও জানতে না পারে তাহলে সমস্যা হবে জানলে তারা তাদের নাম দিতে চাইবে এমন বুঝ দিয়ে অভিনব এই প্রতারনা করে আসছেন এই নাম ধারী রাজনীতিবিদ প্রতারক চক্রের সদস্যরা।এরা নারায়ণগঞ্জের বেশ কয়েক টি এলাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ কে ও এদের টার্গেট করে প্রতারিত করেছেন তার মধ্যে অন্যতম জায়গা ছিলো জিমখানা এলাকার নিরীহ মানুষগুলো । এদের প্রতারণার শিকার হয়েছেন জিমখানা ,পাইকপাড়া,নামাপাড়া,জল্লারপাড়া,বাবুরাইল,দেওভোগ, সহ আরো বেশকয়েটি এলাকার প্রায় পাঁচশত থেকে এক হাজারের বেশি নিরীহ পরিবার।
প্রকৃত অর্থে আশ্রয়ণ প্রকল্প নামে পরিচিত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন একটি সরকারি প্রকল্প যার মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীন এবং যার জমি আছে ঘর নেই এমন পরিবারের জন্য বাসস্থান নির্মাণ করা হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন নোয়াখালী বর্তমান লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চরপোড়াগাছা গ্রামে ভূমিহীন-গৃহহীন, অসহায় ছিন্নমূল মানুষের পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দেশী ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মাধ্যমে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার পর দেশের গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবার পুনর্বাসনের মতো জনবান্ধব ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলো স্থবির হয়ে পড়ে। বঙ্গবন্ধু হত্যার দীর্ঘ ২১ বছর পর তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে বঙ্গবন্ধুর জনবান্ধব ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলো পুনরায় শুরু করেন।এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৭ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্টিনে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেন এবং একই বছর তিনি সারা দেশের গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে শুরু করেন “আশ্রয়ণ প্রকল্প ।
এমতঅবস্থায় এই প্রতারক চক্রের সদস্য চিহ্নিত প্রতারক শহীদুল ইসলাম শহীদ, আশিক আহম্মেদ মিঠু,সহ এই চক্রের সদস্যদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরী হয়ে পরেছে । না হলে এদের কারনে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প আর সর্বশান্ত হতে হবে এদের কাছে প্রতারিত হওয়া নিরীহ মানুষগুলো।