আমিনুল ইসলাম ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি
আমি ওভারটেক করে চলে যাচ্ছি আমাকে ডাক দিলো। আমি কাছে গেলাম গিয়ে সালাম দিলাম।
বড়: ওয়া আলাইকুম সালাম।
আমি: কিছু বলবেন ?
বড় আপু: তুই আমার সম্পর্কে সাজিদ কে কি উল্টাপাল্টা জিজ্ঞেস করছিস ?
আমি: উল্টাপাল্টা না আপু। আমি শুধু জিজ্ঞেস করছি আপনি কি করে এতো সম্মানিত হলেন।
বললাম ভয়ে ভয়ে….
বড় আপু: এসব জেনে তোর কি লাভ?
আমি: এলাকায় থাকি বড় আপুদের সম্পর্কে কিছু জানতে হয় তাই না।
বড় আপু: আর কিছু জিজ্ঞাসা করিস নাই?
আমি: হুম।
বড় আপু: আর কি জিজ্ঞেস করছিস?
আমি: আপনি বিয়ে করেছেন কি না?
বড় আপু: এসব জেনে তোর কি লাভ? বিয়ে করবি আমাকে?
আমি: না।
বড় আপু: তা তো করবি ও না কারণ আমি বুড়ি। তুই তো খুঁজিস কচি মেয়ে (কথা টা বলল অভিমানি সুরে)
আমি: হুম।
বড় আপু: নে ধর সিগারেট খা।
আমি: না।
বড় আপু: ভাব ধরস ? সাজিদের সাথে খা*স নাই।
আমি: হুম।
বড় আপু: এখন খা আমার টা।
আমি: এখন পারবো না।
বড় আপু: কেনো?
আমি: কারণ আপনি এতো বড় একজন মানুষ সামনে আর আমি আপনার সামনে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাবো। আমি পারবো না।
বড় আপু: এই কথাটা আমার ভালো লাগলো।
আমি: হুম আমি যাই।
বড় আপু: কই যাবি?
আমি: ভার্সিটিতে।
বড় আপু: কিসে পড়স?
আমি: থার্ড ইয়ারে।
বড় আপু: তুই কি আমার সাথে রাগ করে আছিস?
আমি: হুম।
বড় আপু: কেনো?
আমি: কারণ আপনি ঐদিন আমি মাফ চাওয়ার পরেও মা*র ছিলেন।
বড় আপু: ওকে সে জন্য এখন আমাকে তোর কাছে মাফ চাইতে হবে নাকি।
আমি: হুম।
বড় আপু: ওকে যা সরি (বলল হাসি মুখে)
আমি: যান মাফ করে দিলাম। (আমি ও হাসি মুখে)
বড় আপু: তোর মুখে হাসি দেখে বুঝতে পারলাম।
আমি বড় আপু হয়ে সার্থক।
আমি: হুম।
বড় আপু: জোৎস্নার সাথে কেমন চলছে?
আমি এখন চিন্তায় পরে গেলাম। কি বলবো?
আমি: ও তো আমার বড় আপু। বড় আপুর সাথে কি আবার।
বড় আপু: যা এখন তোর না ভার্সিটি আছে?
আমি: হুম আমি যাই।
এই বলে চলে আসলাম। ভার্সিটি শেষ করে বাড়ি ফিরছি। তিনজন ছেলে এসে আমাকে ঘিরে ধরলো আমার শার্টের কলার ধরে বলল…..
প্রথম ছেলে: তোর জন্য শান্তি মতো প্রেম করতে পারিনা আজ তোর খবর আছে।
আমি: দেখো আমি তোমাদের বড় আমার সাথে তোমরা বে য়া দ বি করতে পারোনা।
দ্বিতীয় ছেলে: ভাই আমরা যে সময় যাই। তখন তুই কেনো হাজির হস?
আমি: ভাই আমি তোমাদের সমস্যা বুঝতে পারছি। আমি আর সাদে যাবো না । এখন কলার ছাড়ো।
তৃতীয় ছেলে: ছাড়বি না আজকে তোর এমন অবস্থা করবো । যেগুলো দেখে আমাদের জিএফ ভাবতে থাকবে যে আমরা তাঁদের সত্যি অনেক ভালোবাসি।
প্রথম ছেলে: আমার কি মনে হয় জানিস। সে একটু পর পর সাদে যায় মনে হয় আমাদের গার্লফ্রেন্ডের মধ্যে থেকে কাওকে পটাতে চায়।
দ্বিতীয় ছেলে: চোখ তুলে নিবো । কারো দিকে তাকালে।
আমি: দেখো আমি এলাকায় নতুন আসছি নতুন কিছু বুঝিনা। ভুল হয়ে থাকলে ক্ষমা করে দাও। এখন কলার ছাড়ো।
তৃতীয় ছেলে: যা ক্ষমা করে দিলাম। রাজিব কলার ছাড়।
রাজিব নামক ছেলেটা মানে প্রথম ছেলেটা কালার ছেড়ে দেয়। ছেড়ে দেওয়ার সাথে একটা থা প্প ড় কয়েকটা কি ল আর লা*থি মে*রে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
আমার মনটা খারাপ হয়ে যায়। এলাকায় নতুন আসছি বলে আর কতো বিপদের সম্মুখীন হতে হবে কে জানে। শরীরটা ব্যাথা করছে। আসতে আসতে হাঁটছি। হেঁটে বাড়ির অনেক টা কাছে চলে আসছি। রাস্তার পাশে এক বেঞ্চে দেখি বসে আছে বড় আপু।বড় আপুর সকাল বেলা আচরণ আমার অনেক ভালো লেগেছে। বড় আপুর কাছে বিচার দিবো। এই ভাবার সাথে সাথে বড় আপুর ডাক আসলো।ধুর আজ পর্যন্ত বড় আপুর নামটাই জানা হলো না। আমি কাছে গেলাম। বড় আপু বলল……
বড় আপু: কি রে তুই ভার্সিটিতে গেলি হাসি খুশি । আর এখন এভাবে মন ম রা কেনো?
আমি: কি আর বলব আপু? এলাকায় আসছি নতুন বলে আর কতো ঝামেলার সম্মুখীন হতে হবে কে জানে?
বড় আপু: কেনো কি হইছে? আমাকে বল।
আমি: থাক আপনাকে বলে লাভ নেই। আপনি তো অনেক বড় আপনি আমার পিছে টাইম নষ্ট করবেন না। আমি যাই।
এই বলে আমি হাঁটা শুরু করলাম।
বড় আপু: মুরাদ দাঁড়া,দাঁড়া বলছি । মা*ই*র না খাওয়ার আগে দাঁড়া।
আমি আবার ফিরে এসে বললাম।
আমি: হুম।
বড় আপু: কি হইছে আমাকে সুন্দর করে খুলে বল।
আমি বড় আপু কে সব খুলে বললাম । শেষে বললাম একটা ছেলের নাম রাজিব। রাজিব ছেলের নাম শুনে বড় আপু চিনতে পরে।আর এদিকে বড় আপুর মুখ রাগে লাল হয়ে যায়। সুন্দরী সাদা মুখটা লাল দেখাচ্ছে। আর অপুরূপ লাগছে বলল…
বড় আপু: রাজিবরা তোরে মা*র*ছে কতো বড় সাহস ওদের। আজকে তাঁদের খবর আছে।
এই বলে মোবাইল বের করে কাকে জানি কল দিলো।কয়েক মিনিটের মধ্যে ৩০ জনের মতো ছেলে মেয়ে হাজির হয়ে গেলো। একজন কে বলল রাজিবকে কল দিতে। একটু পর রাজিব আসলো ও তাঁর সাথে বাকি দুজন। আমাকে দেখেই হয়তো তারা কাহিনী বুঝতে পারে। বড় আপু তাঁদের কি দোষ সবার কাছে বলল। তাদের জিজ্ঞেস করে প্রথমে অস্বীকার করে। আপু রাগি গলায় কথা বললে সব স্বীকার করে নেয়। আর তাঁদেরকে কয়েক টা চ*ড় দেয়। আর আমার সাথে মিলিয়ে দেয়। আর বলে জু*ড়ে জু*ড়ে।
বড় আপু: এ হলো মুরাদ।এই এলাকায় নতুন এসেছে। কেউ তাঁর সাথে খারাপ ব্যবহার করবি না । সে আজ থেকে আমাদেরই একজন।
আসতে আসতে সবাই চলে যায় । আমিও বাসায় চলে আসি। এসে দেখি অনেক মানুষ সবাই অপরিচিত। দেখি বাবা সোফায় বসে কথা বলছে। আমি মা কে খুঁজে বের করে জিজ্ঞেস করলাম ।
আমি: কি হয়েছে এতো মানুষ কেনো?
মা: ওহহ তোরে তো বলা হয়নি।তোকে সেই কখন থেকে ফোন দিচ্ছি। তোর আপু কে দেখতে আসছে। যা তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে তাঁদের সাথে কথা বল।
আমি: আগে বলবা না।
আমি রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে। তাঁদের সাথে মিট করলাম। আপুকে দেখে তাঁদের পছন্দ হয়। তাঁরা বিয়ের তারিখ ঠিক করে চলে যায়। পরের দিন আর কলেজে গেলাম না । আজকে সারাদিন মোবাইল টিপে আর ঘুমিয়ে কেটে বিকালের দিকে সাদে গেলাম। সাদে গিয়ে দেখি জোৎস্না আর বড় আপু কথা বলছে। আমি এক কোণায় দাঁড়িয়ে মোবাইল টিপছি। বড় আপু আমাকে ডাক দিলো। আমি কাছে গেলাম বলল…
বড় আপু: সাদে কি করস?
আমি: কিছু না।
বড় আপু: কিছু না মানে। দেখি তো আশেপাশে কেউ আছেনি। পাইছি! এই মেয়ের জন্য তুই সাদে আসিস ?
আমি: না।
পাশের বাড়ির সাদে এক মেয়ে । কাপড় নিচ্ছে তাঁকে দেখেই আমার উপর দোষ চাপিয়ে দিলো। মেয়েটা কে লক্ষ্য করে বলল….
বড় আপু: এই মেয়ে তোমার নাম কি?
মেয়ে: সাদিয়া।
বড় আপু: সাদে কি করো?
মেয়ে: কাপড় নেই।
বড় আপু: আর কিছু না তো।
মেয়ে: আর কি আবার কাপড় নিচ্ছি।
বড় আপু: বিকাল বেলা সাদে আসবা না।
মেয়ে: কেনো?
বড় আপু: যেটা বলছি সেটায়। আসবা না বলছি আসবা না।
মেয়ে: ওকে আপু।
আমি বড় আপুর কাহিনী দেখে আমি হাসি দিতে দিতে শেষ।